করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে রাজধানীসহ প্রায় সারাদেশের সব জেলাতে চলছে লকডাউন। লকডাউনে মানুষ ঘরে অবস্থান করলেও কিছু পরিস্থিতিতে নাজেহাল কিন্তু হতেই হচ্ছে। এই ধরুন, হঠাৎ করেই আপনার বাসার এসি বা ফ্রিজ নষ্ট হয়ে গেল। কী করবেন?
এ ধরনের সমস্যার সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে কিছু অনলাইন প্রতিষ্ঠান। তাদের ওয়েবসাইট বা ফেসবুক মেসেঞ্জারে সমস্যার সমাধান চাইলেই তারা হাজির হবে দোরগোড়ায়। করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সেবা দিচ্ছে তারা। সার্ভিসগুলোর চাহিদাও বেড়েছে বেশ। এয়ার কন্ডিশনার, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, টেলিভিশন, ল্যাপটপ সার্ভিসিংয়ের বেশ চাহিদা রয়েছে এই মুহূর্তে। এছাড়াও চাহিদা আছে কার রেন্ট, ইলেকট্রিশিয়ান, পানির কল ও মোটরসাইকেল মেকানিকের।
অনলাইনে সেবা পেয়ে সন্তুষ্ট এমন একজন হচ্ছেন মিরপুর ডিওএইচএস নিবাসী তানিয়া আফরোজ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে গত সপ্তাহে আমার ওয়াশিং মেশিনটি নষ্ট হয়। তাই বাধ্য হয়ে একটি অনলাইন সেবা প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হই। দেখলাম তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা যথেষ্ঠ দক্ষ। তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমার বাসায় এসে সেটি ঠিক করে দিয়ে গেলেন।’
উত্তরা নিবাসী তানভীর আহমেদ বলেন, ‘হঠাৎ করেই বাসার সিলিং ফ্যান কাজ করছিল না। এরকম সময়ে দুই ঘণ্টার মধ্যে সার্ভিস পাওয়াটা খুবই দুষ্কর। সেবাটি আমি অনলাইন থেকেই পেয়েছি। এবং যারা সার্ভিস দিতে এসেছিল তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সার্ভিস দিয়েছে।’
কমলাপুরের রুম্মান ফালু বলেন, ‘হুট করেই লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় আমার বাইক ঠিকমত সার্ভিস করানো হয়ে উঠেনি। যেহেতু এই সময় বাইক চালানো যাচ্ছে না, বাসায় রাখতে হচ্ছে। তাই বাইকটা সার্ভিসিং করিয়ে রাখাই ভালো। কিন্তু এখনও তো কোনও গ্যারেজ খোলা নেই। এদিকে ফেসবুকে দেখলাম একটি প্রতিষ্ঠান বাসায় এসে বাইক সার্ভিসিং করিয়ে দিচ্ছে ‘ট্রেড দ্য গিয়ার’।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অনলাইন সার্ভিসগুলো কীভাবে সেবা দিচ্ছে এ নিয়ে কথা হলো ‘সেবা এক্সওয়াইজেড’ এর কো ফাউন্ডার অ্যান্ড চিফ অপারেশনস অফিসার ইলমুল হক সজীবের সঙ্গে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের যেসকল কর্মীরা সেবা দেয়, তাদেরকে আমরা লোকেশন বেইজড করেছি। তারা তাদের নিজ এলাকার মধ্যে সেবা দেয়, বাইরের কোনও এলাকায় যেতে হয় না। তাদেরকে আমরা মাস্ক, গ্লাভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়েছি যেন সংক্রমণ থেকে রক্ষা পায়। তাদের যাতায়াতের জন্য আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করা আছে। মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় বাইরের কারোর প্রবেশ নিষেধ। তাই আমাদের পাঁচজন কর্মী সেখানেই অবস্থান করেন সব সময়। এভাবে আমাদের সার্ভিসগুলো সারা ঢাকা শহরে ছড়িয়ে দিয়েছি। আমরা জানি এই মুহূর্তে সার্ভিসগুলো বেশি প্রয়োজন।’
‘ট্রেড দ্য গিয়ার’ এর নির্বাহী পরিচালক কাজী নাঈম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার চেষ্টা করছি বাসায় মোটরসাইকেলের সব ধরনের সার্ভিসিং করাতে। কারণ এই শহরের বড় একটি অংশ বাইক ব্যবহারে অভ্যস্ত। হুট করে লকডাউন শুরু হওয়াতে অনেকেই বাইক ব্যবহার করতে পারছে না। অপরিষ্কারভাবে ফেলে রেখেছে গ্যারেজে। যেটা বাইকের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের দক্ষ টেকনিশিয়ান টিম স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঢাকা শহরে সেবাটি দিয়ে যাচ্ছে।’