বিনম্র শ্রদ্ধা ও যথাযোগ্য মর্যাদায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের পর পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্যে দিয়ে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হয়। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে হতে শোকর্যালি বের হয়। র্যালিটি লিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।
পরে একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভুঁঞা।
জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির আয়োজনে ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সাদ উদ্দিন মাহফুজের সঞ্চালনায় র্যালি পরবর্তী শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২৩ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের দিনটি সব সময় আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করে। আপনারা জানেন যে পাকিস্তান আমলে যখনই পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানকে শোষণ করতো তখনই এ দেশের বুদ্ধিজীবীরা প্রতিবাদ করতো। এসব কারণে কিন্তু ২৫ মার্চ কালরাত থেকেই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা শুরু করে পাকিস্তানিরা এবং পুরো মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তাদের ধরে ধরে হত্যা করেছে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের পরও তাদের ধরে ধরে হত্যা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কোনও একটি জাতিকে দাবিয়ে রাখতে হলে সে জাতিকে মেধাশূন্য করা প্রয়োজন। সে কারণেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি খান তার পরিকল্পনায় আমাদের দেশের দোসর আল বদর, আল শামস, রাজাকারদের সহায়তায় বুদ্ধিজীবীদের চিহ্নিত করে হত্যা করেছে। দীর্ঘ ৫২ বছরেও এই বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের এখনও বিচার করা সম্ভব হয়নি। নানান জটিলতার পরও আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরে এ বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো যে সকল রাষ্ট্রগুলো মানবতার কথা বলে তারা এই হত্যাকারীদের তাদের দেশে আশ্রয় দিচ্ছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, যারা একাত্তর এবং পঁচাত্তরে দেশের মানুষ এবং মানবতার বিরুদ্ধে কাজ করেছে তাদের যেন বিচারের আওতায় আনেন।’
উপাচার্যের বক্তব্য শেষে একে একে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটি, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতর, প্রক্টরিয়াল বডি, শিক্ষক সমিতি, ডিন কাউন্সিল, প্রভোস্ট কাউন্সিল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ, সাদা দল, অফিসার পরিষদ, গণতান্ত্রিক অফিসার পরিষদ, কর্মচারী পরিষদ, আবাসিক হলসমূহ, কৃষ্ণচূড়া সাংস্কৃতিক সংঘ, ফটোগ্রাফিক সোসাইটিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাদ জোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ, দোয়া মাহফিল ও মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রদীপ প্রজ্বলন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।