X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

শ্যাম পুলকের কবিতা

শ্যাম পুলক
২৯ মে ২০২১, ২২:০৫আপডেট : ২৯ মে ২০২১, ২২:১২

বাস্তবতা

অবশেষ দেখতে ইচ্ছে করে আমার মৃত খসখসে শীতল মুখটি।
উঠে দাঁড়াই।
হেঁটে হেঁটে যাই মসৃণ আয়নার সামনে—
তাকিয়েই চমকে উঠি।
ওহ! আমি মৃত নই, আমি মৃত নই!
সে এক ভয়ংকর বাস্তবতার মুখোমুখি হই।



দিগন্তের মাঠের যে পথ ধরে উন্মাদ চাঁদ ওঠে

দিগন্তের মাঠের যে পথ ধরে উন্মাদ চাঁদ ওঠে, সে মাঠের পথে সাপটি মরে পড়ে আছে। মৃত সাপ, বেঁচে থাকার জন্য কোনো গর্ত খুঁজে পায়নি। পায়নি অথবা খোঁজেনি। যার আকাশে অমাবস্যা নেই, পৃথিবীর তারাহীন ভবিষ্যৎ তারই উন্মাদনায় ভয় পেয়ে ও মদ্যপ হয়ে মাঠে ঘুরে বেড়িয়েছে। ঘুরে বেড়িয়েছে, বেহুলা যেভাবে আগুন ও আলোর সম্ভাবনা টের পেয়ে ঘুরেছিল। তার সফলতা ও ঐশ্বর্যে সাপটি ঘুরে বেড়িয়েছে। কিন্তু এখন অবুঝ বিপন্ন শিশিরসিক্ত ঘাসের উপরে মৃত,—আদতে আহ্লাদিত সূর্যের কিরণ প্রাণের নির্যাসের লোভ ছাড়েনি। তখন যত সময় পেরিয়ে এসেছে, তার চেয়ে বেশি বয়সে লুকিয়ে সাপটি নিস্তব্ধতার সুর পেয়েছে, সহস্র শতাব্দী যেভাবে মরে গেছে। তার মৃত্যুর গভীর হতে যে সংগীত আয়োজন শুরু হয়েছে, পিতা, কন্যার অভিমান ক্ষোভ বা দ্বন্দ্ব, তার একান্তে তাকে কে প্রশ্নবিদ্ধ করবে? কে জ্যোৎস্নার মতো মসৃণ আলো ও অভিশাপকে প্রত্যাখ্যান করবে? যেভাবে আসন্ন মৃত্যুর সঙ্গে সংগমরত গোধূলি, গণদেবতা কিংবা কোনো ডালিমকুমার, কোনো প্যাঁচা রাতে ওকে মেরে ফেলে যায়নি।

আমরা যারা সন্ধ্যায় তার মৃত্যু কামনা করেছি, সকালে তারা নিজেদের চিনতে পারিনি, অথবা সবে টের পেয়েছি। বহু শতাব্দী আগে যা ঘটে গেছে, রটে গেছে, যেভাবে তা অভিমান-ক্ষোভে ঘুরে বেড়িয়েছে, বাগানের ঘ্রাণ বা বইয়ের অক্ষরের মতো তা সাগরের অতলে লুকানো ছিল।

 


মৃত্যুপুরাণ

শরতের রাতে নির্বিষ ঢোঁড়াসাপ, পুকুরের পাড়ে সময় পোহায়। উষ্ণতার ভাপ নেয়। জলের সাথে তার যতটা গভীর সম্পর্ক ও যে যে তার বিষ চুরি করে খেয়েছে, এমন নয় সেসব তাকে ভুলিয়ে রাখা যায়। কিন্তু তাতে তার আর কিছুই যায় আসে না—রূপকথার মতো লাগে। তার ক্লান্তি ও সহজ শুদ্ধ শান্তি—দুইই তাকে পেয়ে বসে। তার হলুদ ডোরাকাটা দাগ জ্যোৎস্না পেয়ে বসে না—কালোয় খাপ খাইয়ে নেয়। শেষরাতে বৃষ্টি এলে নড়েচড়ে না। বৃষ্টির ফোঁটা তার কুণ্ডলী পাকানো দেহে পড়ে পুকুরে পিছলে যায়—জীবনের ভাব শুদ্ধ করে। ভোরে সূর্যের ধোঁয়াশাচ্ছন্ন আলো টেঁটার মতো তার শরীরে এসে বেঁধে—প্রতিবাদ করে না। তেমন কোনো ভাষার অভাববোধ করে না—পূরাণের পুঁথি গাঁথার ইতিহাস উষ্ণতা পায়। শরীর পোড়ায়, পুড়তে থাকে।

 


বৃষ্টির আগে কাফকা

বৃষ্টির আগে কাফকা একা একা হেঁটে চলে গেছে—
সন্ধ্যা ফুরায়নি।
আমরা তখনো পাথরের আগুন জ্বালিয়ে নিভে যাবার অপেক্ষায় থাকি।
বৃষ্টি ফুরায়-
অর্চিতা ডানা মেলে দাঁড়ায়
নবীন আকাশ মেঘ বুঝে নিয়ে আমরা তখনো জলের;
আর ফিরব না,
অবশ মুহূর্তের ঘুড়ি, পাহাড় বুঝে নিয়ে
তখনো অপেক্ষায় আমরা। আমরা তখনো একে অপরের।

/জেডএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মেধাসম্পদ সুরক্ষা মানে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করা
মেধাসম্পদ সুরক্ষা মানে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করা
অভিষেকে আস্থার প্রতিদান দিলেন তানজিদ
অভিষেকে আস্থার প্রতিদান দিলেন তানজিদ
এখনও উদ্ধার হয়নি পুলিশের অস্ত্র, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ
২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে সহিংসতাএখনও উদ্ধার হয়নি পুলিশের অস্ত্র, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ
রিকশাচালকদের ছাতা বিতরণ করলেন মেয়র আতিক
রিকশাচালকদের ছাতা বিতরণ করলেন মেয়র আতিক
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা