X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১
সংসদে প্রধানমন্ত্রী

করোনার বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে পেরেছে বাংলাদেশ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২০ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:৩৩আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২১, ১৫:৫০

করোনা পরিস্থিতিতে অন্য অনেক দেশে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলেও বাংলাদেশ তা অনেকটাই এড়াতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের জীবন ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকার বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ায় দেশে করোনাভাইরাসসহ অর্থনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়েছে।’

বুধবার (২০ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান এবং সরকারি দলের কাজিম উদ্দীনের পৃথক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের রওশন আরা মান্নানের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ব্রিটেনের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিচার্স-এর ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবল ২০২১ অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন যে ধরনের অর্থনৈতিক বিকাশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি। এই রিপোর্টে মূলত সামনের বছর এবং আগামী ১৫ বছরে বিশ্বের কোন দেশের অর্থনীতি কী হারে বাড়বে তারই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে অন্য অনেক দেশে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলেও বাংলাদেশ তা অনেকটাই এড়াতে পেরেছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে। ২০১৯ সালে প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।’

সংসদ নেতা জানান, ‘খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ দশম। বাংলাদেশ আজ চালে উদ্বৃত্ত দেশ। চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়। বাংলাদেশ সবজি উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, আলু উৎপাদনে সপ্তম, আম উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, চাষের মাছ উৎপাদনে পঞ্চম, ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ।’

তিন কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, শিগগিরই করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে।

আট লাখ ৮৫ হাজার ভূমিহীনকে ঘর দেওয়া হবে

সংরক্ষিত নারী আসনের সুলতানা নাদিরার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত ও নদীভাঙন কবলিত ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। ১৯৯৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট তিন লাখ ৮৫ হাজার ৪৭৩টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না এ লক্ষ্য সামনে রেখে মুজিববর্ষ উপলক্ষে দুই শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে একক গৃহনির্মাণের মাধ্যমে দেশব্যাপী প্রথম পর্যায়ে ৬৬ হাজার ভূমিহীন, গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহনির্মাণ করে দেওয়ার কার্যক্রম চলছে। পর্যায়ক্রমে আট লাখ ৮৫ হাজার ৫২২টি পরিবারকে গৃহনির্মাণ ও ব্যারাকের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হবে।

আন্তর্জাতিক মানের প্রতিবন্ধী ক্রীড়া কমপ্লেক্স

সরকারি দলের সংসদ সদস্য আছলাম হোসেন সওদাগরের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিবন্ধী ক্রীড়া কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য সাভারের বারইগ্রাম ও দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর মৌজার ১২ দশমিক শূন্য এক একর জমি দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। এখানে প্রতিবন্ধী ক্রীড়াবিদদের জন্য স্টেডিয়ামসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ আন্তর্জাতিক মানের প্রতিবন্ধী ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ৪৯৯ কোটি ৯৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে ডিপিপি অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আটকে পড়া ও চাকরিচ্যুত প্রবাসীদের জন্য উদ্যোগ

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারীর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনাকালে বাংলাদেশে এসে আটকে পড়া ও চাকরিচ্যুত প্রবাসীদের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে শ্রমিক পাঠানোর লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। প্রবাসী অধ্যুষিত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অনুরোধ জানিয়ে কোভিডকালে চাকরিচ্যুত প্রবাসীদের সার্বিক কল্যাণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ফোনে যোগাযোগসহ চিঠি পাঠানো হয়। এতে তিনটি বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হয়। চাকরিচ্যুত প্রবাসী কর্মীদের ন্যূনতম খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, চাকরিচ্যুতদের যাবতীয় দেনা-পাওনা পরিশোধসহ ছয় মাসের বেতন ভাতা দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো এবং বিদেশে কর্মসংস্থান ও ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য ওই দেশগুলোতে কোভিড-১৯ রিকভারি অ্যান্ড রেসপন্ড ফান্ড গঠনের সুপারিশ করা হয়।

আহসানুল হকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নজিরবিহীন বিরূপ প্রভাব ফেলেছে, যা থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। তবে শুরু থেকেই আমাদের সরকার সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। যার ফলে এ পর্যন্ত কোভিড আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা, মৃত্যুর হার এবং অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ তুলনামূলক অধিকতর সাফল্য দেখাতে পেরেছে।

জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে সরকার প্রধান বলেন, ডেল্টা প্লানের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৮০টি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর জন্য মোট খরচ হবে দুই হাজার ৯৭৮ বিলিয়ন টাকা। ডেল্টা ফান্ডের কাঠামো ও ফান্ড পরিচালনার নীতিমালা প্রণয়নের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

/ইএইচএস/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেসি অনভিজ্ঞ বলেই আপত্তি ছিল মোহামেডান-প্রাইম ব্যাংকের
জেসি অনভিজ্ঞ বলেই আপত্তি ছিল মোহামেডান-প্রাইম ব্যাংকের
যাত্রাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
যাত্রাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
শেখ জামালের জন্মদিন আজ
শেখ জামালের জন্মদিন আজ
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস আজ
জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস আজ
সর্বাধিক পঠিত
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু