X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক রাজ্জাক : কয়েকটি খটকা || পর্ব-৪

ফিরোজ আহমেদ
০৭ আগস্ট ২০১৬, ১০:০২আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০১৬, ১২:৪৬

অধ্যাপক রাজ্জাক : কয়েকটি খটকা || পর্ব-৪ কাজী আর মোল্লার মধ্যে ফারাকটি তাৎপর্যপূর্ণ। কাজী প্রত্যক্ষভাবে রাজক্ষমতাকে প্রতিনিধিত্ব করছেন, মোল্লা মুসলমান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা হিসেবে জনগণের একটা সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করছেন। সুলতানের লক্ষ্য কর আদায়, ক্ষমতার বিকাশ ও স্থায়িত্ব সাধন, তাই প্রয়োজন যথাসম্ভব সাম্প্রদায়িক স্থিতাবস্থা বজায় রাখা। এসবের স্বার্থেই কাজী সাধ্যানুযায়ী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসকে অধিকাংশ সময়ে নিরুৎসাহিত করবেন, কিন্তু নিজ ধর্মের লোকদের কাছে 'ধার্মিক' সাজারও যথাসম্ভব চেষ্টা করে যাবেন

পূর্ব প্রকাশের পর

মঙ্গলকাব্য বিষয়ে ইতিহাসবিদদের একটা বড় অংশ মনে করেন, এটা মুসলিম শাসন যে ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র থেকে সমাজকে মুক্ত করেছিল, তার প্রত্যক্ষ ফলাফল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অবশ্য মঙ্গলকাব্যের জন্ম রহস্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিপরীত মত পোষণ করেছেন। কিন্তু শ্রী আশুতোষ ভট্টাচার্য আমাদের জানিয়েছেন যে, রবীন্দ্রনাথ “মুকুন্দরামের ‘চণ্ডীমঙ্গল’ এবং ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ ব্যতীত আর কোন মঙ্গলকাব্যেরই মূলগ্রন্থ পাঠ করিয়াছিলেন বলিয়া মনে হয় না।” [২৬] এবং তার এই ধারণা অর্জিত হয়েছিল দীনেশচন্দ্র সেনের ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ গ্রন্থ থেকে, “এই গ্রন্থখানি হইতেই তিনি প্রধানতঃ মঙ্গলকাব্যের বিভিন্ন বিভাগ এবং বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানিতে পারিয়াছিলেন বলিয়া মনে হয়। তখন পর্যন্তও ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ ব্যতীত অন্য কোন মঙ্গলকাব্যের গ্রন্থ মুদ্রিত করিয়া প্রকাশিত হয় নাই।” [২৭] মঙ্গলকাব্য বিষয়ক গবেষণার একেবারে প্রাথমিক স্তরের সময়টিতে এর ঐতিহাসিক ও সামাজিক তাৎপর্য নির্ধারণ তাই আকাঙ্ক্ষা করাটাও সমীচীন হবে না। “রবীন্দ্রনাথ ধর্মমঙ্গল বা মনসামঙ্গল কাব্য পাঠ করিয়াছিলেন, তাহার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। সুতরাং মঙ্গলকাব্য সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের অধ্যয়ন আংশিক ছিল। সে যুগে মুদ্রিত মঙ্গলকাব্যের অভাব ইহার অন্যতম প্রধান কারণ হইয়া থাকিবে।” [২৮] মঙ্গলকাব্য সমাজের নিচুকোটির মানুষের সাহিত্য, এটা স্মরণ রেখেও রবীন্দ্রনাথ প্রধানত মনে করেছিলেন যে, “তখন সমাজের মধ্যে যে উপদ্রব-উৎপীড়ন, আকস্মিক উৎপাত, যে অনিশ্চয়তা ছিল, মঙ্গলকাব্য তাহাকেই দেব মর্যাদা দিয়া সমস্ত দুঃখ-অবমাননাকে ভীষণ দেবতার অনিয়ন্ত্রিত ইচ্ছার সহিত সংযুক্ত করিয়া কথঞ্চিৎ সান্ত্বনা লাভ করিতেছিল এবং দুঃখ-ক্লেশকে ভাঙাইয়া ভক্তির স্বর্ণমুদ্রা গড়িতেছিল।” [২৯] এভাবে রবীন্দ্রনাথের কাছে মঙ্গলকাব্য বাংলার একটা ঐতিহাসিক পর্বে নিয়তির শিকার মানুষের সান্ত্বনা কাব্যমাত্র।
যা হোক, অন্য ইতিহাসবিদরা বরং মনে করেন মঙ্গলকাব্য নিম্ন শ্রেণির মানুষের শক্তি ও সংস্কৃতির একটা বিষ্ফোরণ, যেটা সম্ভব হয়েছিল তাদের ওপর চেপে বসে থাকা ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের অবসানের ফলে। মুসলমান শাসনের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছিল। মমতাজুর রহমান যেমন বলেন মঙ্গলকাব্যের উৎস সম্পর্কে:
“হিন্দু সমাজের উঁচু ও নিচু শ্রেণির মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়, যার পরিণতিস্বরূপ ব্রাহ্মণদের সামাজিক বিচ্ছিন্নতা নিচু শ্রেণির মানুষকে বিকাশমান বাংলা ভাষায় তাদরে ধারণা ও বিশ্বাসগুলি অকপটে প্রকাশের কিছুটা স্বাধীনতা দিয়েছিল বলে মনে হয়। সেনরা ছিলেন ব্রাহ্মণ্যবাদ ঘেঁষা এবং সংস্কৃত সংস্কৃতির সমর্থক। এখন তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা বিলুপ্ত হবার পর অনার্যদের দেব-দেবী ও ধারণাগুলির উপস্থিতি সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অনুভব করা যাচ্ছিল। এভাবে পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে মনসা, চণ্ডী, গোরখনাথ এবং সত্যপীরকে নিয়ে বেশকিছু কাব্য রচিত হয়েছিল।” [৩০]
মঙ্গলকাব্যের সামাজিক পাটাতনটি সম্ভব হয়েছিল ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের দুর্বল হয়ে পড়া এবং লৌকিক ও অবৈদিক দেবদেবীর অধিষ্ঠিত হওয়ার সামাজিক শর্ত সৃষ্টির ফলে। এই কারণেই সাহিত্যিক মূল্যের পাশাপাশি মঙ্গলকাব্যের সামাজিক ও ঐতিহাসিক মূল্যও বিশাল। শাসক মুসলমান, ধর্মীয় দ্বন্দ্বে লিপ্ত ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র এবং লৌকিক দেবদেবীর পূজারী এই তিনপক্ষের সম্পর্কের বেশ খানিকটা মূল্যায়ন তাই মঙ্গলকাব্য থেকেই হতে পারে।
বাংলায় সুলতানি আমলে লিখিত বিজয়গুপ্তের (আনুমানিক ১৪৯৪ সালের দিকে রচনার কাজ শুরু করেন) মনসামঙ্গলের বর্ণনায় মুসলমান কাজী হিন্দুর আচারাদি পালনে কোনো আপত্তি করেননি। মোল্লা কিন্তু সর্পদেবীর পূজানুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়ায় কাজীকে ভৎর্সনা করেন।[৩১]
কাজী আর মোল্লার মধ্যে ফারাকটি তাৎপর্যপূর্ণ। কাজী প্রত্যক্ষভাবে রাজক্ষমতাকে প্রতিনিধিত্ব করছেন, মোল্লা মুসলমান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা হিসেবে জনগণের একটা সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করছেন। সুলতানের লক্ষ্য কর আদায়, ক্ষমতার বিকাশ ও স্থায়িত্ব সাধন, তাই প্রয়োজন যথাসম্ভব সাম্প্রদায়িক স্থিতাবস্থা বজায় রাখা। এসবের স্বার্থেই কাজী সাধ্যানুযায়ী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসকে অধিকাংশ সময়ে নিরুৎসাহিত করবেন, কিন্তু নিজ ধর্মের লোকদের কাছে 'ধার্মিক' সাজারও যথাসম্ভব চেষ্টা করে যাবেন। বাংলার মতো অঞ্চলে সুলতানের অবস্থানের এই হলো জটিলতা: একদিকে সংখ্যাগুরু ভিন্ন ধর্মাবলম্বী প্রজাকে ক্ষিপ্ত করতে সাহস না করা, অন্যদিকে তাঁর শেষ ভরসা ও ক্ষমতার ভিত্তি নিজ ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন হারানোর আশঙ্কা।
এই জটিলতা উত্তর ভারতেও নিশ্চয়ই আরেকভাবে ছিল। সেখানেও সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর সাথে আগে কিংবা পরে একটা সমন্বয়ের ধারায় রাজনৈতিকভাবেই শাসকদের আসতে হয়েছে। সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সমন্বয়ের কাজটি অবশ্য গোড়া থেকেই শুরু হয়েছিল, তার বহু নিদর্শন ইতিহাসে পাওয়া যাবে। সমন্বয় বিরোধী ধারাও সর্বদাই শক্তিশালী ছিল, সেটাও আমরা দেখিয়েছি। কিন্তু রাজনীতিতে কোন ধারা কখন প্রাধান্য করতে পারছে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মুসলমান ভারতে অভিবাসীদের যে বিপুল স্রোত সুলতানী ও মোঘল আমলে আমলাতন্ত্র, সেনাবাহিনী ও অভিজাত অংশটি গঠন করতো ও পরিপুষ্ট করতো, সেটাই মিলনের প্রক্রিয়াটিকে কিছুটা হলেও ধীরগতির করে দিয়েছিল। কিন্তু স্বাধীন সুলতানী বাংলায় উত্তর ভারতের সাথে বিচ্ছিন্নতা, ফলে অভিবাসী মুসলমানের স্রোতে মন্দগতি [৩২] স্থানীয় জনসাধারণের সাথে শাসকদের সমন্বয়, স্থানীয় সাহিত্যে তুলনামূলক বেশি উৎসাহ প্রদান ও স্থানীকিকরণের কাজটি করে।
এই বিচ্ছিন্নতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন মমতাজুর রহমান তরফদারের মতো ঐতিহাসিক, তার বিবেচনায় “উত্তর ভারত ও মধ্য এশিয়া থেকে বিচ্ছিন্নতার ফলে বাংলা সাংস্কৃতিকভাবেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই বিচ্ছিন্নতাই, মনে হয়, বাংলার স্থানীয় সংস্কৃতির বিকাশ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছিল।” [৩৩] সেই অর্থে সুলতানী বাংলায় সমন্বয়ের কাজটি বাকি ভারতের চেয়ে প্রবলতর থাকার কথা। অন্যদিকে বাংলা যখন আবারও দিল্লীর অধীনস্ত হলো, ততদিনে উত্তর ভারতেও মুসলমানদের শক্তিশালী অবস্থান, সংহত রাষ্ট্রযন্ত্র বিকাশের সূত্রে বাকি ভারতেও এই সমন্বয়ের কাজটি যথেষ্ট অগ্রসর হয়ে গিয়েছে বলে, মোঘল-দখল পরবর্তী বাংলাতে সমন্বয়ের ধারা অব্যাহতই থেকেছে। যদিও, বাংলা সাহিত্যে স্থানীয় মুসলমানদের অংশগ্রহণ ও চর্চা যথেষ্টই বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সাহিত্যে বিচ্ছিন্নতার এই গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্যটি উল্লেখ করে মমতাজুর রহমান তরফদার আরও বলেন:
“বাংলা ভাষাভাষী একটি মুসলমান মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিবর্তনের প্রথম পর্যায় আমরা প্রাক-মোঘল বাংলাতেই পাই। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে জীবিত সৈয়দ সুলতান, শেখ ফয়জুল্লাহ, দৌলত কাজী এবং আলাওল প্রধানত এ বিবর্তনেরই ফসল। মোগল শাসন তাদেরকে মুসলিম সংস্কৃতির অন্ধকার অজ্ঞাত অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছিল, যার ফলে তাদেরকে আধুনিক গবেষকদের খুঁজে বের করতে হয়েছে।” [৩৪]

আবার মোগল সাম্রাজ্যেও একটা প্রকাশ্য সম্প্রীতির ভাব থাকলেও পারিবারিক দ্বন্দ্বে মোঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তিটা নড়বড়ে হওয়ায় আওরঙ্গজেবের আমলে ধর্মীয় চিহ্নগুলোই যে প্রধান হয়ে উঠল, তার কারণ তার অসাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিটা মোঘল সাম্রাজ্যের একটা নির্দিষ্ট ধরনের ওপরই নির্ভরশীল ছিল। সেটি বিপন্ন হবার পর সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিটাও নড়বড়ে হয়ে পড়লো

ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা কাজী কিংবা সুলতানের যতই থাকুক না কেন, রাজনীতি সর্বদা ক্ষমতার বাঁধা নিয়মে ভারসাম্য রক্ষা করে চলে না, দাঙ্গাটা হঠাৎ হঠাৎই লাগত। বিপুল সংখ্যাগুরু হলেও রাজক্ষমতারহিত হিন্দু জনগোষ্ঠীই এই দাঙ্গার শিকার হতো এবং তাদের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো, এই সময়টিতে কিন্তু রাষ্ট্রক্ষমতার প্রতিনিধি কাজী তার সম্প্রদায়েরই পক্ষে অবস্থান নিতেন। কবি বিজয়গুপ্তের বর্ণনায়:
'যাহার মস্তকে দেখে তুলসীর পাত।
হাতে গলায় বাঁধি লয় কাজির সাক্ষাত।
কক্ষতলে মাথা থুইয়া বজ্র মারে কিল।
পাথর প্রমাণ যেন ঝড়ে পড়ে শিল।
পরের মারিতে পরের কিবা লাগে ব্যথা।' [৩৫]
এই 'পর' তো শুধু ব্যক্তিগতভাবেই পর না, তুলসীধারণকারী সম্প্রদায়গত পরও বটে। কিন্তু এরপরও রাজক্ষমতা দাঙ্গা এড়িয়ে চলতে চাইত। চৈতন্যদেবের প্রতি বিদ্বিষ্ট কাজীও মহাসঙ্কীর্তন রুদ্ধ করতে এসে শেষ পর্যন্ত তার প্রেমভাবে মুগ্ধ হয়ে তাকে আলিঙ্গন করেন, [৩৬] এমন বর্ণনাও পাওয়া যাবে চৈতন্যের জীবনীতে। আবার মোগল সাম্রাজ্যেও একটা প্রকাশ্য সম্প্রীতির ভাব থাকলেও পারিবারিক দ্বন্দ্বে মোঘল সাম্রাজ্রের ভিত্তিটা নড়বড়ে হওয়ায় আওরঙ্গজেবের আমলে ধর্মীয় চিহ্নগুলোই যে প্রধান হয়ে উঠল, তার কারণ তার অসাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিটা মোঘল সাম্রাজ্যের একটা নির্দিষ্ট ধরনের ওপরই নির্ভরশীল ছিল। সেটি বিপন্ন হবার পর সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিটাও নড়বড়ে হয়ে পড়লো।
অধিকাংশ ইতিহাসবিদের মোটামুটি গ্রহণযোগ্য মত হলো, সুলতানী আমলে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সাধারণভাবে শান্তিপূর্ণই ছিল, এমনকি হিন্দু-মুসলিম মিলন, পরস্পরের সংস্কৃতি সম্পর্কে শ্রদ্ধা ও উপভোগের অজস্র দৃষ্টান্তও ইতিহাসে পাওয়া যায়। মমতাজুর রহমান তরফদার ভাষায়-
“যদিও সতর্কতার সঙ্গে এসব গ্রন্থ পড়লে মনে হয় যে কিছু কিছু মুসলমান কর্মকর্তার ব্যক্তিগত খেয়াল ও ধর্মান্ধতা এসব সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের জন্য দায়ী ছিল। আবার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার ঘটনাও ঘটেছিল... উপরের একটি পরিচ্ছেদে আলোচিত মুসলমান ও ব্রাহ্মণদের মধ্যে বিরোধগুলির কিছু সামাজিক-রাজনৈতিক কারণ ছিল। এগুলি সম্ভবত নিম্নবর্ণের হিন্দুদের সঙ্গে মুসলমানদের সামাজিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করেনি। তাছাড়া, সমকালীন দেশীয় সাহিত্যে আমরা যেসব ধর্মীয় দাঙ্গার ঘটনার বিবরণ দেখতে পাই সেগুলিকে বড় করে দেখার কোন কারণ নেই, কারণ এগুলি সমাজতাত্ত্বিক বিবর্তনের সমগ্র ধারাকে প্রভাবিত করেছিল বলে মনে হয় না।... ' ।[৩৭] অর্থাৎ ব্রিটিশ-পূর্ব আমলে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের তুলনায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিই প্রধান প্রবণতা ছিল, এই মতটি একভাবে মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু জিনিসটা ব্রিটিশরা আসার আগে এ দেশে ছিল না, এই মতটি মেনে নেওয়ার মতো না। (ক্রমশ)

