X
রবিবার, ১১ মে ২০২৫
২৮ বৈশাখ ১৪৩২

শরীয়তপুরের দুই রাজাকারের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৫ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:৩২আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:৩৪

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

শরীয়তপুরের ইদ্রিস আলী সরদার ওরফে গাজী ইদ্রিসের রাজাকারের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় হবে আজ সোমবার। এ মামলার দুই আসামির মধ্যে সোলায়মান মোল্লা ওরফে সোলেমান মৌলভী গ্রেফতারের পর অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আর ইদ্রিস আলী পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ রয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে বলা হয়েছে, সোলায়মান মোল্লা ১৯৭১ সালে পাকিস্তান দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করতে শান্তি কমিটি এবং সশস্ত্র রাজাকার বাহিনী গঠন করেন। এরপর স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় শরীয়তপুরে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন।

সোলায়মান মোল্লা ১৯৬৩ সালের পর মুসলিম লীগের নেতা হিসেবে শরীয়তপুর জেলার পালং থানার সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ইদ্রিস আলী ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। তিনি ১৯৬৯ সালে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র সংঘের নেতা ছিলেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ইদ্রিস ইসলামি ছাত্রসংঘের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

একাত্তরের ২২-২৫ মে পর্যন্ত তাদের নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে শরীয়তপুর সদর উপজেলার তখনকার পালং থানার আংগারিয়া, কাশাভোগ, মানোহর বাজার, মধ্যপাড়া, ধানুকা, রুদ্রকরসহ হিন্দু প্রধান এলাকাগুলোতে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালায় রাজাকাররা।

প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২২মে আসামিরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ১০০ থেকে দেড়শ সদস্যসহ পালং থানা এলাকায় কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কৃষক আব্দুস সামাদসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ২০০ মানুষকে গুলি করে হত্যা ও বাড়ির মালামাল লুট করেন।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, ২৬ মে পালং থানার মালোপাড়া ও রুদ্রকর গ্রামে হামলা চালিয়ে মঠের পুরোহিতকে গুলে করে হত্যা এবং গ্রামগুলো থেকে মালামাল লুট ও আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে আসামিরা। মালোপাড়া থেকে ৩০/৪৫ জন নারী ও পুরুষকে ধরে মাদারীপুর পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে নিয়ে তিনদিন আটকে রেখে নারীদের ধর্ষণ করে। আর পুরুষদের গুলি করে হত্যা করে।
তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৬ জুন একই থানার শৈলেন্দ্র কৃষ্ণ পালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুজনকে হত্যা করে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের নির্যাতন করে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে আসামিরা।
চতুর্থ অভিযোগ অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিরা দখলদার বাহিনীর সহায়তায় এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ করেন। এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভয়-ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে পালং থানার এক থেকে দেড় হাজার মানুষকে দেশত্যাগ করে ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য করেন।

প্রসিকিউটর ঋষিকেশ সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা যাবতীয় সাক্ষ্য প্রমাণ হাজির করেছি। আশা করছি, আমরা সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করতে পারবো।’

/ইউআই/এসটি/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেফতার
ছাত্রলীগের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেফতার
ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা, দাফনের পর অভিযুক্ত তিন জনের বাড়িতে আগুন
ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা, দাফনের পর অভিযুক্ত তিন জনের বাড়িতে আগুন
খুলনায় মহিলা আ.লীগ নেত্রী গ্রেফতার
খুলনায় মহিলা আ.লীগ নেত্রী গ্রেফতার
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় এবি পার্টির অভিনন্দন
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় এবি পার্টির অভিনন্দন
সর্বাধিক পঠিত
আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি না: কাদের সিদ্দিকী
আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি না: কাদের সিদ্দিকী
ব্যাংকে টাকা আসছে নাকি বের হয়ে যাচ্ছে
ব্যাংকে টাকা আসছে নাকি বের হয়ে যাচ্ছে
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ
বেসরকারি ব্যাংক সরকারি মালিকানায় নেওয়া যাবে, অধ্যাদেশ জারি
বেসরকারি ব্যাংক সরকারি মালিকানায় নেওয়া যাবে, অধ্যাদেশ জারি