ওটমিল নতুন কিছু নয়। হাজার বছর ধরে এর উপস্থিতি অন্য আর পাঁচ/দশটার শস্যের সঙ্গে। ভীষণরকম উপকারী এই খাদ্যটি হর-হামেশাই খাচ্ছেন মানুষ। এর বীজের খোসা দিয়ে তৈরি হয় ঔষধ।
ওট ব্র্যান ও ওটমিল হাই ব্লাড প্রেশার, হাই কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, ইরিটেবল বোল সিন্ড্রোম, ডিভারটিকোলসিস, ইনফ্ল্যামাটরি বোল সিন্ড্রোম, ডায়ারিয়া, কন্সটিপেশন, হার্ট ডিজিজ প্রতিরোধে, পিত্তপাথর, কোলন ক্যন্সার ও স্টমাক ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্যবহার হয়।
এমনকি রূপ সচেতন ব্যক্তিদের রূপের রহস্যও ওটস! চুলকানো, খসখসে ভাব, ত্বকের শুস্কতা এগজিমা ও ডারমাটাইটিস চিকিৎসায় এর প্রয়োগ আছে। ওটের বৈজ্ঞ্যানিক নাম ‘এভিনা স্যাটিভা’। আর প্রসাধনে ব্যবহৃত এ্যভিনো ওট থেকে প্রস্তুত হয়। ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে এ্যাভিনো জগত বিখ্যাত।
গম সদৃশ্য ফসল আগে প্রাণীখাদ্য হিসাবেই ব্যবহার হতো। ক্ষেত থেকে খাবার টেবিল পর্যন্ত আসতে কয়েক ধাপ পাড়ি দিতে হয় ওটসকে।
গোটা ওটসকে ওট গ্রোটস বলে, এটি প্রথমে মৃদু তাপে রোস্ট করা হয়। এরপর তৈরি হয় ইন্সট্যান্ট ওটস। সেদ্ধ করে শুকিয়ে চাপ দিয়ে পাতলা ফ্লেক্স বানিয়ে তৈরি করা হয় ইন্সট্যান্ট ওটস।
এছাড়া আছে স্টিল কাট ওটস। গোটা ওট বীজকে ইস্পাতের ছুরি দিয়ে কাটা হয়। দেখতে চালের টুকরার মতো লাগে। লাগে। রান্না করতে বেশি সময় লাগে।
এক কাপ ওটস এ ১৪০ ক্যালরি, তাতে ২দশমিক ৫ গ্রাম ফ্যট, ২৫ গ্রাম কার্বো হাইড্রেট, আর ৫ গ্রাম প্রোটিন আছে। ওটসে ‘বেটা গ্লুকান’ উপাদান যেটি সল্যুবল ফাইবার নামে পরিচিত সেটি রক্তে মিশে গিয়ে খাবার থেকে কার্বোহাইড্রেট শোষন প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়। এই ধীর হজম প্রক্রিয়া রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ইন্স্যুলিন লেভেল ঠিক রাখে।
প্রতিদিন ৩/৪ কাপ ওটমিল খেলে রক্তে উপস্থিত কোলেস্টেরল কমবে এবং হার্ট অ্যাটাক কমবে। ওটস এ ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায় শরীরের এনার্জী উৎপাদন ও অন্যান্য এনজাইমের সুষম ব্যবহারে অবদান রাখে, আর্টারী বা রক্তবাহী নালীকে নমনীয় রাখে হার্ট এ্যাটাক ও স্ট্রোক্স থেকে বাঁচায়। হার্টের মাসল ঠিক রাখে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। সমীক্ষায় দেখা গেছে ম্যাগনেশিয়াম যুক্ত খাবার গ্রহনে ডায়াবেটিক টাইপ ২ নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর ভূমিকা রাখে।
তাই ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রণসহ নানাবিধ রোগ থেকে দূরে থাকতে দিনের খাবারের তালিকার প্রথম ভোট পড়ুক ওটসের গায়েই।
/এফএএন/