পড়ুন-

অধ্যাপক রাজ্জাক : কয়েকটি খটকা || পর্ব-৩

অধ্যাপক রাজ্জাক : কয়েকটি খটকা || পর্ব-২

অধ্যাপক রাজ্জাক : কয়েকটি খটকা || পর্ব-১

 

টিকা
[২৬] শ্রী আশুতোষ ভট্টাচার্য, বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস, পৃষ্ঠা ১৩৫
[২৭] শ্রী আশুতোষ ভট্টাচার্য, বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস, পৃষ্ঠা ১৩৬
[২৮] শ্রী আশুতোষ ভট্টাচার্য, বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস, পৃষ্ঠা ১৩৬
[২৯] রবীন্দ্রনাথ, বঙ্গভাষা ও সাহিত্য
[৩০] হোসেন শাহী আমলে বাংলা, অনুবাদ মোকাদ্দেসুর রহমান, বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ২৩
[৩১] হোসেন শাহী বেঙ্গল, মমতাজুর রহমান তরফদার
[৩২] “কিন্তু ১৩৪২ থেকে ১৫৭৪ এর মাঝের সময়টুকুতে পরপর কতগুলো স্বাধীন মুসলিম রাজবংশের অধীনস্ত বাংলায় বাংলা উত্তর ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, এবং ওই স্থানগুলো থেকে অভিবাসন বিপুল হারে হ্রাস পায়।” রিচার্ড এম ইটন, হু আর দি বেঙ্গল মুসলিমস, এসেইস অন ইসলাম অ্যান্ড ইনডিয়ান হিস্ট্রি, পৃষ্ঠা ২৪৯, চকিত অনুবাদ বর্তমান লেখকের
[৩৩] হোসেন শাহী আমলে বাংলা, অনুবাদ মোকাদ্দেসুর রহমান, বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ২০
[৩৪] হোসেন শাহী আমলে বাংলা, অনুবাদ মোকাদ্দেসুর রহমান, বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ২১
[৩৫] বিজয়গুপ্তের মনসামঙ্গলের এই অংশটি উদ্ধৃত করা হয়েছে অনিল চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়-এর মধ্যযুগে বাংলা ও বাঙালী গ্রন্থ থেকে, কে পি বাগচী এন্ড কোম্পানি, দ্বিতীয় মুদ্রণ, ১৯৯৯, পৃষ্ঠা ৫৩। মনসা পূজায় নিযুক্ত রাখাল বালকদের উপর অত্যাচারের বর্ণনায় একই পৃষ্ঠায় আরেকটি উদ্ধৃতি:
হারামজাদ হিন্দুর এত বড় প্রাণ।
আমার গ্রামেতে বেটা করে হিন্দুয়ান॥
গোটে গোটে ধরিব গিয়া যতেক ছেমরা।
এড়া রুটি খাওয়াইয়া করিব জাত মারা॥
[৩৬] হোসেনশাহী বেঙ্গল, জীবনচর্যা, ২৬৮
[৩৭] হোসেনশাহী বেঙ্গল, পৃষ্ঠা ২৬৮

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
লখনউকে বড় হারের লজ্জা দিয়ে শীর্ষে কলকাতা
লখনউকে বড় হারের লজ্জা দিয়ে শীর্ষে কলকাতা
ন্যাশনাল ব্যাংকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন, নিয়োগ পেলেন ১০ জন 
ন্যাশনাল ব্যাংকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন, নিয়োগ পেলেন ১০ জন 
স্বস্তির জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে ফিরলো লিভারপুল
স্বস্তির জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে ফিরলো লিভারপুল
সর্বাধিক পঠিত
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন বৃষ্টি হবে
সব জেনেও পুলিশকে কিছু জানাননি মিল্টনের স্ত্রী
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবি হারুনসব জেনেও পুলিশকে কিছু জানাননি মিল্টনের স্ত্রী