X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

অনশনের ৩০ ঘণ্টা পার, দাবিতে অটল শাবি শিক্ষার্থীরা

শাবি প্রতিনিধি 
২০ জানুয়ারি ২০২২, ২২:২৪আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ২৩:০৬

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলমান অনশন কর্মসূচির ৩০ ঘণ্টা পেরিয়েছে। ইতোমধ্যে তিন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া ১০ জনের বেশি শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে অনশনস্থলে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের দেওয়া হয়েছে স্যালাইন। বাকি শিক্ষার্থীরাও অধিক মাত্রায় ক্লান্ত ও অসুস্থ হওয়ার উপক্রম।

এদিকে, চলমান পরিস্থিতিতে সমঝোতায় দফায় দফায় শিক্ষক প্রতিনিধি দল আলোচনা করতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থিত হন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত না হওয়ায় বারবারই ফিরে আসতে হয়েছে তাদের। 

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ২৪ শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন। অনশনে বসা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অবন্তিকা বৃষ্টি ও বাংলা বিভাগের মোজাম্মেল হক ওই রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা সিলেটের রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে পুনরায় অনশনে যোগ দেন। আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী কাজল দাস গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। পরে তাকে রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এ ছাড়া বিকাল থেকে একে একে অনশনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হতে থাকেন।

রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরা এসে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিতে থাকেন। ৩০ ঘণ্টা অনাহারে থাকায় ১০ জনের অধিক শিক্ষার্থীকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। তারপরও অনশন ভাঙেনি কোনও শিক্ষার্থী।

দফায় দফায় শিক্ষকরা এলেও হয়নি সুরাহা। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ৯টায় শতাধিক শিক্ষকের একটি দল অনশনস্থলে আসেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস, সেন্টার অফ এক্সিলেন্সের পরিচালক অধ্যাপক ড. মস্তাবুর রহমান, সোশ্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক দিলারা রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ শতাধিক শিক্ষক সেখানে উপস্থিত হন।

শিক্ষকরা আসা মাত্রই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষকদের কাছে তারা জানতে চান তাদের এক দফা দাবির সঙ্গে শিক্ষকরা একমত কিনা? এ সময় শিক্ষকরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘যদি আপনারা আমাদের এক দফা দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন, তাহলে আমরা কথা বলবো। তাছাড়া আপনাদের সঙ্গে কোনও কথা বলতে রাজি নই।’

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে উপস্থিত হতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত না হতে পেরে ফিরে যেতে হয়েছে শিক্ষকদের। এদিকে, সকাল সাড়ে ১১টায় প্রেস বিফ্রিং করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে। আন্দোলনকারীদের পক্ষে নাফিসা আঞ্জুম প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সেদিনের হামলা উপাচার্যের মদতেই ঘটেছে। পুলিশ হামলার করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিল। এরপর আন্দোলনকারীদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছোড়া হয়। টিয়ারশেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করা হয় শিক্ষার্থীদের, করা হয় লাঠিপেটা।’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থ হয়ে ফেরার পথে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কার নির্দেশে পুলিশ এ কাজ করলো তদন্ত করে বের করতে হবে। এ কাজটি ভিসি, ট্রেজারার, ছাত্র উপদেষ্টা ও নির্দেশনা পরিচালক বা প্রক্টর, যার নির্দেশেই ঘটুক না কেন, তাকেই দায় নিতে হবে। ভিসির নির্দেশে হয়ে থাকলে আমরা ভিসির পদত্যাগ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত পোষণ করবো।’

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসিক হলের সমস্যা নিরসনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার পরদিন রবিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। তারা প্রভোস্ট বডির পদত্যাগ ও হামলার বিচার দাবি করে। পরে বিকাল ৪টায় আইআইসিটি ভবনের সামনে উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশ উপস্থিত হয়। এ সময় ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ স্লোগানে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় লাঠিপেটার পাশাপাশি রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে পুলিশ ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে উদ্ধার করে বাংলোতে পৌঁছে দেন। 
এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) ১২টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। তবে শিক্ষার্থীরা হল না ছেড়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

/এফআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
টাইমস হায়ার এডুকেশন র‌্যাংকিং: বাংলাদেশ থেকে শীর্ষে বুয়েট, বেসরকারিতে নর্থ সাউথ
‘দেশের মানুষের ঘাড়ে জগদ্দল পাথর চেপে বসেছে, তা নামাতে হবে’
জিএসটির ‘এ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ, পাসের হার ৩৩.৯৮ শতাংশ
সর্বশেষ খবর
এডিবি কর্মকর্তা গোবিন্দ বরের বিরুদ্ধে বিশিষ্টজনদের হয়রানির অভিযোগ
এডিবি কর্মকর্তা গোবিন্দ বরের বিরুদ্ধে বিশিষ্টজনদের হয়রানির অভিযোগ
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
৭৮ দিন পর গ্রামের বাড়িতে তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া ৮ যুবকের মরদেহ
৭৮ দিন পর গ্রামের বাড়িতে তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া ৮ যুবকের মরদেহ
টিভিতে আজকের খেলা (৪ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (৪ মে, ২০২৪)
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, বগি লাইনচ্যুত
গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, বগি লাইনচ্যুত