X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

বাবার কাঁধে ছেলের লাশ

সাদ্দিফ অভি
২২ মার্চ ২০১৮, ১৯:৪৯আপডেট : ২২ মার্চ ২০১৮, ১৯:৫৭

 



বুড়িমারী জিরো পয়েন্টে পিয়াস রায় (ফাইল ছবি) এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে নেপাল ঘুরতে গিয়েছিলেন গোপালগঞ্জের শেখ সাহেরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী পিয়াস রায়। গত ৫ মার্চ তার পরীক্ষা শেষ হয়। ভ্রমণ করতে খুব ভালোবাসতেন পিয়াস। এর আগেও তিনি দেশের বাইরে ঘুরতে গেছেন। নেপালের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে ১২ মার্চ সকালে ও সবশেষ বিমানে ওঠার আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফোনে পিয়াসের সঙ্গে তার মায়ের কথা হয়। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি। পরে পিয়াসের বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায় জানতে পারেন, নেপালে দুর্ঘটনা পড়া ইউএস-বাংলার বিএস ২১১ প্লেনে পিয়াস ছিলেন।

দুই ভাই-বোনের মধ্যে পিয়াস রায় ছিলেন বড়। বোন শুভ্রা রায় রাজধানীর নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

ছেলের খবর নিতে দুর্ঘটনার একদিন পর ১৪ মার্চ ঢাকায় ইউএস-বাংলার কর্পোরেট অফিসে আসেন সুখেন্দু বিকাশ রায়। সেখানে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, ইউএস-বাংলার পক্ষ থেকে যাত্রীর স্বজনদের নিয়ে যাওয়া হলেও তার পাসপোর্ট না থাকায় তিনি যেতে পারেননি। ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় দুই দিন পর পাসপোর্ট পেয়ে ছেলের লাশ শনাক্ত করতে নেপাল যান তিনি। অবশেষে বুধবার (২১ মার্চ) পিয়াসের লাশ শনাক্ত হয় বলে জানান নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস।
এরপর বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) পিয়াস রায়সহ আলিফুজ্জামান ও নজরুল ইসলামের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় ছেলের লাশ নিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৮ নং গেটে আসেন পিয়াস রায়ের বাবা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি গত পরশুদিন (মঙ্গলবার) নেপাল থেকে আসছি। গতকাল (বুধবার) লাশ শনাক্ত হয়েছে। আজ বিকাল ৪টায় এখানে থাকতে বলা হয়েছে ইউএস-বাংলার পক্ষ থেকে।’
তিনি বলেন, ‘এখান থেকে লাশ নিয়ে আগে যাবো গোপালগঞ্জ শেখ সাহেরা মেডিক্যাল কলেজে। পিয়াসের বন্ধুরা অনেক অনুরোধ করেছে সেখানে নিয়ে যেতে। সেখান থেকে বরিশাল নিয়ে যাবো। বরিশাল শহরের শ্মশানে তার শেষকৃত্য হবে।’ এ কথা বলার সময় তার চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল সুখেন্দু বিকাশ রায়ের।

বিকাল ৪টায় লাশ হস্তান্তর ফরমে সই করেন তিনি। তখনও তিনি ডুকরে কেঁদে ওঠেন। এরপর ৪টা ৩০ মিনিটে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বিমানবন্দরের ভেতরে। ৪টা ৪৯ মিনিটে অবতরণ করে লাশবহনকারী বিমান বিজি-৭২। ৫টা ৩০ মিনিটে ছেলের মরদেহ নিয়ে বেরিয়ে আসেন সুখেন্দু বিকাশ রায়। তখন বুকের এক পাশে হাত দিয়ে চেপে ধরে ছিলেন। পাশে বসা লোকটি পানির বোতল এগিয়ে দিলেন। সামান্য পরিমাণ পানি মুখ দিলেন তিনি, কিন্তু চোখ দিয়ে ঝরছিল অবিরত পানি— অশ্রু।

পিয়াসের বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায় পিরোজপুরের নলছিটি উপজেলার চন্দ্রকান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং মা পূর্ণিমা রায় বরিশাল নগরীর আলেকান্দা এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

 

/এসও/এইচআই/
সম্পর্কিত
ইউএস বাংলার সার্ভিসের মান মনিটরিং করতে বলেছে সংসদীয় কমিটি
‘তারা কীভাবে জানলো পাইলট ধূমপান করছিলেন’
নেপালে বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনের দেরিতে সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ
সর্বশেষ খবর
চালককে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রিকশা ছিনতাই করতো তারা
চালককে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রিকশা ছিনতাই করতো তারা
হলফনামায় তথ্য গোপন, ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের মনোনয়নপত্র বাতিল
হলফনামায় তথ্য গোপন, ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের মনোনয়নপত্র বাতিল
মানবপাচার: মিল্টন সমাদ্দার আবার ৪ দিনের রিমান্ডে
মানবপাচার: মিল্টন সমাদ্দার আবার ৪ দিনের রিমান্ডে
ট্রেন ছাড়ছে না সময়মতো, যাত্রীদের ভোগান্তি
ট্রেন ছাড়ছে না সময়মতো, যাত্রীদের ভোগান্তি
সর্বাধিক পঠিত
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি