দুজন মানুষ এক ছাদের নিচে থাকতে গেলে প্রায়ই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিতে পারে। অনেক সময় ছোটখাটো ঝগড়াও বিশাল বড় হয়ে দেখা দেয়। হয়তো আপনার কিছু অভ্যাসের কারণেই তিল হয়ে যায় তাল। এভাবে ধীরে ধীরে সম্পর্কে ভাটা পড়তে থাকে। দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু এই ঝগড়ার কারনে সম্পর্কের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি কারোর কাম্য নয়। জেনে নিন আপনার কোন কোন অভ্যাস এই ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
১। বিরক্তি প্রকাশ করার পরিবর্তে তা ধরে রাখা
অনুভূতি প্রকাশ করার অভ্যাস করুন। কারণ অব্যক্ত অনুভূতিগুলো প্রায়শই অতিরিক্ত বিরক্তি হয়ে প্রকাশ পায়। এছারা এ ধরনের অভ্যাস সঙ্গীর সাথে অদৃশ্য প্রাচীর তৈরি করে। এয়ে বাড়ে হতাশা। একে অপরের প্রতি নিষ্ক্রিয় আচরণ বা আক্রমণাত্মক আচরণের অন্যতম কারণ এমন ছোটখাটো ক্ষোভ চেপে রাখা। সম্পর্ক শক্তিশালী সঙ্গীর সাথে খোলামেলা কথা বলুন।
২। সঙ্গীর চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়া
হয়তো দিনশেষে অফিস থেকে ফিরেই বুঁদ হয়ে থাকছেন ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে। সঙ্গীর একাকীত্বকে আমলে না নেওয়ার এই অভ্যাস কিন্তু আপনার দাম্পত্য সম্পর্কের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না। সঙ্গী যখন আপনার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছেন, তখন সোশ্যাল মিডিয়াক স্ক্রল না করে তার প্রতি মনোযোগ দিন।
৩। সবসময় সঙ্গীর সমালোচনা করা
মাঝে মাঝে গঠনমূলক সমালোচনা করা ভালো হলেও সবসময় যদি এমনটি চলতে থাকে, তবে সেটা অন্যজনের জন্য অসম্মানের। সঙ্গীর উপর ক্রমাগত আক্রমণ আত্মসম্মান নষ্ট করে এবং সময়ের সাথে সাথে বিশ্বাসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৪। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করা
ঘর গোছানো, খাবার প্রস্তুত করা বা মানসিক সমর্থন প্রদানের মতো দৈনন্দিন কাজগুলোকে হালকাভাবে নেওয়ার অভ্যাস দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষতির কারণ। একটি সাধারণ ধন্যবাদ বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ মানসিক বন্ধনকে শক্তিশালী করে।
৫। সঙ্গীর সাথে অন্যদের তুলনা
তুলনা সম্পর্কের নীরব শত্রু। আপনার সঙ্গীকে অন্যদের সাথে পরিমাপ করা, সে বন্ধু, সহকর্মী বা স্বনামধন্য কেউ হলেও সেটা আত্মবিশ্বাস নষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে।
৬। নীরব প্রত্যাশা
নীরব প্রত্যাশা সম্পর্কের অন্যতম শত্রু। আপনি যেটা চাইছেন সেটা স্পষ্ট করে বলুন সঙ্গীকে। কিন্তু সঙ্গি আপনার মনের কথা বুঝবে এমন আশা করে বসে থাকবেন না। এতে মানসিক ব্যবধান তৈরি হতে পারে।
৭। সঙ্গীর আবেগকে গুরুত্ব না দেওয়া
আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি সঙ্গীর মানসিক চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়াও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনার সঙ্গী মনোযোগ চান বা সেটার প্রকাশ করেন, তখন সেটাকে উপেক্ষা করবেন না। এতে সম্পর্ক গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৮। ঝগড়ার সমাধান না করে বিষয়টি এড়িয়ে চলা
অনেক দম্পতি মনে করেন যে তর্ক এড়িয়ে চললে পরিস্থিতি শান্ত থাকে, কিন্তু এটি আদতে সঠিক নয়। অব্যক্ত হতাশা স্থায়ী হয় এবং সঠিক মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করে। দ্বন্দ্ব এড়ানো স্বল্পমেয়াদে সহজ মনে হতে পারে, তবে এটি দীর্ঘমেয়াদী মানসিক দূরত্ব বাড়িইয়ে দিতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া