জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেত্রী উমামা ফাতেমা গণতান্ত্রিক রূপান্তরের আলাপ তুলে করণীয় বিষয়ে কথা বলেছেন। শুক্রবার (২৪ মে) তারা নিজ নিজ ফেসবুক পোস্টে এনিয়ে কথা বলেন।
তাসনিম জারা লিখেছেন, রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ক্ষুদ্র স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও পারস্পরিক অবিশ্বাস আমাদের গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে চরম ঝুঁকির মুখে ফেলছে। স্বল্পমেয়াদি হিসাব-নিকাশের জন্য এমন এক জাতির আশাকে আমরা ধ্বংস হতে দিতে পারি না, যে জাতি স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে।
পোস্টে ডা. জারা লেখেন, বৃহস্পতিবার (২২ মে) ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে অন্যতম কঠিন রাত। একটি ভাবনা আছে যা আমাকে সারারাত জাগিয়ে রেখেছে, সেটিই আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। এটা দোষারোপের সময় নয়। এটা আত্মসমালোচনার সময়।
তিনি লেখেন, ইতিহাস আমাদের শেখায়— যারা পরিবর্তনকে ভয় পায়, তারা প্রায়ই বিভাজন ও মেরুকরণকে ব্যবহার করে পুরানো শাসনব্যবস্থাকে নতুন মুখোশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। আমরা যেন সেটা এখানে ঘটতে না দিই। আমাদেরকে গোষ্ঠীবাদী মানসিকতার ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। এই বিপ্লব ছিল জনগণের। আর সেই জনগণের প্রতিই আমাদের দায়িত্ব— সংযম দেখানো, সংলাপে এগিয়ে আসা এবং ঐক্য ধরে রাখা।
‘আসুন, এটি হোক বিভক্তির নয়— ঐক্যের একটি মোড়।’
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ফেসবুকে লেখেন, দেশ কোনও ধরনের রাজনৈতিক ঐক্যের পথে নাই। এই ঐক্য ভেঙে গেছে গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবরের দিকেই। খোলসটা ছিল একরকমভাবে। বর্তমানে খোলসটাও খুলে পড়ছে তাই অনেকে অবাক হচ্ছে। সব পক্ষ যদি কিছুটা পরিপক্কতা দেখাতো, শহীদদের জীবনের কথা ভেবে কিছুটা ছাড় দিতো, তাহলে অন্তত নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দেশটা স্ট্যাবল থাকতো। দেশটা স্ট্যাবল না হতে দেওয়ার জন্য অনেক ধরনের ফোর্স ভেতরে সক্রিয় আছে। আর জুলাই এর সব লড়াকু শক্তিই ক্ষমতা প্রশ্নে অস্থির হয়ে গেছে। যেন গোটা দেশটাই একটা খেলামাত্র।
তিনি লেখেন, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, ধৈর্য ও টেবিলে ঐক্যমতের রাজনীতিই দেশকে একটা গণতান্ত্রিক উত্তরণের দিকে নিতে পারে। কিন্তু হায়! এখন প্রতিটি শক্তিই পরস্পরকে বেইমান, গাদ্দার মনে করে। আর এখন এসে ড. ইউনূসের জন্য হা হুতাশ একটু হালকা লাগে বৈকি। যখন ঐক্যমতের রাজনীতি করতে হয়, তখন ভাঙনের রাজনীতি করছেন। আর এখন এসে হা-হুতাশ দেখতে হাস্যকর লাগে।