নেপালে ইউএস-বাংলা বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত আলীমুন নাহার এ্যানী আজ মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) বাড়ির উদ্দেশে হাসপাতাল ছেড়েছেন। সকাল ১০টা ৩২ মিনিটে বাবা-মায়ের সঙ্গে তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বাংলা ট্রিবিউনকে একথা জানিয়েছেন। নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে এ্যানীই সর্বশেষ ব্যক্তি হিসেবে বাড়ি ফিরছেন।
সোমবার ডা. সেন বলেছিলেন, ‘এ্যানীর শারীরিক অবস্থা ভালো। মানসিক অবস্থা স্বাভাবিকভাবেই খারাপ হতে পারে। কারণ, তার স্বামী-সন্তান মারা গেছে। তবে তাকে পুনর্বাসনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’
এ্যানীর স্বামীর পরিবারে শুধু তার শাশুড়ি বেঁচে আছেন। বাবা-মায়ের দুই মেয়ের মধ্যে এ্যানী বড়। তার ছোট বোন নবম শ্রেণিতে পড়ে।
এ্যানীর মা নাজমা বেগম বলেন, ‘প্রথমে ওর শ্বশুরবাড়ি গাজীপুর যাবো। এরপর আমাদের বাড়ি ময়মনসিংহে যাবো। এ্যানীর শাশুড়িকে বলবো মেয়ে ভালো না হওয়া পর্যন্ত আমার কাছে থাকুক। আজ রাতে আমরা ওর শাশুড়ির কাছে থাকবো।’
তিনি বলেন, ‘আমার তিন ছেলেমেয়ে। সাত মাস আগে ছেলেটা মারা গেছে। মেয়ে দুইটা ভালো থাকুক, আপনারা আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন। ’
‘এ্যানী বাড়ি যাবার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছিল তাই তাকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি’—বলেন তার বাবা সালাউদ্দিন আহমেদ।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন শামীম বলেন, ‘এ্যানী হাসপাতাল ছাড়ার পর আমাদের আর কোনও রোগী ঢাকা মেডিক্যালে থাকলো না। ’
ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন বলেন, ‘এ্যানীকে আমরা ছাড়পত্র দিয়েছি। ও বাড়ি যাচ্ছে। ওকে বলে দিয়েছি কোনও অসুবিধা হলেই চলে আসবে। ’
প্রসঙ্গত, ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ৭১ আরোহী নিয়ে ইউএস-বাংলার একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ জন নিহত হন। এরমধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি। এই ঘটনায় এ্যানী তার স্বামী ফারুক আহমেদ প্রিয়ক ও কন্যা তামাররা প্রিয়ন্ময়ীকে হারায়। এ্যানী ও তার অন্য দুই সঙ্গী সৈয়দা কামরুন নাহার স্বর্ণা ও মেহেদী হাসানকে ১৬ মার্চ নেপাল থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। গত ২৮ মার্চ বাড়ি ফেরেন স্বর্ণা ও মেহেদী।