X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে জয়বাংলা ধ্বনিতে মুখর জাপান

উদিসা ইসলাম
২১ অক্টোবর ২০২১, ০৮:০০আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২১, ০৮:০০

(বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ১৯৭৩ সালের ২১ অক্টোবরের ঘটনা।)

 

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের এইদিন ঘোষণা করেন. জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন আরও শক্তিশালী হবে। বঙ্গবন্ধু বলেন, জাপানের জনগণের জন্য বাংলাদেশের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা রয়েছে। তিনি ঘোষণা করেন, জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে মৈত্রী ও ভাতৃত্বের বন্ধন উত্তরোত্তর শক্তিশালী হবে। এই দুই দেশের বন্ধুত্ব সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের মানুষের প্রতি জাপানের সমর্থন ও সাহায্যের কথা তিনি কৃতজ্ঞতাভরে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, পারস্পরিক সমঝোতা ও সহযোগিতার ওপর প্রতিষ্ঠিত বন্ধুত্ব ভবিষ্যতে আরও সুদৃঢ় হতে বাধ্য।

এর আগে ওয়াসাকার পথে সজ্জিত নৌকাযোগে বঙ্গবন্ধু সেখানে পৌঁছালে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু ও যুব মিলে বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা স্বাগত জানাতে বন্দরে ভিড় জমান। জনতা সেখানে ‘জয় বাংলা’, জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক ধ্বনিতে বন্দরনগরী মুখর করে তোলে।

দৈনিক বাংলা, ২২ অক্টোবর ১৯৭৩

অবাঙালিদের ছাড়পত্র দিচ্ছে না পাকিস্তান

প্রায় তিন হাজার পাকিস্তানি চার দিন ধরে ক্যাম্পে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ব্যর্থ দিন গুনছিলেন। পাকিস্তান সরকারের ছাড়পত্রের অভাবে তারা দেশে যেতে পারছেন না। এদিন বাংলাদেশ সমিতি পরিচালিত এখানে অবস্থানরত পাকিস্তানিরা একথা জানায়। তারা প্রশ্ন করেন, ‘পাকিস্তান কি আমাদের ফেরত নেবে না?’

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের টালবাহানায় পাকিস্তানিদের মধ্যেই ব্যাপক নৈরাশ্য দেখা দিয়েছে। এই রিপোর্ট লেখার আগের দিন পর্যন্ত ১৭ হাজার বাঙালি স্বদেশে ফিরেছেন। অথচ পাকিস্তান গেছেন মাত্র ৬ হাজার ৭১০ জন। কম সংখ্যক পাকিস্তানি দেশে ফিরতে পারার কারণ হচ্ছে পাকিস্তান সরকারের ছাড়পত্র প্রদানে গড়িমসি। পাকিস্তানের বিমাতাসুলভ মনোভাব দেখে অনেকে অপমানিতও বোধ করছেন এবং এখন বাংলাদেশে থেকে যাওয়ার কথাও ভাবছেন।

ক্যাম্পের একজন সাংবাদিকদের বলেন, আগে এমন হবে জানলে ফিরে যাওয়ার অপশন নিতেন না। বাংলাদেশে তিনি চাকরি পেয়েছিলেন।

আরেক অবাঙালি বলেছেন, ‘আমরা বাঙালিদের ওপর অত্যাচার করেছি। আল্লাহ তার সাজা দিচ্ছে। এখন দেখছি পাকিস্তানিরা আমাদেরকে দেখতে পারে না। সেখানে গিয়ে কী হবে কে জানে।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আরবদের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামের প্রতি তার দেশের সমর্থনের কথা আবার ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আমরা চাই ১৯৬৭ সালের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা হোক এবং অধিকৃত আরব এলাকাসমূহ যেন ইসরায়েল ছেড়ে যায়।

জাপানের বহুল প্রচারিত একাধিক দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু বলেন, আরবরা তাদের এলাকা থেকে ইসরায়েলিদের সরিয়ে দিতে লড়াই করে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের মানুষ যতটুকু সম্ভব আরব ভাইদের সাহায্য করার চেষ্টা করছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরব দেশগুলোতে বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসক দল ও এক লাখ পাউন্ড প্রদানে চাপ প্রয়োগের কথা উল্লেখ করেন।

ডেইলি অবজারভার, ২২ অক্টোবর ১৯৭৩

বঙ্গবন্ধু আরও কয়েকটি গণমাধ্যমে কথা বলেন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আরও তিনটি বিশিষ্ট সংবাদপত্রের সঙ্গে অনুরূপ সাক্ষাৎকার দেন সেদিন। এ ছাড়া বহুসংখ্যক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার চেয়ে অপেক্ষায় ছিলেন। বঙ্গবন্ধু একজন প্রশ্নকারীকে জানান, বাংলাদেশ অক্ষরে অক্ষরে দিল্লিচুক্তি বাস্তবায়ন করছে এবং পাকিস্তান থেকে সকল বাঙালিকে ফিরিয়ে আনছে। পাকিস্তানে ফিরে যেতে ইচ্ছুক পাকিস্তানিদের দ্রুত প্রত্যাবর্তনে পাকিস্তান কর্তৃক সৃষ্ট বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে তার দেশের বন্ধুত্বের কথা ঘোষণা করে বলেন, সকল দেশ—বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উন্নয়নে তিনি আগ্রহী। বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে এক প্রশ্নকারীর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৬ সালের জাপানি দিকে ফিরে তাকালে বাংলাদেশের অবস্থা যথাযথভাবে বুঝতে পারবেন। তিনি বলেন হানাদার বাহিনী সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে বাঙালিরা দেশ পুনর্গঠনের কাজে ব্রতী হয়েছে। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি বিষয়ে চীনের অস্বীকৃতিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে অভিহীত করেন তিনি।

 

 

/এফএ/
সম্পর্কিত
বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে স্ট্যাটাস, এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা
ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য উন্মোচন
খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি: প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
‘স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে প্রত্যেককে গাছ রোপণ করতে হবে’
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
ভিটামিন ডি কমে গেলে কীভাবে বুঝবেন?
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা