(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ১০ মার্চের ঘটনা।)
যাদের কাছে বেআইনি অস্ত্র রয়েছে তাদের অস্ত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে নোটিস জারির ১০ দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। যারা বর্ণিত সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা দেবে তাদের বিরুদ্ধে কোনও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলেও উল্লেখ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বেআইনি অস্ত্র অধিকারীদের অস্ত্র জমা দেওয়ার সুযোগ নিয়ে অবিলম্বে নোটিস জারির জন্য স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতি নির্দেশও দেন।
বাসসের খবরে বলা হয়, যাদের কাছে পিস্তলের মতো ক্ষুদ্র অস্ত্র আছে, তারা থানায় অস্ত্র জমা দেওয়ার সময় তাদের অস্ত্র রাখার নিয়মিত লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যারা এ নির্দেশ পালন করবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
আদেশ অমান্য করলে ১৯৭২ সালের (বিশেষ ট্রাইবুনাল) আদেশবলে শাস্তি দেওয়া হবে। শাস্তি হিসেবে সর্বাধিক ১৪ বছর এবং সর্বনিম্ন তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দানের বিধান করে আদেশটি সংশোধন করা হয়। সমস্ত থানা ও ডেপুটি কমিশনারদের এ কথা জানানো হয়। ১৯৭৩ সালের ২০ মার্চের মধ্যে যারা নিকটবর্তী থানায় বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে জানায় সরকার।
অতীতে সরকারে যারা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অস্ত্র পেয়েছিল তারা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র জমা দিয়েছিল। কিন্তু ভুল ধারণাবশত এবং কেউ কেউ সমাজবিরোধী লোকদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে অস্ত্র জমা দেয়নি। যাদের হাতে এখনও বেআইনি অস্ত্র ও গোলাবারুদ আছে সরকার তাদের আরেকটি সুযোগ দিতে চায়।
বিজয়ের পর ট্রাক মিছিল
বঙ্গবন্ধুঘোষিত নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের পর মহিলা শাখার কর্মীরা এই দিনে গণভবনে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে অভিনন্দিত করেন। ঢাকা নগরীর বিভিন্ন এলাকার আওয়ামী লীগ মহিলা শাখার সদস্যরা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে বের হয়ে নগর পরিক্রম করে। বেইলি রোড থেকে ডিআইটি অ্যাভিনিউ বঙ্গভবন হয়ে আজিমপুর, নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, ধানমণ্ডি, কাঁঠালবাগান, সাত মসজিদ সড়ক ইত্যাদি এলাকা ঘুরে ট্রাক মিছিলটি গণভবনে পৌঁছায়। তারা গণভবনে বঙ্গবন্ধুকে ফুলের মালা ও তোড়া উপহার দেয়। এ ছাড়া নারীরা গোলাপের পাপড়ি বর্ষণ করে বঙ্গবন্ধুর ওপর। বঙ্গবন্ধুকে পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন তারা। বঙ্গবন্ধুও মাঝে মাঝে তাদের সঙ্গে স্লোগান দেন।
ওয়াল্ডহেইমের অভিনন্দন
নির্বাচনে বিজয়ের পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অভিনন্দন জানান জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল কার্ট ওয়াল্ডহেইম। বাসসের খবরে প্রকাশ, সন্ধ্যায় গণভবনে বঙ্গবন্ধুর কাছে এ অভিনন্দন বাণী পাঠানো হয়। বাণী পৌঁছে দিয়ে আনরড প্রধান বলেন অভিনন্দন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান পৌঁছে দেওয়া ছাড়াও তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কিছু নিয়মিত বিষয়ে আলোচনা করেছেন।