X
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
২ আষাঢ় ১৪৩২

চিরনিদ্রায় কবি আল মাহমুদ

সাহিত্য ডেস্ক
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২৩:৫২আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:৫৩

চিরনিদ্রায় কবি আল মাহমুদ সোনালী কাবিনের কবি আল মাহমুদ (৮২) আর নেই। তিনি আজ রাত ১১ টা ৫ মিনিটে ধানমন্ডি শংকরে ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিরনিদ্রার পথে যাত্রা করেছেন। কবির জামাতা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তার মৃত্যুতে সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি শারীরিক অসুস্থতার কারণে আল মাহমুদকে ধানমন্ডি শংকরে ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরের দিন একই হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি নিউরোলোজিস্ট প্রফেসর আব্দুল হাইয়ের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।

আল মাহমুদ ত্রিশোত্তর আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম কবি। কবিতার পাশাপশি গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ এবং শিশুসাহিত্য রচনা করেও তিনি খ্যাতির শিখর স্পর্শ করেছেন।

৫০-এর দশকের তার সমসাময়িক কবি-বন্ধুরা যখন একে একে মৃত্যুবরণ করছেন তখন কবি আল মাহমুদ বার্ধক্যজনিত নানান অসুখে থেকেছেন গৃহবন্দি। মাঝে মাঝে গিয়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। দীর্ঘদিন ধরে চোখে ভালো দেখতেন না, কানেও কম শুনতেন। তবু বিশেষ সংখ্যার জন্য তিনি অন্যের সহযোগিতা নিয়ে মুখে মুখে কবিতা রচনা করতেন।

কবি আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার সাধনা হাই স্কুল এবং পরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড হাই স্কুলে পড়ালেখা করেন। সেই সময় থেকেই তার লেখালেখির শুরু। সেসময় তিনি মধ্যযুগীয় প্রণয়োপাখ্যান, বৈষ্ণব পদাবলি, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল প্রমুখের সাহিত্য পাঠ করেন।

১৮ বছর বয়সে তার কবিতা প্রকাশিত হয়। ঢাকা থেকে প্রকাশিত সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত সমকাল পত্রিকা এবং কলকাতার নতুন সাহিত্য, চতুষ্কোণ, ময়ূখ, কৃত্তিবাস ও বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত 'কবিতা' পত্রিকায় লেখালেখির সুবাদে ঢাকা-কলকাতার পাঠকদের কাছে তিনি সুপরিচিত হন।

তার কাব্যগ্রন্থ লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৬৬), মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো (১৯৬৯) কাব্যগ্রন্থগুলো তাকে প্রথম সারির কবি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৯৩ সালে বের হয় তার প্রথম উপন্যাস কবি ও কোলাহল।

১৯৬৮ সালে ‘লোক লোকান্তর’ ও ‘কালের কলস’-এর জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৬ সালে পান একুশে পদক।

১৯৫৪ সালে আল মাহমুদ ঢাকা আসেন। তখন তিনি আব্দুর রশীদ ওয়াসেকপুরী সম্পাদিত ও নাজমুল হক প্রকাশিত সাপ্তাহিক কাফেলায় লেখালেখি শুরু করেন। পাশাপাশি দৈনিক মিল্লাত পত্রিকায় প্রুফ রিডার হিসেবে সাংবাদিকতা জগতে প্রবেশ করেন। ১৯৫৫ সাল আব্দুর রশীদ ওয়াসেকপুরী কাফেলার চাকরি ছেড়ে দিলে আল মাহমুদ সেখানে সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।

১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং যুদ্ধের পরে দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকায় সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। সম্পাদক থাকাকালীন সময় সরকারের বিরুদ্ধে লেখার কারণে এক বছরের জন্য কারাবরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি গল্প লেখায় মনোযোগী হন। ১৯৭৫ সালে তার প্রথম ছোটগল্প গ্রন্থ পানকৌড়ির রক্ত প্রকাশিত হয়। পরে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে শিল্পকলা একাডেমীর গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের সহপরিচালক পদে নিয়োগ দেন। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর তিনি পরিচালক হন। পরিচালক হিসেবে ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

আল মাহমুদ ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দা নাদিরা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে।

//জেডএস//
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দ. চীন সাগর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতদ. চীন সাগর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী
পরীক্ষা কেন্দ্রে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি, পরতে হবে মাস্ক
করোনা-ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধিপরীক্ষা কেন্দ্রে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি, পরতে হবে মাস্ক
রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করবে কবে
রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করবে কবে
খামেনিকে হত্যার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না নেতানিয়াহু
খামেনিকে হত্যার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না নেতানিয়াহু
সর্বাধিক পঠিত
নগরভবনে সভা করছেন ইশরাক, নামের সঙ্গে ‘মাননীয় মেয়র’
নগরভবনে সভা করছেন ইশরাক, নামের সঙ্গে ‘মাননীয় মেয়র’
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা থেকে সরে দাঁড়ালো ভারত?
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা থেকে সরে দাঁড়ালো ভারত?
ইরানের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা ‘অবমূল্যায়ন’ করেছে ইসরায়েল
ইরানের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা ‘অবমূল্যায়ন’ করেছে ইসরায়েল
তেহরানের আকাশসীমায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি ইসরায়েলের
তেহরানের আকাশসীমায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি ইসরায়েলের
ক্রিকেটার সাকিবসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ক্রিকেটার সাকিবসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা