নেতাদের দিয়ে হল প্রশাসন চলে বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা। রবিবার (১১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংলগ্ন সড়কে সম্প্রতি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এই মন্তব্য করেন তিনি।
এই শিক্ষক বলেন, ছাত্রদের মাদক ব্যবসার পেছনে প্রশাসন দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। সবাইকে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।
মানববন্ধনে ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তারের সঞ্চালনায় অন্য শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ৯৮ এর আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমস্ত অনিয়মকে দূর করা হয়েছিল। পবিত্র এ জায়গায় আবার কেন এই অনৈতিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে, এর জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করতে হবে। হলগুলোতে অবাধে অছাত্ররা থাকছে। অবশ্যই হলগুলোতে একটি ডাটাবেজ তৈরি করা দরকার। কে কোন রুমে থাকে তার তথ্য হল প্রশাসনের কাছে থাকা প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পাঁচ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল আজ তার শেষ দিন। উপাচার্যকে বলছি, যদি প্রশাসনে থাকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তাহলে আপনাকে স্যালুট করবো। আর না পারলে এর দায়ভার আপনাকেই নিতে হবে।
দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, র্যাব বলেছে, জাবি প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেছেন, জাবি প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছেন। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে জাবি উপাচার্য এবং প্রশাসনের দায়িত্ব কী শুধু বাসভবনে থাকা? আর উপাচার্য ভবনে উপাচার্য পদ উপভোগ করা নাকি? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান জড়িত এখানে। যদি আপনি জাহাঙ্গীরনগরের অভিভাবক ও উপাচার্য হিসেবে মনে করেন আপনি ব্যর্থ হয়েছে তাহলে এটা স্বীকার করতে সমস্যা কোথায়?
গণিত বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ঠিক ২৫ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের একই ঘটনা ঘটেছে এবং একই ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। নতুন করে ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মাদক। অসংখ্য শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঝরে গেছে মাদকের ভয়াল থাবায়। আবাসিক হলগুলোতে অবৈধ ছাত্ররা অবাধে থাকছে, চাঁদাবাজি হচ্ছে, মাদকের প্রসার হচ্ছে। উপাচার্য এগুলো জেনেও যদি না জানার ভান করেন তাহলে তিনি পদে থাকার অযোগ্য।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন- অধ্যাপক মো. শামছুল আলম, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক আমির হোসেন ভূঁইয়া, অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।