X
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫
২০ বৈশাখ ১৪৩২

আমরা ক্ষুদ্র হতে পারি, কিন্তু অনুভূতিহীন নই: বঙ্গবন্ধু

উদিসা ইসলাম
১৪ মে ২০২০, ০৮:০০আপডেট : ১৪ মে ২০২০, ০৮:০০

ফিরে দেখা ১৯৭২

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ওই বছরের ১৩ মের ঘটনা।)

বৃহৎ শক্তি হিসেবে পরিচিত দেশগুলো অভ্যন্তরীণ কোনও ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে আসবে না বলে আশা প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা ক্ষুদ্র হতে পারি, কিন্তু অনুভূতিহীন নই। গর্ব করার মতো আমাদের সবকিছুই আছে।’

১৯৭২ সালের ১৩ মে শনিবার আমেরিকান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (এবিসি) প্রতিনিধি পিটার জেনিংস ও মি. লুইয়ের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সাক্ষাৎকারটি ওই বছর ১৪ মে দৈনিক বাংলা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

ঢাকায় মোহনবাগানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু, দৈনিক বাংলা ১৯৭২ যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও  চীনের মতো বৃহৎ শক্তি বাংলাদেশের প্রতি কোনও ভূমিকা গ্রহণ করবে বলে আপনি মনে করেন কিনা, এবিসি প্রতিনিধির এই প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘তারা সবাই সুখে থাকুক, আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। আমি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী। আমি অত বড় বড় কথা জানি না। এশিয়া নিয়ে কেউ আর খেলা না করুক—এটাই শুধু আমি চাই। আমি এই উপমহাদেশকে একটি শান্তির এলাকা বলে ঘোষণা করতে চাই। কেননা, আমরা আমাদের জনগণকে উন্নত করতে চাই, আমরা খাদ্য চাই, আশ্রয় চাই ও বাসস্থান চাই।’

বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমরা কোনও বৃহৎ ব্লকে যাবো না। কোনও বৃহৎ শক্তি বা জোটে যোগ দিতে পারবো বলেও মনে করি না। আমরা কারও সঙ্গে জোট বাঁধতে চাই না। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। আমরা আশা করি আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কেউ হস্তক্ষেপ করতে আসবে না। আমরা ক্ষুদ্র হতে পারি, কিন্তু অনুভূতিহীন নই। গর্ব করার মতো আমাদের সবকিছুই আছে। আমরা সংগ্রাম করেছি, ত্যাগ স্বীকার করেছি, স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছি। কেউ আমার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করলে, কিংবা করতে চাইলে আমরা তা প্রতিহত করবো, এটাই আমার নীতি।’

আমরা ক্ষুদ্র হতে পারি, কিন্তু অনুভূতিহীন নই: বঙ্গবন্ধু

সবার কল্যাণের জন্য এই উপমহাদেশে কি আপনারা কোনও জোট বাঁধতে চান—এমন প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু আবারও বলেন, ‘জোটের কোনও প্রশ্নই নেই। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। অন্যের ব্যাপারে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই্।’

১৯৭২ সালের ১৩ মে ছিল শনিবার। সেদিন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনী চ্যারিটি খেলায় ভারতের শ্রেষ্ঠতম দল মোহনবাগান ক্লাবকে বাংলাদেশ ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে সালাহউদ্দিনের শেষ মুহূর্তের গোলে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাহায্যার্থে অনুষ্ঠিত এই দ্বিতীয় প্রদর্শনী চ্যারিটি ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্য অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপস্থিত থেকে খেলার জৌলুস বাড়ান এবং তার উপস্থিতি স্থানীয় দলকে বিরাটভাবে অনুপ্রাণিত করে।

আমরা ক্ষুদ্র হতে পারি, কিন্তু অনুভূতিহীন নই: বঙ্গবন্ধু

এদিকে সম্প্রতি শেষ হওয়া বঙ্গবন্ধুর উত্তরবঙ্গ সফর তখনও আলোচনায় ছিল। তিন দিন আগে ঢাকায় ফিরলেও এদিনের (১৪ মে) পত্রিকাতেও ছিল সফরের বিষয়ে বিশ্লেষণ। এ সফরকালে আওয়ামী লীগ ছাড়াও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করেছেন বঙ্গবন্ধু। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বিপ্লবী রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত করার ওপরে বঙ্গবন্ধু গুরুত্ব আরোপ করেন।

এদিকে, টঙ্গী আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। শ্রমিকদের দাবি পূরণ না হওয়ার আশঙ্কায় আবারও বিবদমান দুটি বড় শ্রমিক দল পরস্পরের মুখোমুখি হয়। বাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি  কাজী জাফর আহমেদ গণভবনে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বের হয়ে এসে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আলোচনার জন্য বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন।’ এদিকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে দেওয়া ভারতীয় অর্থনৈতিক সাহায্যের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন বলে বাসসের খবরে প্রকাশ করা হয়। একজন ভারতীয় সাংবাদিকের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু আরও বলেন, ‘সম্প্রতি স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তি দুই দেশের জন্য প্রয়োজনীয় ও কল্যাণকর হবে।’

/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
মুজিব বর্ষ উদযাপনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের খরচ ১২৬১ কোটি
ভূমিহীনমুক্ত হচ্ছে সাতক্ষীরার ৬ উপজেলা, প্রস্তুত ৩৬৪টি ঘর
‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে’
সর্বশেষ খবর
‘কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যম স্বাধীন হবে না’
মুক্ত গণমাধ্যম দিবস‘কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যম স্বাধীন হবে না’
মারধরের পর পল্লিচিকিৎসককে তুলে নিয়ে গেলো প্রতিপক্ষ, ভিডিও ভাইরাল
মারধরের পর পল্লিচিকিৎসককে তুলে নিয়ে গেলো প্রতিপক্ষ, ভিডিও ভাইরাল
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক শিক্ষার্থীর হামলায় শিক্ষক আহত, বিক্ষোভ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক শিক্ষার্থীর হামলায় শিক্ষক আহত, বিক্ষোভ
ভারতের গোয়ায় মন্দিরে পদদলিত হয়ে  নিহত ৬
ভারতের গোয়ায় মন্দিরে পদদলিত হয়ে নিহত ৬
সর্বাধিক পঠিত
কেন আবারও আন্দোলনে যাচ্ছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা?
কেন আবারও আন্দোলনে যাচ্ছেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা?
সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতার ওপর দিনে সশস্ত্র হামলা, রাতে বাড়িতে আগুন
সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতার ওপর দিনে সশস্ত্র হামলা, রাতে বাড়িতে আগুন
আগে রওনা দিয়েও এড়ানো গেলো না ‘নোটাম’, শাহজালালের ফ্লাইট গেলো ওসমানীতে
আগে রওনা দিয়েও এড়ানো গেলো না ‘নোটাম’, শাহজালালের ফ্লাইট গেলো ওসমানীতে
‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রতি ঘৃণা উসকে দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’
‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রতি ঘৃণা উসকে দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন’
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্ট যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার’
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্ট যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার’