গরমের তীব্রতা বাড়ছেই প্রতিদিন। সারাদিন রোদের তাপ, রাতেও ভ্যাপসা গরম। গরমে পড়লে এসি কিংবা এয়ারকুলারের চাহিদা বেড়ে যায়। তবে কেনার আগে অনেকেই দ্বিধায় পড়েন এই দুই যন্ত্রের মধ্যে কোনটি কিনবেন সেটা নিয়ে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জেনে নিন এয়ারকুলার ও এসির সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে।
এয়ারকুলার
পানিকে বাষ্পে পরিণত করে ঠান্ডা বাতাস সরবরাহ করে এয়ারকুলার। এ কারণে ঘরের গরম তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়ে ঠান্ডা বা শীতল হয়। এয়ারকুলারে একটি পানির ট্যাংক থাকে। সেখানে পানি দিয়ে ভর্তি করে চালু করলে কুলারের পাখাটি ঘুরতে থাকে। ধীরে ধীরে ট্যাংকে থাকা পানি বাষ্পে পরিণত হয়ে ঘর শীতল করে।
সুবিধা
- এসির তুলনায় এয়ারকুলার বাজেট সাশ্রয়ী।
- চট করে কিনে এনে ব্যবহার শুরু করতে পারেন। ইন্সটল করার ঝামেলা নেই।
- এয়ারকুলার এয়ার কন্ডিশনারের তুলনায় কম বিদ্যুৎ খরচ করে, যার ফলে বিদ্যুৎ বিল অতিরিক্ত আসে না।
- এয়ারকুলার বাতাসে আর্দ্রতা যোগ করতে পারে, যা শুষ্ক আবহাওয়ায় উপকারী।
- পানি বাষ্পীভূত করে ঘর শীতল করে এই যন্ত্র, যা পুরোপুরি প্রাকৃতিক এবং আরামদায়ক।
- এয়ার কন্ডিশনারের তুলনায় কম রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় এর।
- ছোট ঘরের জন্য দারুণ কার্যকর এয়ারকুলার।
অসুবিধা
- এয়ারকুলার আর্দ্রতা বৃদ্ধি করতে পারে, যার ফলে বাতাসে অস্বস্তিকর অনুভূতি তৈরি হয়।
- যদি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা হয়, তাহলে এয়ারকুলার ছত্রাকের প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে যদি পানির ট্যাংক এবং কুলিং প্যাড নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয়।
- এয়ারকুলার শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বাড়াতে পারে, বিশেষ করে যদি পানির ট্যাংক বা কুলিং প্যাড পরিষ্কার না থাকে।
- প্রতিদিন পানি বদলানোর কাজ বেশ ঝামেলার মনে হতে পারে।
- ঘর বড় হলে এয়ারকুলার ঠিক মতো কাজ করবে না।
- এয়ারকুলার বাতাসের ময়েশ্চার বাড়িয়ে দেয়। এতে ঘরের আসবাব নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এয়ার কন্ডিশনার বা এসি
এয়ার কন্ডিশনার বাতাস ফিল্টার করে রুমে পাঠায়। গরম হাওয়া ক্রমাগত বেরিয়ে যাওয়ার ফলে ঠান্ডা আবহাওয়া তৈরি হয় ঘরে। ঘরের বাইরে থাকা কনডেনসার বাইরে তাপমাত্রা থেকে অতিরিক্ত গরম হয়ে রেফ্রিজারেন্ট লিকুইড কে ঠান্ডা করে পরিবেশের ঠান্ডা এবং ভারী বাতাসকে ঘরের ভেতরের অংশে রিলিজ করে দেয়।
সুবিধা
- সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং আরামদায়ক অভ্যন্তরীণ পরিবেশ প্রদান করতে পারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি। খুব দ্রুত এটি ঘরে নিয়ে আসে আরামদায়ক পরিবেশ।
- ধুলা, অ্যালার্জেন এবং দূষণকারী পদার্থকে ফিল্টার করে এসি, যার ফলে পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যন্তরীণ বাতাস তৈরি হয়। অ্যালার্জি বা হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে এসি।
- এয়ার কন্ডিশনার আর্দ্রতা হ্রাস করে, ছত্রাক এবং ছত্রাকের বৃদ্ধি রোধ করে।
- ঘর যতই বড় হোক, সঠিক মাপের এসি কিনলে সেটা কার্যকরভাবে ঠান্ডা করতে পারে ঘর।
অসুবিধা
- এয়ার কন্ডিশনার বেশ ব্যয়বহুল। এটি ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিলও বেশি আসে।
- দীর্ঘ সময় এসিতে থাকার ফলে ঠান্ডা, শুষ্ক বাতাস শরীর থেকে পানির ক্ষয় বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ে।
- সর্বোত্তম কর্মক্ষমতা এবং দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করার জন্য এয়ার কন্ডিশনার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়, যা অতিরিক্ত খরচের কারণ হতে পারে।
- বাইরে থেকে এসে সরাসরি এসিতে প্রবেশ করার ফলে দেহের তাপমাত্রা হুট করেই বদলে যায়। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
- দিনের বেশিরভাগ সময় এসিতে থাকা শরীরের জন্য ভালো নয়।