X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘে মিয়ানমার রেজ্যুলেশন: সার্ক ও আসিয়ানে বিভক্তির লক্ষণ

শেখ শাহরিয়ার জামান
১৭ নভেম্বর ২০১৭, ০২:৫০আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ০২:৫০

সার্ক ও আসিয়ানের লোগো নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের থার্ড কমিটিতে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ভোটাভুটিতে ১৩৫টি দেশ রেজ্যুলেশনের পক্ষে ভোট দেয়, ১০টি বিপক্ষে এবং ২৬টি দেশ কোনও অবস্থান নেয়নি। এই ভোটে দক্ষিণ এশিয়ার সংগঠন সার্কের (বাংলাদেশ সদস্য) আটটি দেশের মধ্যে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংগঠন আসিয়ানের (মিয়ানমার সদস্য) ১০টি দেশের মধ্যে বিভাজন সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

সার্কের আটটি দেশের মধ্যে  বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও পাকিস্তান রোহিঙ্গা ইস্যুতে আনীত এই রেজ্যুলেশনের পক্ষে ভোট দেয় এবং ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলংকা কোনও পক্ষ নেয়নি ।

আবার আসিয়ানের মধ্যে ব্রুনেই, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া রেজ্যুলেশনের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দেয় কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনাম। আর থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর কোনও পক্ষ নেয়নি।

আসিয়ানের পাঁচটি দেশের বাইরে বিপক্ষে ভোট দিয়েছে চীন, জিম্বাবুয়ে, রাশিয়া, বেলারুশ ও সিরিয়া।

সার্কের দেশগুলোর অবস্থান

সার্কের আট দেশের মধ্যে পক্ষে ও কোনও অবস্থান না নেওয়া দেশের সংখ্যা সমান হওয়ার মধ্যে তাৎপর্য কী জানতে চাইলে সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে প্রতিবেশী একটি দেশের প্রভাবের কারণে এটি হয়েছে।

রোহিঙ্গা বিষয়টি মানবিক দিক থেকে বিবেচনা না করে কয়েকটি দেশ নিরাপত্তার প্রিজম দিয়ে এটিকে দেখার চেষ্টা করছে এবং এই কারণে তারা এ সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে সংকীর্ণ চিন্তাভাবনা থেকে তাদের জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করছে বলে তিনি মনে করেন।

আসিয়ানের মধ্যে বিভক্তি

আসিয়ানের তিনটি দেশ এই রেজ্যুলেশনের পক্ষে এবং পাঁচটি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়। ভোটের ফল বিভক্তির লক্ষণ কিনা জানতে চাইলে সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, আসিয়ানের পক্ষ থেকে কয়েকটি দেশ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিবেচনা করে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান চায়।

কয়েকদিন আগে অনুষ্ঠিত আসিয়ান সম্মেলনে বিষয়টি উত্থাপিত হয়নি কিন্তু জাতিসংঘের বৃহৎ প্ল্যাটফর্মে (থার্ড কমিটি)  এই দেশগুলো তাদের নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেছে বলে তিনি মনে করেন। আসিয়ানের সনদ অনুযায়ী সদস্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কোনো দেশ নাক গলাতে পারবে না।

বিপক্ষ দেশগুলোর অবস্থান

মিয়ানমার ৯টি দেশকে এই রেজ্যুলেশনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য রাজি করাতে পেরেছে। সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, এই ৯টি দেশের মধ্যে পাঁচটি আসিয়ানের সদস্য। এছাড়া, রাশিয়া ব্লকের বেলারুশ ও সিরিয়া বিপক্ষে ভোট দেয়। অন্য দুটি দেশ হচ্ছে চীন ও জিম্বাবুয়ে।

এর আগে ২০১৫ সালেও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আনীত একটি রেজ্যুলেশনের পক্ষে ১০৪টি দেশ ভোট দেয়, ১৩ দেশ বিপক্ষে এবং বাংলাদেশসহ ৩৭ দেশ কোনও ভোট দেয়নি।

২০১৫ সালের রেজ্যুলেশনের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল চীন, রাশিয়া, ইরান, উজবেকিস্তানসহ ১৩টি দেশ। ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ ৩৭ দেশ।

২০১৫ সালে অবশ্য বর্তমান সময়ের মতো রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে নৃশংস জাতিগত নিধন শুরু হয়নি। গত ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর জাতিগত নিধন অভিযান শুরু হলে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

আরও পড়ুন:

জাতিসংঘে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রেজ্যুলেশন গৃহীত

রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘস্থায়ী হবে

/এএম/
সম্পর্কিত
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
‘হতাশা থেকে রোহিঙ্গারা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে পারে’
অস্ত্র ও গুলিসহ ৫ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আটক
সর্বশেষ খবর
গাজা ও ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গাজা ও ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
১২ বছর পর মুম্বাইয়ের মাঠে কলকাতার জয়
১২ বছর পর মুম্বাইয়ের মাঠে কলকাতার জয়
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা