X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১
আনি এরনোর সাক্ষাৎকার

আমি বেঁচেই আছি লিখবো বলে

অনুবাদ : সাজিদ উল হক আবির
০৭ অক্টোবর ২০২২, ০২:৪১আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২২, ০২:৪৭

২০২২ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন বর্ষীয়ান ফরাসি কথাসাহিত্যিক ও সাহিত্যের অধ্যাপক আনি এরনো। আত্মজৈবনিক সাহিত্যকর্মের জন্য বিখ্যাত আনির অধিকাংশ উপন্যাসে রয়েছে সমাজবিজ্ঞানের নিগুঢ় তত্ত্বসমূহের সংশ্লেষ। ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর, সাহিত্যে এ বছর নোবেল পুরস্কার পাওয়ার প্রায় এক বছর আগে এই  সাক্ষাৎকারটি আনি এরনো সুইসলাইফ ওয়েবসাইটকে প্রদান করেন।


প্রশ্ন : মাত্রই ভেনিসে আপনার উপন্যাস ‘হ্যাপেনিং’-এর ওপর নির্মিত সিনেমা গোল্ডেন লায়ন পুরস্কার জিতল। আপনার উপন্যাসের উপজীব্য বিষয় ছিল ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের গর্ভপাত-বিরোধী আইন। সিনেমাটি পুরস্কার জেতায় আপনার কেমন লাগছে?
আনি এরনো : সিনেমাটি আমার খুব ভালো লেগেছে। পরিচালক ও মুখ্য অভিনেত্রী তাদের যার যা কাজ যথাযথভাবে সম্পাদন করে যে একাকীত্ব, যে ভয়াবহ বিপর্যয়ের আভাস আমি উপন্যাসে দিয়েছি, তা তারা বড়পর্দায় সুচারুভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। টেক্সাসে আবারো সেই গর্ভপাত-বিরোধী আইন দেখে আমার অনুভব হয়েছে যে, এই বিষয়ে আলাপ তোলার প্রাসঙ্গিকতা পুনরায় একদম নতুন করে দেখা দিয়েছে। আমার তো ভয় হয় যে, হয়তো আমার নিজের দেশেও গর্ভপাত-বিরোধী আইন চালু করে দেবে আবার শীঘ্রই।  

প্রশ্ন : আপনার উপন্যাসে আপনি শক্তিহীনতার অনুভূতি বর্ণনা করেছেন। নির্মম সততার সঙ্গে বর্ণনা করেছেন সেই মুহূর্তটুকু, যখন মানুষ তার নিজের শরীর, তার নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
আনি এরনো : আত্মসংকল্পহীনতায় ভুগতে থাকা এক নারীর মানসিক অবস্থা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আমি আমার উপন্যাসে। গর্ভপাত যখন অবৈধ ছিল আমার দেশে, তখনকার অবস্থাটা আপনি এখন বসে কল্পনাও করতে পারবেন না। কেউই আপনাকে সাহায্য করতে রাজি হত না, না আপনার ডাক্তার, না আপনার পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব। সবাই দেখা হওয়া মাত্র মুখ ফিরিয়ে থাকতো। সে ছিল এক অবর্ণনীয় একাকীত্বের অনুভূতি। যেন আমার দেশের আইন আমার চারপাশে ইটের দেয়াল তুলে দিয়ে ঘোষণা করেছে- ‘থামো, এর বাইরে আর কোথাও যাওয়ার অনুমতি নেই তোমার।’ আমার তখন অন্যান্য ধনী পরিবারের মেয়েদের মতো গর্ভপাত করতে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার পয়সা ছিল না। 

প্রশ্ন : আপনি নর্মান্ডির এক শ্রমিক পরিবারে জন্মেছেন, বড় হয়েছেন। আপনি আপনার উপন্যাসে লিখেছেন যে, আপনার শরীর আপনাকে আপনার প্রতিবেশের সঙ্গে চূড়ান্তভাবে গেঁথে দিয়েছে। এর দ্বারা আপনি আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন?
আনি এরনো : যখন আপনি আপনার সামাজিক শ্রেণি থেকে উল্লম্ফনের মাধ্যমে উপরের একটি শ্রেণিতে উঠতে চাইবেন—আমি যেমনটা চেয়েছিলাম আমার পড়াশোনার মাধ্যমে—তখন আপনার মনে বারবার একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকবে : আমি কিসে পা হড়কাতে চলেছি? আমাকে বাধাগ্রস্ত করবে কিসে? আমি গর্ভবতী হবার পর বুঝতে পারলাম, আমার নিজের শরীর আমাকে আমার অবস্থা পরিবর্তনে বাঁধার দেয়াল তুলে দাঁড়াবে। আমি যে সময়ের কথা বলছি, তখন তো অবিবাহিত গর্ভবতী নারী ছিল দারিদ্র্যের প্রতীক, যা মোটামুটি নিশ্চয়তা দিতো—জীবনে আর কখনো স্বাধীন হওয়ার সাধ পূরণ হচ্ছে না আপনার। সব সাধ-আহ্লাদের এখানেই পরিসমাপ্তি।

প্রশ্ন : কিন্তু আপনি তো দিনশেষে আপনার ওপর চাপিয়ে দেয়া কোনো সামাজিক কানুনের কাছে নতিস্বীকার করেননি। আপনি নিজেই নিজের জীবনের গতিপথ নির্ধারণ করতে চেয়েছেন এবং প্রয়োজনে এর জন্য মারা যাওয়ার ঝুঁকি পর্যন্ত নিয়েছেন হাতুড়ে গর্ভপাত বিশেষজ্ঞের কাছে গর্ভপাত করিয়ে।
আনি এরনো : ওহ ঈশ্বর! ভয়াবহ ছিল সে অভিজ্ঞতা। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগতে পারে, কিন্তু এমন অবস্থায় আপনি যদি আসলেই কখনো পড়েন, তবে আপনার মনের ভেতর থেকে আওয়াজ আসতে থাকে—আমি মরব না। মৃত্যুভয় মনে এসে ভর করলেও আপনি জোর করে সেটাকে চাপিয়ে দিতে বাধ্য হন। কাজেই কোনো সরকারি নিষেধাজ্ঞার সামনে নতিস্বীকার করার ইচ্ছেই আমার ছিল না। পরিশেষে যে সিদ্ধান্ত আমি নিয়েছিলাম, তা নিয়ে আমি গর্বিত।

প্রশ্ন : এই তীক্ষ্ণ আত্মসংকল্পবোধ আপনার মাঝে এসে ভর করেছিল কীভাবে?
আনি এরনো : আমার মা সাহস জুগিয়েছিলেন। তিনি যদি না থাকতেন আমার জীবনে, আমি কোনোভাবেই আজকের এ জায়গায় এসে দাঁড়াতে পারতাম না। সামাজিক অগ্রগতি আসলে ব্যক্তি নির্বাসনেরই প্রতিরূপ। আপনার পরিচিত পুরো পৃথিবীকে বিদায় জানিয়ে, এমনকি নিজেকেও বিদায় জানিয়ে ফের গণ্ডির বাইরে পা রাখতে হয়। কাজটা কঠিন। এমন সময় আপনার জীবনে এমন কারো উপস্থিতির প্রয়োজন যিনি আপনাকে পাশে থেকে সাহস যোগাবেন, বলবেন, ‘যাও, ঝাঁপিয়ে পড়ো!’ এমন কোনো মানুষের প্রয়োজন পড়ে, যিনি আপনাকে ভালোবাসেন, জানেন যে আপনি অগ্রসর হলে এক পর্যায়ে আপনাকে তার হারিয়ে ফেলা লাগবে, তবুও আপনাকে থামানোর চেষ্টা করেন না তিনি।

প্রশ্ন : আপনার মা আপনাকে প্রকৃতপক্ষে কীভাবে সাহায্য করেছিলেন?
আনি এরনো : আমার গ্রামে এমন অনেক বন্ধু-বান্ধব ছিল, যাদের মায়েরা তাদের ক্রমাগত নেতিবাচক কথা শোনাতেন, এই বলে ভয় দেখাতেন যে, এসব-ওসব জিনিস আমাদের জন্য নয়। এভাবে তাদের মধ্যে একটা মানসিক দৈন্য সৃষ্টি করতেন। আমার মা অমনটা ছিলেন না। তিনি সবসময়ই আমাকে বলতেন, ‘তোমাকে দিয়ে হবে।’ একটা ঘটনা মনে আছে আমার তারুণ্যের দিনগুলির। আমাদের গ্রামে সেবার এক বলড্যান্সের আসরের আয়োজন করা হলো। আমি সে আসরে এমন এক ছেলের সঙ্গে নাচলাম, যার পরিবারের শহরে একটা বেশ ভালো আর সুন্দর ক্যাফের মালিকানা আছে। ফেরার পথে আমাদের এক প্রতিবেশী ভদ্রমহিলা দেখলাম আপন মনে বলছে, ‘ওই ছেলে আমাদের মতো পরিবারের মেয়েদের জন্য অনেক উঁচু স্তরের।’ আমার মা সেদিন আসলেই ক্ষেপে গিয়ে তাকে দু-কথা শুনিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমার মেয়ে এ বছর তার হাই-স্কুল গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করতে চলেছে। তার অর্জিত সমস্ত ডিপ্লোমা ডিগ্রির সমন্বয়ে সে অবশ্যই নিজেকে ওই ছেলের উপযুক্ত দাবি করতে পারে।’

আনি এরনো প্রশ্ন : শিক্ষা আপনার জন্য সামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করেছে। দিনশেষে আপনি লেখালেখির কাজে এসে থিতু হলেন কীভাবে?
আনি এরনো : দুটো বইয়ের কারণে। প্রথমটা সিমন দ্য বুভয়ার ‘দা সেকেন্ড সেক্স’। এ বইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল এক আশ্চর্য প্রতিভাস! দ্বিতীয় বইটি ছিল সমাজবিজ্ঞানী পিয়ের বদ্যিউর লেখা ‘ডেস্টিঙ্কশন’। বইটা ছিল একটা নির্দিষ্ট শ্রেণিতে বসবাস করা মানুষ, এবং সে শ্রেণি থেকে উন্নততর শ্রেণিতে অগ্রগামি হওয়া মানুষের মধ্যে বিদ্যমান সামাজিক-সাংস্কৃতিক পার্থক্য নিয়ে। এটা পড়ে আমি প্রথমবারের মতো অনুধাবন করতে পারি, ব্যক্তি আমি আর যে পরিবেশে আমি বড় হয়েছি তাতে কী আকাশ-পাতাল তফাৎ। একইসঙ্গে আমি এটাও টের পাই যে, আমার এই নবঅর্জিত সামাজিক অবস্থানে আমি প্রকৃতপক্ষে কখনোই খাপ খাইয়ে নিতে পারবো না। তখনি আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাই যে, আমাকে লিখতে হবে।

প্রশ্ন : আপনার আত্মজৈবনিক বইগুলো, যা ‘সাহিত্যিক সমাজতত্ত্ব’-র বই বলে পরিচিত, ওগুলো পড়লে জানা যায় যে, একটা সময়ে এসে আপনি আপনার শৈশবের বেড়ে ওঠার পরিবেশ ইত্যাদির জন্য ভেতরে ভেতরে লজ্জা অনুভব করতেন। এটার কারণ ব্যাখ্যা করবেন কী?
আনি এরনো : এর মূল কারণ ছিল অন্যরা আমাকে আমার অতীতের কারণে বৈষম্যমূলক দৃষ্টিতে দেখত, বিচার করতো। তাদের সে দৃষ্টিভঙ্গী একদম অবজ্ঞা করে উড়িয়ে দেয়ার মতো হালকা ছিল না। প্রতিমুহূর্তেই তারা আমাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখতো। সমাজের মানুষের দৃষ্টিতে হয় আপনি তাদের সমান, অথবা তাদের চেয়ে উচ্চ পর্যায়ে, বা নিম্ন পর্যায়ে। বিদ্যমান সমস্ত সামাজিক সম্পর্কগুলোই আমাদের হয় উচ্চ, বা নিম্নস্তরে নামিয়ে দেয়।

প্রশ্ন : শৈশবে যে বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গী-সম্পন্ন সমাজ আপনি দেখেছিলেন, তার কি কিছু বদলেছে? নাকি এখনো সবকিছু আগের মতোই আছে?
আনি এরনো : সামাজিক বৈষম্য, পার্থক্য ইত্যাদি ফ্রান্সে আগেও ছিল, এখনো আছে। শ্রমজীবী, এমনকি মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক সন্তানও তাদের বাবা-মায়ের যাপিত জীবনের চেয়ে উন্নত কোনো জীবনের স্বপ্ন দেখার সাহস করে না। আত্মসংকল্পবোধ, সামাজিক উন্নয়নের সম্ভাব্যতা তবুও বর্তমানে অতীতের চেয়ে বেশি বলে আমার মনে হয়।

প্রশ্ন : শুধু নিজের সামাজিক অবস্থার বদল নয়, আপনি যে সমাজে বাস করেন তার বুদ্ধিবৃত্তিক গোষ্ঠীর মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে স্থান করে নিয়েছেন : আপনার যুগের সবচেয়ে প্রভাবশালী লেখকদের একজন হিসেবে আপনাকে বিবেচনা করা হয়। তবুও আপনি প্যারিসের অদূরে এক শহরতলীতে বসবাস করেন দশককাল ধরে। আপনি শেষমেশ নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেই রাখলেন, কখনো পুরোপুরি এই উচ্চ শ্রেণির সঙ্গে মিশে গেলেন না...
আনি এরনো : হ্যাঁ, আমার বর্তমান অবস্থায়েও আমি একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে স্বস্তি পাই না। ওটা আমার জায়গা নয় আসলে। যখন আমি প্যারিসে থাকি, প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন দ্য প্রে'র সামনে দিয়ে হাঁটি, দামি সব কাপড়চোপড়ের দোকান যখন এসে পড়ে আমার চোখের সামনে, একনজর দেখেই বুঝি ও দুনিয়া আমার নয়।

প্রশ্ন : জীবনে অর্জিত সব সাফল্য কি দিনশেষে আপনাকে মুক্তি দিলো, নাকি আরো আবদ্ধ করলো?
আনি এরনো : কোনোটাই না। সাফল্য খুব গুরুত্বপূর্ণ নয় আমার জন্য। আমার জীবনবীক্ষা, বা আমার কর্মতৎপরতার ওপর তাৎক্ষণিক সাফল্যের প্রভাব প্রায় নেই বললেই চলে। আমি বেঁচেই আছি লিখবো বলে। বাড়িতে থাকার সময়ে অধিকাংশ মুহূর্ত আমার কাটে লেখালেখির মধ্যে। কখনো কখনো এ চিন্তাও মাথায় আসে যে, একজীবন লিখে কাটাতে গিয়ে জীবনের অনেক সুন্দর সুন্দর দিক উপভোগ করার সুযোগ হয়তো ছুটে গেলো হাত থেকে। কিন্তু দিনান্তে যখন আমার চিঠির ডাকবাক্স ভক্ত-অনুরাগীদের চিঠিতে ভরে ওঠে, যখন তারা তাদের একান্ত ব্যক্তিগত পত্রে আমাকে জানায় যে, আমার লেখাপত্র কতো গুরুত্বপূর্ণ তাদের জন্য, আমার বই কীভাবে তাদের জীবনকে বদলে দিয়েছে, তখন আমি নিজেকে বলি : আমার শ্রম সার্থক হয়েছে। আমি বেঁচে আছি হয়তো কেবল লিখবো বলেই।

 

/জেড-এস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!