প্রশ্ন: আমার বয়স ৩৫ বছর। মা-বাবা আমার সঙ্গে অনেক অন্যায় করেছে। নিজেদের টক্সিক সম্পর্কের জেরে আমার শৈশব একেবারে নষ্ট করে দিয়েছে। আমার গায়ে হাত তোলা, আত্নবিশ্বাস ভেঙে দেওয়া, নিজেদের স্বার্থে আমাকে ব্যবহার করার মতো কাজ করেছেন। আমি সারাজীবন অনেক ঘৃণা পুষে বড় হয়েছি তাদের প্রতি। তবে নিজের মনের শান্তির জন্য এখন আমি তাদের ক্ষমা করে দিতে চাই। কিন্তু আমি মা-বাবাকে ক্ষমা করতে পারছি না। কোনোভাবেই তাদের প্রতি ক্ষোভ কমাতে পারছি না। বারবার শুধু মনে হয় কেন আমার সঙ্গেই এমন হলো? সবাই তাদের পরিবার থেকে ভালোবাসা, আদর, স্নেহ পায়। আমি কেন শুধু খারাপ স্মৃতিই পেলাম?
উত্তর: বাবা-মার প্রতি আপনার ক্ষোভ কমানোর চেষ্টা করার কোনও প্রয়োজন নেই। নিজের উপর জোর করার কোনও প্রয়োজন নেই। নিজের উপর জোর খাটিয়ে কেউই কোনোদিন সফল হতে পারে না। আপনি আপনার ক্ষোভ কমাতে চান কারণ আপনি অনুশোচনায় ভুগছেন। অনুশোচনা আপনার এনার্জি ড্রেন করছে। ফলে আপনার ক্ষোভ আরও বেড়ে যাচ্ছে। অনুশোচনা বা ফিলিং অব গিল্ট থেকে আপনি সহজেই মুক্ত করতে পারেন নিজেকে। ক্ষোভকে নিজের চরিত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে মনে করুন। এর সাথে যুদ্ধ করা বন্ধ করুন, এর সমালোচনা করা, বা একে পাল্টানোর চেষ্টা করা বা এর জন্য নিজেকে তিরস্কার বা দায়ী মনে করা বন্ধ করুন। নিজেকে সকল বৈশিষ্ট্যকে নিঃশর্তভাবে ভালোবাসুন। এভাবে আপনি আপনার মনকে প্রশান্ত করতে পারবেন।
প্রশ্ন: আমার বয়স ২০ বছর, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। আমি পড়াশোনায় ভালো, গান গাই, বিতর্ক করি। সমস্যা হচ্ছে আমার খুব কাছের বন্ধুরা আমাকে ছেড়ে চলে যায়। বেশ কয়েকবার একই ঘটনা ঘটলো। একজন বলল আমার পাশে থাকলে তাকে কেউ দেখতে পায় না, সব আলো আমি ছিনিয়ে নিই। তাই আমার সঙ্গে তার চলা সম্ভব হচ্ছে না। আরেকজনও অনেকটা এমন কারণ দেখিয়েই সম্পর্ক নষ্ট করলো। আমি খুব ভেঙে পড়েছি বিষয়টা নিয়ে। সমস্যা কি আমার মধ্যেই?
উত্তর: আপনি আসলে বন্ধু চিনতে ভুল করছেন। যারা আপনাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে তার আপনার প্রকৃত বন্ধু নয়। আপনি আপনার মনের শান্তি আপনার বন্ধু অথবা অন্য যে কারো হাতে তুলে দিলে আপনি পদে পদে আশাহত হবেন। ভালো এবং মন্দ সকল বৈশিষ্ট্যকে নিজেকে নিঃশর্তভাব মেনে নিতে পারলে বন্ধুরা আপনাকে ছেড়ে গেলেও আপনার তাতে খারাপ লাগবে না। নিজেকে অন্যের পছন্দমাফিক পরিবর্তন করার চেষ্টা করে কোনও লাভ নেই। এরকম চেষ্টা করার কোনও প্রয়োজনও নেই। কোনও ব্যপারে নিজেকে দায়ী মনে করারও কোন প্রয়োজন নেই। নিজের মন যেটা করতে চায় আপনি সেটাই করুন। বন্ধুবিচ্ছেদের যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হবার চেষ্টা না করে এটাকে নিবিড়ভাব আত্মস্থ করুন। সুখ ও আনন্দকে যেভাবে আপনি আলিঙ্গন করেন, অবধারিত কষ্ট ও যন্ত্রণাকেও সেভাবে আলিঙ্গন করুন, ভালোবাসুন।