X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

তিতুমীরের জন্মভিটায় || পর্ব-২

মুহম্মদ মুহসিন
০২ মে ২০১৭, ১৩:৩৯আপডেট : ০২ মে ২০১৭, ১৩:৫৯

তিতুমীরের জন্মভিটায় || পর্ব-২ পূর্বপ্রকাশের পর

একবার ভাবলাম তিতুমীর মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে কিছু একটা খেয়ে যাই, কারণ, সকাল থেকে দানাপানি মুখে কিছু পড়েনি। কিন্তু একটি হঠাৎ ভাবনায় তিতুমীর মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে ঢোকা থেকেই বিরত থাকলাম। ভাবনাটি অবশ্য বালখিল্যগোছের। কিশোর শ্রেণির কোনো বইতেই মনে হলো তিতুমীরের নামের ইতিহাস পড়েছিলাম। পড়েছিলাম যে, নিসার আলী নামের এই ছেলের নাম তিতুমীর হয়ে যাওয়ার পিছনে ছিল তাঁর ‘তিতা’স্বাদের প্রতি অস্বাভাবিক অনুরাগের একটি ঘটনা। ছোটবেলায় তার এক কঠিন অসুখ করেছিল। সে অসুখের ওষুধ প্রচণ্ড তিতা স্বাদের হওয়ায় বাবা-মা চিন্তায় পড়েছিল যে এই ওষুধ তো এই ছোট ছেলেকে খাওয়ানোই যাবে না। কিন্তু ওষুধ নিসার আলীকে খেতে দেয়ার পরে দেখা গেল পুরো উল্টো দৃশ্য। খুব মজা করে সেই তেতো ওষুধ বালক নিসার আলী খেয়ে ফেললো। শুধু তাই নয়, পরবর্তীকালেও দেখা গেল তিতা স্বাদের প্রতিই বালক নিসারের বেশি আগ্রহ। ঐ অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে আশেপাশে সর্বত্র তার নাম ‘তিতা’ থেকে ‘তিতু’হয়ে গেল। বংশ ঐতিহ্যের মীর পদবী যুক্ত হয়ে কালক্রমে ‘তিতু’হয়ে গেল ‘তিতুমীর’- আর চিরকালের জন্য চাপা পড়ে গেল তার মূল নাম নিসার আলী।

ভাবলাম নিসার আলীর স্বাদ ও আগ্রহ যেহেতু তিতার প্রতি সেহেতু তার স্মৃতির ভিটায় যাওয়ার পথে মিষ্টি খেয়ে হাঁটা দেয়াটা ঠিক হবে না। তাই ঢুকলাম না মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে। বরং, যে রাস্তা ধরে হাঁটা দিতে হবে নারিকেলবাড়িয়ার বাঁশের কেল্লার দিকে সেই রাস্তার মুখে দাঁড়ানো মুদী জাতীয় এক দোকানদারের কাছে আরেকবার নিশ্চিত হয়ে নিলাম যে এটা তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার দিকের রাস্তা কিনা। তারপর সেই রাস্তা ধরে শুরু করলাম হাঁটা। রাস্তা ধরে হাঁটছি আর ভাবছি সকাল থেকে এত পথ পাড়ি দিয়ে বৃটিশভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামীর দুর্গ বাঁশের কেল্লার দিকে আসতে আসতে একেবারে কেল্লার কাছে এসে পড়লাম, অথচ এতক্ষণে ঐ একটিমাত্র মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের সাইনবোর্ডে ছাড়া এই মহান লোকটির নামটি অন্য কোথাও কোনোরূপে একবার চোখে পড়লো না- এ তো বড় রহস্যময়। এমনকি একেবারে তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার দিকের এই রাস্তাটির মুখেও তো অন্তত উচিত ছিল একটি তীর-অঙ্কিত নির্দেশনা দিয়ে লিখে রাখা যে এই দিকে তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা। সেটুকুও নেই। একই সাথে মনে পড়ছিল যে, কলকাতা-হুগলীসহ সারা ভারতজুড়ে বিভিন্ন স্থানেই তো ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামীদের নামে রাস্তঘাট, সরকারী প্রতিষ্ঠান, পার্ক অনেক অনেক দেখলাম। সে-সব জায়গায়ও তো এই নামটি কোথাও দেখেছি বলে মনে পড়লো না। পরে অবশ্য খোঁজ নিয়ে জেনেছি যে, বারাসাতে তিতুমীরের নামে একটি বাসটার্মিনাল আছে এবং বারাসাতের জেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমটিও তিতুমীরের নামে। আমি সে-জায়গায় যাইনি বলেই তো আমার চোখে পড়েনি। সুতরাং এ নিয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়ে বদগুমান করা অবশ্যই ঠিক না।

প্রস্তাবিত তিতুমীর সংগ্রহশালার বহির্দেয়াল অবশ্য এই খোঁজ তখনো জানি না বলেই এই কথাগুলো নিয়ে ভাবছিলাম আর হাঁটছিলাম। সাথে একটু আনন্দ পাচ্ছিলাম এই ভেবে যে, আমার বাংলাদেশ এই জায়গায় অন্তত পশ্চিমবঙ্গকে একখানা ট্রাম্প মারতে পেরেছে। তিতুমীরের জন্ম যদিও বাংলাদেশে নয়, তারপরও ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের প্রথম বীর ও প্রথম শহীদ হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে তাঁর মর্যাদাব্যঞ্জক স্মরণে একটি সরকারী কলেজ এবং বাংলাদেশের সর্বোচ্চ খ্যাতিসম্পন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হল তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হাঁটার পথে এই আনন্দ আরো একটু বেড়ে গেল একটি হঠাৎ দৃশ্যে। রাস্তার পাশে দেখলাম একটি লতার মাচান থেকে প্রচুর পটল ঝুলছে। পটল অনেক দেখেছি তবে সবই বাজারে। গাছে পটল ঝুলতে এই জীবনে প্রথম দেখে মেজাজটা বেশ ফুরফুরে হওয়ার মতো ভালো লাগলো। পটল বিষয়ক অভিজ্ঞতায় নিজেকে বেশ জ্ঞানী মনে হলো। ইচ্ছে হচ্ছিলো চিৎকার দিয়ে বলি- তোমরা জ্ঞানীরা শোনো সবাই, পটলও যে লতার মতো গাছে ধরে সে কথা তোমাদের কারো চেয়ে আমি আর কম জানি না। স্বচক্ষে দেখে ফেলেছি। তোমরা চাইলে আমি এখন এখানে পটল তুলতেও পারি। অবশ্য এ চিৎকার গলার ভিতর থেকে বাইর করলাম না। ঘুরতে গিয়ে একবার পাগল সাব্যস্ত হয়েছিলাম ১৯৯২ সালে বরগুনার আমতলীতে। সেই রকম অভিজ্ঞতা আর বাড়িয়ে লাভ নেই।

লাভ বরং বিশাল পরিমাণে অপেক্ষা করছে সামনে। তিতুমীরের মাজার জিয়ারাত করার ইহকালীন ও পরকালীন দোজাহানের লাভ। সেই লাভের লোভে জোর কদম হাঁটছি। পথে যারে পাচ্ছি তার কাছেই বলতে গেলে নিশ্চিত করে নিচ্ছি আমি ঠিক পথে হাঁটছি কিনা। বারবার এমন নিশ্চিতকরণ অবশ্য শুধু পথের দিশার উদ্দেশ্যেই ছিল না। যার সাথেই দেখা হচ্ছিলো দাঁড়ি ও চেহারাসুরতে তাদের সকলকেই আমার জিগরি আলাপের মুসলমান ভাই বলে মনে হচ্ছিলো। ফলে সুযোগ হচ্ছিলো একখানা লম্বা সালাম দেওয়ার এবং একই সাথে কোনো এক অদৃশ্য সখ্যের বদৌলতে আশা করার যে, কোনো আপন গোপন কথা হয়তো কথা বলতেই তার কাছ থেকে জেনে ফেলবো। কিন্তু অল্পক্ষণেই বুঝতে পারছিলাম যে আমার এমন আশা করাটা ছিল নেহায়েতই মূর্খ-সুলভ কল্পনা যেমন মূর্খতায় আমি তখনো পথ চলছিলাম তিতুমীরের মাজার জেয়ারত করবো বলে। আমি ওপার থেকে আসা মুসলমান শুনেই এখানকার মুসলমানরা আমাকে তাদের মায়ের পেটের ছোট ভাই মনে করে সুখদুঃখের সব কথা কইতে শুরু করবে এমনটা ছিল একেবারেই আমার মূর্খতার এক্সটেনশন। বরং ব্যাপারটা এমন ছিল যে, তারা একথা শুনেই আমাকে কিছুটা সন্দেহের চোখে দেখা শুরু করছিল। ভাবছিল, আমি তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা দেখতেই এতদূর এসেছি নাকি অন্য কোনো মতলব আছে। মাঝে মাঝে কিছুটা জেরাও করছিল।

এমন সব জেরা-জেয়ারার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি এবং তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার কাছাকাছি পৌঁছেছি, এমন সময় একটা দৃশ্য দেখলাম অন্যরকম। দুটো লোক। একজন একটা রিকশা-ভ্যানে বসা অন্যজন ভ্যানটি ধীরে ধীরে টানছে। ভ্যানে বসা লোকটি একটি স্বল্পশক্তি সম্পন্ন মাইকে ইমাম হোসেনের কারবলার বিয়োগান্ত কাহিনির বিভিন্ন অংশ বিক্ষিপ্তভাবে সুর দিয়ে বলছে। আর গ্রামের বাড়িগুলো থেকে লোকজন বের হয়ে ভ্যানে সাজানো বিভিন্ন ঝুড়িতে বিভিন্ন শস্য ঢেলে দিয়ে যাচ্ছে। কোনো ঝুড়িতে চাল, কোনোটায় আলু, কোনোটায় ডাল। আমি যখন ভ্যানটা অতিক্রম করে এগোচ্ছি তখন পাশের বাড়ির এক মহিলা এসে একটি বালতিতে কেজি দুই-আড়াই আলু ভ্যানে রক্ষিত আলুর ঝুড়িটায় ফেলে দিল। আমার মনে হচ্ছিলো ইমাম হোসেনের শাহাদাৎ বা মৃত্যুবরণ বিষয়ক কোনো জলসা-মাহফিল হবে, সেই লক্ষ্যে হয়তো চাদা তোলা হচ্ছে। আমার অনুমানটা ঠিক আছে কি না একটু পরখ করে নিতে আমার পাশ ধরেই এগিয়ে চলা একটি স্কুল ড্রেস পরা মেয়ের কাছে জানতে চাইলাম- এই ব্যাপারটা কী। মেয়েটি বললো লোক দুটো ভিক্ষে করছে। দুজনই ভিক্ষুক বা ফকির। আমি জানতে চাইলাম তারা কেন ইমাম হোসেনের কাহিনি বলছে। মেয়েটি উত্তর দিলো ঐ কাহিনি শুনিয়ে লোকজনের দয়া-মমতা জাগাতে সুবিধে হয়। উত্তর শুনে আমার বার্টোল্ট ব্রেশটের নাটক ‘থ্রি পেনি অপেরা’র কথা মনে পড়লো, তবে তা মেয়েটিকে আমি বলতে গেলাম না। সাথে মনে হলো, ইস্, আমাদের ভিক্ষুকরা যদি জানতো যে ইমাম হোসেনের কারবালার কাহিনি বলে এত সহজে কেজিতে কেজিতে ভিক্ষার দ্রব্য পাওয়া যায় তাহলে হয়তো আমাদের দেশে ভিক্ষুকদেরকে আদি ও সহী কারবালানামা সাপ্লাই দিতে কবিদের মধ্যে লড়াই পড়ে যেতো। এই মনের কথাটাও মেয়েটিকে আমি জানাতে গেলাম না। বরং, মেয়েটির সাবলীল উত্তরে আরো উৎসাহী হয়ে জানতে চাইলাম ‘তিতুমীর কে ছিলেন তুমি কি জানো?’ কোনো চিন্তাভাবনা না করেই মেয়েটি উত্তর দিলো- ‘কোনো বড় মোবাল্লেগ-টোবাল্লেগ হবে হয় তো।’ জিগ্যেস করলাম- ‘বইয়ে এমন লেখা আছে?’ বললো- ‘বইয়ে তো তিতুমীর পাইনি কোথাও।’ ‘কোন ক্লাসে পড়?’ ‘ক্লাস এইটে।’ ‘তুমি আমাকে তিতুমীরের মাজার দেখিয়ে দিতে পারবে?’ ‘ঐতো’ বলে একটা দেয়াল-ঘেরা স্থান ও তার এক কোণে নির্মীয়মান একটি ঘরের দিকে ইঙ্গিত করে মেয়েটি বাম দিকের রাস্তায় তার বাড়ির দিকে চলে গেল। তাহলে কি মেয়েটিও জানে না যে তিতুমীরের কবর নেই?

তিতুমীরকে মেয়েটি মোবাল্লেগ কেন মনে করলো এটি একটি খটকা আকারে আমার ভিতরে রয়ে গেল। সেই খটকা ভিতরে নিয়েই সেই বেষ্টনীর দিকে আগালাম। ভিতরে ঢোকার আগেই বাইরে এক কোণে নির্মীয়মান প্রকোষ্ঠটির গায়ে প্যানাফ্লেক্সের একটা বড় ব্যানার লটকানো দেখলাম। ব্যানারটিতে লিখিত ছিল যে, শহীদ তিতুমীরের জন্মমাস উপলক্ষে ২২ এপ্রিল ২০১৭ তারিখ বিকাল ৩ টায় তিতুমীরে জন্মভিটায় একটি মিলন অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। এর পরের দিন ২৩ এপ্রিল একটি স্মরণ কাফেলা সকাল দশটায় তিতুমীরের জন্মভিটা থেকে যাত্রা করে নারিকেলবেড়িয়ার বাঁশের কেল্লায় এসে পরিক্রমা সম্পন্ন করবে। ব্যানারটির উপরে এর আয়োজক সংগঠনের নাম লিখা ছিল ‘শহীদ তিতুমীর মিশন’। সংগঠনের নামের পাশে মূল বাঁশের কেল্লার একটি আলোকচিত্র বা কল্পচিত্র অনেকটা সংগঠনের লোগো আকারে মুদ্রিত। দেখে ভালো লাগলো। ছবি তুললাম। খেয়াল করলাম আমরা বাংলাদেশে গ্রামটির নাম ‘নারিকেলবাড়িয়া’বললেও মূলত এর নাম ‘নারিকেলবেড়িয়া’। আমরা নারিকেলবাড়িয়া বলি হয়তো শব্দটিকে ‘বাড়ি’র (Home of coconut trees) সাথে সংশ্লিষ্ট ভেবে। আর ওখানকার মানুষেরা শব্দটিকে ‘নারিকেলবেড়িয়া’বলে হয়তো ‘বেড়’ বা ‘বেষ্টনী’র (Enclosure of coconut trees) সাথে সংশ্লিষ্ট করতে। পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলতে চাচ্ছি যে, বর্ণনার এই মুহূর্তে যেহেতু গ্রামটির শুদ্ধ নামটি জানা হলো সেহেতু বর্ণনার পরবর্তী অংশে আমরাও নামটি ‘নারিকেলবেড়িয়া’ রূপেই লিখবো।

তিতুমীরের ঐতিহাসিক বাঁশের কেল্লার চত্বর, যেখানে বর্তমানে শাবিয়ে কারবালা অবস্থিত যাই হোক, এই ব্যানারের ছবি তুলে বেষ্টনীর ভিতরে ঢুকলাম। ভিতরে ঢুকে দেখি এক তলা একটা মসজিদের মতো ভবন এবং সাথে একটি মাজার। ভাবলাম- ‘ইউরেকা’। এটাই তাহলে তিতুমীরের মাজার। সেই ‘ইউরোকা’-জাত পুলকের সাথে গিলাফে ঢাকা মাজারের অনেক ছবি তুললাম। ছবি তুলতে তুলতে উত্তরপাশে এসে দেখলাম মাজারের মাথার দিকের গাত্রে একটি বড় পাথরের মাঝখানে লেখা রয়েছে- ‘এই পাথরটি ইরাকের হজরত আব্বাছ আলমদারের রওজার পাথর’। একটু খটকা লাগলো। তিতুমীরের মাজারের গায়ে ইরাকের এই পাথর কেন থাকবে? বের হয়ে মূল ভবনের সামনে গিয়ে এই খটকাটা একটু কাটলো। ভবনের গায়ে মূল দরজার ঊর্ধাংশে লিখিত রয়েছে:

৭৮৬

শহীদ সম্রাট হজরত এমাম হোসায়েন (আঃ) ও ৭২ শহীদ স্বরণে

* ৭২ শহীদ কারবালা  * ৬১ হিজরী

গ্রাম- নারিকেলবেড়িয়া, পো- বুরুজ, থানা- বাদুড়িয়া, উঃ২৪পরগনা

ভবনের গায়ে সাইনবোর্ডসদৃশ এই লেখা দেখে বুঝলাম এটি তিতুমীরের মাজার নয়, এটি কারবালার স্মারক কোনো প্রতিষ্ঠান। তাহলে এখানে তিতুমীরের কী আছে? কিছুই না? এক কোণে একটি দোকান ঘরের মতো কুঠুরি নির্মীয়মান দেখা যাচ্ছে, যেটির দেয়ালে প্যানাফ্লেক্সের ব্যানার ছিল বলে আগেই উল্লেখ করেছি। ওটাও হয়তো এই ‘৭২ শহীদ কারবালা’লিখিত ভবন যে-কাজে ব্যবহৃত হয় তার ওয়েটিং রুম বা এ জাতীয় কিছু হবে। মনে পড়লো আগের দিন ড. আমজাদ হোসেন বলেছিলেন ওখানে তো তিতুমীরের কিছু নেই, শুধু মহররমের সময় ওখান থেকে তাজিয়া মিছিল নামে আর কিছু মানুষ মাঝে মাঝে গিয়ে পিকনিক করে। কিন্তু এটি কেমন কথা? এখানেই তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা ছিল অথচ এখন তার স্মৃতির কিছুই এখানে নেই। এটা কীভাবে সম্ভব?

এক খটকা নিয়ে ঢুকেছিলাম। এবার নতুন অনেক খটকা নিয়ে বের হলাম। বের হয়ে দেখলাম পূর্ব পাশে একটা টিউবওয়েল চেপে একজন লোক গোসল করছে। লোকটি তার নাম বললো আব্দুল কাদের। তাকে জিগ্যেস করলাম– ‘এখানে তিতুমীরের স্মৃতির কিছু নেই?’ সে জানালো যে একটা ছোট ফলকের মতো নির্মাণ ছিল। সেটি ভেঙে ঠিক সেই জায়গার ওপরেই এই কুঠুরিটা নির্মিত হচ্ছে। এই কুঠুরিটায় নাকি তিতুমীর বিষয়কই কিছু একটা হবে। বুঝলাম- এখানে তিতুমীরের স্মৃতিরক্ষায় কিছু ছিল না তা নয়, তবে যা ছিল তার চেয়ে ভালো কিছু হবে সেই স্বার্থে এখন কিছু নেই। আরো বুঝলাম যে এই নির্মীয়মান কুঠুরিটি বেষ্টনীর ভেতরের ‘৭২ শহীদ কারবালা’ নামক ভবনের সাথে সম্পর্কিত নয়। কল্পনায় দেখতে শুরু করলাম পাঁচ ইঞ্চি দেয়ালে নির্মীয়মান কুঠুরিটা আরো বড় হবে- আরো উঁচু হবে- বাঁশের কেল্লার আদল পাবে। এই স্বপ্ন-ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ঐ কুঠুরিটারই কয়েকটা ছবি তুললাম। (চলবে)

তিতুমীরের জন্মভিটায় প্রতি মঙ্গলবার প্রকাশিত হবে

 

প্রথম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন-

তিতুমীরের জন্মভিটায়

 
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
ছাঁটাই ও পলিশ বন্ধ হলে কম দামে চাল কিনতে পারবে মানুষ: খাদ্যমন্ত্রী
ছাঁটাই ও পলিশ বন্ধ হলে কম দামে চাল কিনতে পারবে মানুষ: খাদ্যমন্ত্রী
উচ্চশিক্ষা খাতকে ডিজিটালাইজেশনে আনার পরামর্শ ইউজিসির
উচ্চশিক্ষা খাতকে ডিজিটালাইজেশনে আনার পরামর্শ ইউজিসির
বিটুমিন গলে যাওয়া মহাসড়ক পরিদর্শনে দুদক
বিটুমিন গলে যাওয়া মহাসড়ক পরিদর্শনে দুদক
সর্বাধিক পঠিত
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
সজলের মুগ্ধতা অপির চোখে, জন্মদিনে
সজলের মুগ্ধতা অপির চোখে, জন্মদিনে