হাজার বছর ধরে নানা সমস্যার প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে ক্যাস্টর অয়েল। প্রাচীন মিশরীয়রা শুষ্ক চোখ এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করত। এটি আর্থ্রাইটিস ব্যথা এবং ত্বকের জন্য আয়ুর্বেদিক ঔষধের একটি প্রধান উপাদান ছিল। ক্যাস্টর অয়েল প্রদাহ-বিরোধী, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ব্যথা-উপশমকারী বৈশিষ্ট্যসহ রিকিনোলিক অ্যাসিডে সমৃদ্ধ। জেনে নিন ক্যাস্টর অয়েল কোন কোন উপায়ে ব্যবহার করবেন এবং এর উপকারগুলো কী কী।
১। ময়শ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য
ক্যাস্টর অয়েলের ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য এর সমৃদ্ধ ফ্যাটি অ্যাসিড উপাদান থেকে আসে। এটি একটি হিউমেক্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে, ত্বকে আর্দ্রতা আটকে রাখে এবং আর্দ্রতা হ্রাসের বিরুদ্ধে বাধা তৈরি করে। সাধারণত এটি লোশন, লিপ বাম এবং মেকআপে ইমোলিয়েন্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফাটা কিউটিকলস, শুষ্ক গোড়ালি, ফাটা ঠোঁট বা অতিরিক্ত আর্দ্রতার প্রয়োজন এমন ত্বকের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন এই তেল।
২। ত্বক নিরাময় করতে পারে
ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল এবং ক্ষত নিরাময় বৈশিষ্ট্য এর বিভিন্ন থেরাপিউটিক প্রয়োগে অবদান রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্যাস্টর অয়েল ব্রণের দাগ, সূক্ষ্ম রেখা এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করতে পারে। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে এটি সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করা যায়। তবে এর ঘন ঘনত্বের কারণে বাদাম, নারকেল বা জোজোবা তেলের মতো ক্যারিয়ার তেল দিয়ে পাতলা করা জরুরি।
৩। দাঁতের জন্য দুর্দান্ত
গবেষণায় দেখা গেছে যে, ক্যাস্টর অয়েল দাঁতের যত্নে অনন্য। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য মুখের ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক দূর করতে পারে।
৪। চুলের যত্নে
চুলকে আর্দ্রতা দিতে, বিভক্ত প্রান্ত রোধ করতে এবং মাথার ত্বকের ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে ক্যাস্টর অয়েল। এতে চুল থাকে ঝলমলে ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
৫। পেশী ব্যথার জন্য
ব্যায়ামের কারণে পেশী ব্যথা করে অনেক সময়। এই ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে ক্যাস্টর অয়েল। একটি ফ্ল্যানেল কাপড়ে হালকাভাবে ক্যাস্টর অয়েল ঢেলে নিন এবং পেশীর উপরে রাখুন। হিটিং প্যাডে মাঝারি সেটিং ব্যবহার করে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন এর উপর।
৬। পেটের প্রদাহ কমাতে
ক্যাস্টর অয়েলে থাকা রিকিনোলিক অ্যাসিড পেটের পেশী সংকোচন সহজ করতে সাহায্য করে। একটি হিটিং প্যাডসহ ক্যাস্টর অয়েল প্যাক ব্যবহার করুন পেটে। পেটের ক্র্যাম্প এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে এটি।
তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট ও টাইমস অব ইন্ডিয়া