X
মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
৩১ বৈশাখ ১৪৩১

থেমে আছে হকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া

ওমর ফারুক
২৬ নভেম্বর ২০১৬, ০৭:৪৬আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০১৬, ১৪:৪০

হকারদের দখলে গুলিস্তানের ফুটপাত বেশ কয়েক দিন তুমুল আলোচনা হলেও ঝিমিয়ে পড়েছে গুলিস্তানের হকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। সিটি করপোরেশনে বিষয়টি আর জোরেসোরে আলোচনা হচ্ছে না। এমনকি হকারদের পরিচয়পত্র দিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধ করার পরিকল্পনাও থেমে আছে। তালিকা করে বসে আছেন কর্মকর্তারা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) জানিয়েছে, গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ গেইট, স্টেডিয়াম গেইট, জিপিও, পুরানা পল্টন মোড়, ফুলবাড়িয়া ও গোলাপশাহ মাজার এলাকায় জরিপ চালিয়ে সম্প্রতি ২ হাজার ৫০২ জন হকারের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছে হকারদের নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ব্যবসার ধরণ ও স্থান ইত্যাদি। এ তথ্য নিয়ে ডাটাবেইজ তৈরি করা হয়েছে।

জানা গেছে, কয়েক মাস আগে হকারদের পরিচয়পত্র দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। বলা হয়েছিল, হকারদের পরিচয়পত্র দিলে চাঁদাবাজি বন্ধ হবে এবং পর্যায়ক্রমে তালিকাভুক্ত হকারদের সুবিধাজনক স্থানে পুনর্বাসন করা হবে। পরে এই পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়। এরপর গত ২৯ অক্টোবর ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন গুলিস্তান পার্কে হকারদের পুনর্বাসনের ঘোষণা দেন।

জানা গেছে, পার্কে পুনর্বাসনের ঘোষণা দেওয়ায় নাগরিক সমাজ থেকে আপত্তি ওঠে। এরপর হকার পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় ভাটা পড়ে যায়। এখন ডিএসসিসির কেউ হকার পুনর্বাসন নিয়ে কথা বলতে চান না। এমনকি এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি হকার উচ্ছেদ কার্যক্রমের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা (প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা) মো. খালিদ আহমেদও। বুধবার তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা আপাতত কিছু করছি না।’

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ডিএসসিসির তৎপরতা না থাকায় গুলিস্তান ও আশপাশের সড়কগুলো হকারদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রধান সড়ক ও ফুটপাত হকারদের নিয়ন্ত্রণে। এসব সড়ক দিয়ে যানবাহন চলে হকার সরিয়ে। এ কারণে গুলিস্তানে সারাক্ষণ যানজট লেগে থাকে। দুই ডজন ট্রাফিক পুলিশ সেখানে দায়িত্ব পালন করলেও যানজট আর দূর হচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মতো গুলিস্তানেও হকার বসিয়ে চাঁদাবাজি হচ্ছে। তবে অন্য এলাকার চাইতে গুলিস্তানে চাঁদার পরিমাণ বেশি। গুলিস্তান-পল্টন এলাকার হকারদের প্রত্যেকের কাছ থেকে দৈনিক গড়ে ২০০ টাকা করে তোলা হয় বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। চাঁদার এ টাকা প্রভাবশালীদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়।

প্রসঙ্গত, অরাজক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ২৭ অক্টোবর গুলিস্তান এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ডিএসসিসি। সেদিন বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয় হকারদের মালামাল। ডিএসসিসির কঠোর মনোভাবের কারণে এদিন মৃদু প্রতিবাদ জানিয়ে সটকে পড়েন হকাররা। কিন্তু অভিযান শেষ হওয়ার পরপরই হকাররা স্বস্থানে ফিরে আসেন। এরপর থেকে সিটি করপোরেশনের তৎপরতা দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি এম এ কাশেম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লাইনম্যান নামধারী চাঁদাবাজদের কারণে ঢাকার হকার পুনর্বাসন হচ্ছে না। কারণ, হকাররা পুনর্বাসিত হলে লাইনম্যানদের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যাবে। শুধু গুলিস্তানেরই না, রাজধানীর অন্তত ২০টি স্পটের হকারদের তালিকা করে পুনর্বাসন করতে হবে। হকারদের কোথায় পুনর্বাসন করা হবে, তা সিটি করপোরেশনই ভালো জানে।’ 

/ওএফ/টিএন/এফএস/ এপিএইচ/ আপ-এমডিপি/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইউনিয়ন ব্যাংক ও মেডর‌্যাবিটস হেলথকেয়ারের চুক্তি স্বাক্ষর
ইউনিয়ন ব্যাংক ও মেডর‌্যাবিটস হেলথকেয়ারের চুক্তি স্বাক্ষর
নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি নেতাকে শোকজ
নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি নেতাকে শোকজ
শিক্ষার্থীকে মারধর করে শিক্ষক বললেন, ‘শাসন করেছি’
শিক্ষার্থীকে মারধর করে শিক্ষক বললেন, ‘শাসন করেছি’
বিমানবন্দর ও টঙ্গী থেকে ৭ ছিনতাইকারী গ্রেফতার
বিমানবন্দর ও টঙ্গী থেকে ৭ ছিনতাইকারী গ্রেফতার
সর্বাধিক পঠিত
ফুটপাত থেকে দোকান ছড়িয়েছে প্রধান সড়কে, আসছে নতুন পরিকল্পনা 
ফুটপাত থেকে দোকান ছড়িয়েছে প্রধান সড়কে, আসছে নতুন পরিকল্পনা 
আমরা সুন্দর একটি সম্পর্ক মেন্টেইন করি: জয়া আহসান
বাংলা ট্রিবিউনের দশম বর্ষপূর্তিআমরা সুন্দর একটি সম্পর্ক মেন্টেইন করি: জয়া আহসান
ইয়াহিয়া সিনওয়ার: যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটিয়েছেন, শেষও কি তার হাতে?
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনইয়াহিয়া সিনওয়ার: যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটিয়েছেন, শেষও কি তার হাতে?
জাতীয় দলে খেলতে গেলে সাপোর্ট লাগে: ইমরুল  
জাতীয় দলে খেলতে গেলে সাপোর্ট লাগে: ইমরুল  
যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে
যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে