X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
১৯ আষাঢ় ১৪৩২

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৩ জানুয়ারি ২০২১, ১৫:১০আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ১৫:১০

মুজিববর্ষ উপলক্ষে সারাদেশের ৬৬ হাজার ১৮৯টি পরিবার বাড়ি পেয়েছেন। এ অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটা মানুষ যাতে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, তাদের জীবন যেন উন্নত হয়, বিশ্ব দরবারে আমরা বাঙালি হিসেবে মাথা উঁচু করে সম্মানের সঙ্গে চলতে পারি। এদেশটাকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ যেন সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে সেটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে কোনও মানুষ গৃহহারা থাকবে না। মুজিববর্ষে অনেক কর্মসূচি করতে পারি নাই। গৃহহীন ভূমিহীন মানুষকে ঘর দিতে পারলাম এর থেকে বড় উৎসব বাংলাদেশে হতে পারে না।’

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। দেশের ৪৯২টি উপজেলা স্বতন্ত্র অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন,  ‘আজকে সত্যি আমার জন্য একটা আনন্দের দিন। কারণ এদেশে যারা সব থেকে বঞ্চিত মানুষ, যাদের কোনও ঠিকানা ছিল না, ঘরবাড়ি ছিল না আজকে তাদেরকে অন্তত একটা ঠিকানা, মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে পারছি। এজন্যই আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। কখনও নিজের জন্য নিজে কী পেলেন, না পেলেন সেটা নিয়ে চিন্তা করেননি। এদেশের মানুষের কথাই চিন্তা করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের ঘর করে দেওয়ার চিন্তাটা বঙ্গবন্ধুই প্রথম করেছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে আমাদের পুরো পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।  আমাকে ছয় বছর কাটাতে হয় বাইরে। শুধু মানুষের কথা ভেবে মানুষের শক্তি নিয়েই দেশে ফিরি। আমার কেউ ছিল না আমার কোনও থাকার ঘরও নাই। আমি কোথায় গিয়ে উঠবো তাও আমি জানি না। আমি কীভাবে চলব তাও জানি না। কিন্তু আমার কেবলই একটা কথা মনে হচ্ছিল যে আমাকে যেতে হবে। যেতে হবে এই কারণে যে সামরিক শাসক দিয়ে নিষ্পেষিত হচ্ছে আমার দেশের মানুষ তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে। তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। তাদের জন্য কাজ করতে হবে। সেই আদর্শ সামনে নিয়েই আমি ফিরে আসি। আমি কখনও আমার ছোট ফুপুর বাড়ি, কখনও মেজ ফুপুর বাড়ি এরকমভাবে দিন কাটাই। কিন্তু আমার লক্ষ্য একটাই সামনে ছিল যে আমি কী পেলাম, না পেলাম সেটা বড় কথা নয়। দেশের মানুষের জন্য কতটুক কী করবো। সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরে মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকে গাল ভরে কথা বলে গণতান্ত্রিক অধিকার পেয়েছে, গণতান্ত্রিক অধিকারটা কি? একটা সামরিক শাসকের ক্ষমতা দখল করে একদিন ঘোষণা দিল যে আজকে আমি রাষ্ট্রপতি হলাম, আর তারপরেও সেটা গণতন্ত্র হয়ে গেল? হ্যাঁ অনেকগুলি রাজনৈতিক দল করার সুযোগ করে দিল কিন্তু মানুষকে দুর্নীতি করা মানিলন্ডারিং করা, ব্যাংকে ঋণ খেলাপি করা টাকা ব্যাংক থেকে ছাপিয়ে নিয়ে এসে সেগুলো ছড়িয়ে দিয়ে মানি ইজ নো প্রবলেম সেই কথা শোনানো। আই উইল মেক ডিফিকাল্ট ফর দ্য পলিটিশিয়ান একথাও জিয়াউর রহমান বলে গেছে। জিয়াউর রহমানের কাজেই ছিল এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলা, এদেশের মানুষকে দরিদ্রকে দরিদ্রই রাখা, আর মুষ্টিমেয় লোককে টাকা পয়সা দিয়ে একটু অর্থশালী সম্পদশালী করে দিয়ে তাদেরকে তার ক্ষমতার ক্ষমতাকে যেন চিরস্থায়ীভাবে ব্যবহার করতে পারে তার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা। মেধাবী ছেলে-মেয়েদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে তাদের বিপথে ঠেলে দেওয়া, নির্বাচনের নামে প্রহশন সৃষ্টি করা হ্যাঁ না ভোটে ১১০ ভাগ পড়ে তখন। এরপরে সেনাপ্রধান হয়ে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রপতি থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সেখানেও কেউ ভোট পেলো না। তারপর দিল সংসদ নির্বাচন সেটাও আর এক প্রহশন। যারা গণতন্ত্রের জন্য এতো কথা বলেন তাদের কাছে এটাই প্রশ্ন। এটা কি করে গণতন্ত্র?’

শেখ হাসিনা বলেন, আমার সরকার গঠন করার উদ্দেশ্যই ছিল এদেশের খেটে খাওয়া মানুষ, গরিব মানুষ গ্রামের একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরে থাকা মানুষ তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করা এবং বাংলাদেশকে দারিদ্র মুক্ত করা। আশ্রয়ণ প্রকল্প নিলাম। ঘর দিলে ব্যারাক করে দিয়ে প্রত্যেকরে একটা ঘরের মালিক করে দেওয়া। একেবারে নিঃস্ব যারা ভূমিহীন যারা তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর দেওয়ার প্রকল্প করে দিলাম। বস্তিবাসীদের জন্য ঘরে ফেরা কর্মসূচি নিলাম। আমরা গৃহায়ন তহবিল করলাম। বেদে শ্রেণির মানুষের জন্য ঘর করে দিচ্ছি, তাদের বাসস্থনের ব্যবস্থা করেছি হিজড়াদের স্বীকৃতি দিয়েছি। তাদেরকেও পুনঃবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যারা দলিত শ্রেণি বা হরিজন শ্রেণি এই ঢাকা সুইপার কলনিতে থাকত তাদের জন্য ভালো উচ্চ মানের ফ্ল্যাট তৈরি করে দিচ্ছি। চা শ্রমিকদের জন্য ঘর করে দিচ্ছি। 

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক শ্রেণির মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি যেন সাবই মানসম্মতভাবে বাঁচতে পারে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। মুজিববর্ষে আমাদের লক্ষ্য একটি মানুষও ঠিকানাবিহীন থাকবে না। গৃহহারা থাকবে না। হয়তো সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে, তাই সীমিত আকারে করে দিচ্ছি। যা হোক একটা ঠিকানা আমি সব মানুষের জন্য করে দেবো। আমার বাবা মা যারা সারাটা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছে দেশের জন্য তাদের আত্মা শান্তি পাবে। লাখো শহীদের রক্ত দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে তাদের আত্মা শান্তি পাবে।

 

/এমএইচবি/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
পাবনায় দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার
পাবনায় দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার
জাপার অফিস ভাঙচুর: নুরসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা নিতে বললেন আদালত
জাপার অফিস ভাঙচুর: নুরসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা নিতে বললেন আদালত
স্ত্রীর দেওয়া কিডনিতে জীবন পেয়ে অন্য নারীর প্রেমে পড়লেন স্বামী
স্ত্রীর দেওয়া কিডনিতে জীবন পেয়ে অন্য নারীর প্রেমে পড়লেন স্বামী
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে রয়েছে বিশ্বকাপে খেলার হাতছানিও!
বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে রয়েছে বিশ্বকাপে খেলার হাতছানিও!