সাগরের বুকে জেগে ওঠা দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ টেকনাফের সেন্টমার্টিন। এখানে বরাবরই ঈদ আনন্দ একটু অন্যরকম। দ্বীপে পশুর হাট বসলেও বড় আকারের গরু কিনতে যেতে হয় শাহপরীর দ্বীপে। সেখান থেকে ট্রলারে করে দ্বীপে আনা হয় গরু। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছর দ্বীপে তিন শতাধিক গবাদি পশু কোরবানি দেওয়া হবে। এই সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণ।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আহমদ গত বছর কোরবানির গরু কিনেছিলেন ৭৯ হাজার টাকায়। এবার টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে ১ লাখ টাকার গরু কিনে ট্রলারে করে দ্বীপে নিয়ে এসেছেন তিনি। তার কথায়, ‘আমার জন্ম এই দ্বীপেই। তাই সাগরের মাঝে ঈদ আনন্দ ও খুশি আমার কাছে বরাবরই অন্যরকম মনে হয়।’
দ্বীপের হাট থেকে এবার ৬০ হাজার টাকা দামের কোরবানির পশু কিনেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাবিবুর রহমান খান। তবে হতাশা নিয়ে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে জানালেন, এক মাস ধরে কিছুদিন পরপর বৈরী আবহাওয়া সৃষ্টি হওয়ায় জেলেরা মাছ শিকারে যেতে পারেনি। তার বক্তব্য হলো, ‘এ দ্বীপে বেশিরভাগ মানুষের পেশা হচ্ছে মাছ শিকার। কিন্তু এ কারণে তাদের পরিবারে আগের বছরের তুলনায় ঈদ আনন্দ এবার কম।’
তবুও ঈদ আনন্দ উদযাপনের অপেক্ষা সেন্টমার্টিনে। প্রাকৃতিক দ্বীপটিতে সাড়ে ৮ হাজার মানুষের বসতি। তাদের পাশাপাশি ঈদ আনন্দে শামিল হন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।
সেন্টমার্টিনে উপভোগ করা যায় প্রবাল পাথুরে সৈকত, চোখ জুড়ানো নারিকেল বিথী, কেয়াবন, নীল জল। এর সঙ্গে আছে মানববসতিহীন ছেঁড়া দ্বীপ। আবহাওয়া ভালো থাকলে দ্বীপের লোকজন ট্রলার নিয়ে ছেড়া দ্বীপে ঘুরতে যায়।
শিশুরা সাগরপাড়ে বিভিন্ন ধরনের বিনোদন কেন্দ্রে হৈ-হুল্লোড় করে। সেগুলো ঈদ তৃতীয় দিন পর্যন্ত খোলা থাকে। সেখানে শিশুদের পাশাপাশি নারীরাও ভিড় জমায়। বৈরী আবহাওয়া না থাকলে তাদের আনন্দ বেড়ে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, কোরবানি ঈদে দ্বীপের পূর্ব পাড়ায় বিশাল নামাজের আয়োজন করা হয়। দ্বীপের প্রায় সবাই সেখানে ঈদ নামাজ আদায় করবেন এবারও। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল হলে আলাদা নামাজের ব্যবস্থা থাকবে।
ঈদকে সামনে রেখে দ্বীপে থাকছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ তথ্য জানিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অহিদ মুরাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘এ বছর দ্বীপে ঈদ কাটাবো। এখানকার লোকজন বেশ অতিথিপরায়ন।’