রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) রাকিব নামে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার প্রতিবাদ করায় ছুরিকাঘাতে জখম হন তিন শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজউদ্দিন আহমেদ অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বুধবার (২৭ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী ও ছুরিকাঘাতে আহত তিন শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত একটি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়া ছুরিকাঘাতে জখম হওয়া তিন শিক্ষার্থী হলেন- মো. নাইম, শুভ ঘোষ ও নয়ন আলী। অভিযুক্ত রাকিব আল হাসান ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী জানান, একই জেলায় বাড়ি হওয়ায় আগে থেকেই রাকিবের সঙ্গে তার পরিচয় ছিল। রাকিব তাকে প্রায় সময় বিরক্ত করতো। গত মঙ্গলবার রাত সোয়া দশটার দিকে এক বান্ধবীসহ ওই ছাত্রী হলে যাওয়ার পথে মমতাজউদ্দিন কলা ভবনের সামনে রাকিবের সঙ্গে দেখা হয়। এ সময় রাকিব তাকে থামিয়ে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু ছাত্রী চলে আসার সময় রাকিব পেছন থেকে তাকে টেনে ধরলে ওই ছাত্রীর জামা ছিঁড়ে যায়। পরে তাকে চড়-থাপ্পড় মারে রাকিব। এ সময় রাকিবের সঙ্গে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিল।
তবে ওই ছাত্রীর পরিচিতরা বলছেন, রাকিবের সঙ্গে ভুক্তভোগী ছাত্রীর দেড় বছরের সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যে রাকিব অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। বিষয়টি জানতে পেরে ওই ছাত্রী রাকিবের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়েই কথা বলতেই ওই ছাত্রীকে দাঁড় করিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন রাকিব। এই সময় ওই ছাত্রী চলে যেতে চাইলে থাপ্পড় মারেন রাকিব। বিষয়টি ভুক্তভোগী ছাত্রী তার বন্ধুদের জানান। তারা বিভাগের কয়েকজন জুনিয়রসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এ সময় ছাত্র-উপদেষ্টা ও মতিহার থানা পুলিশের ওসি সেখানে উপস্থিত হন। পরে রাকিব ও তার বন্ধুদের সঙ্গে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বন্ধুদের হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে অভিযুক্তরা ওই ছাত্রীর বন্ধু নাইম, শুভ ও নয়নকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় ঘটনাস্থলে রাকিব ও তার বন্ধুদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা তারেক নূরও লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাকিবের শাস্তি চেয়ে আহতরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রাকিবের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এছাড়া আমি গতকালের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম। কিন্তু এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করবো না। তবে ওই ছেলের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শুনেছি ছাত্র-উপদেষ্টার কাছে অভিযোগপত্র এসেছে। আমি ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত ব্যস্ততার কারণে এখনও হাতে পাইনি। হয়তো আগামীকাল হাতে আসবে। তখন আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবো।