করোনা পরবর্তী সময়ে নতুন শ্রম বাজারের অংশ হিসেবে মাদাগাসকার, রোমানিয়া, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, উজবেকিস্তান, কম্বোডিয়া, সিসেলস, বসনিয়া-হারজেগোভিনা ও পোল্যান্ডে কর্মী প্রেরণ করা শুরু হয়েছে বলে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে জানিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
বুধবার (১০ নভেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৪তম বৈঠকে এই তথ্য জানানো হয়।
কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, মৃণাল কান্তি দাস, পংকজ নাথ এবং মো. সাদেক খান, মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে কোভিড পরবর্তী বিশ্ব পরিস্থিতিতে শ্রমবাজার অনুসন্ধান, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণ ও মানবপাচার প্রতিরোধ দমন আইন-২০১২ এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া বিগত ১৩তম বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকে জানানো হয়, কোভিড পরবর্তী সময়ে নতুন শ্রম বাজারের অংশ হিসেবে মাদাগাসকার, রোমানিয়া, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, উজবেকিস্তান, কম্বোডিয়া, সিসেলস, বসনিয়া-হারজেগোভিনা ও পোল্যান্ডে কর্মী প্রেরণ করা শুরু হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু নতুন দেশে কর্মী প্রেরণের নিমিত্তে মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে কমিটিকে অবহিত করা হয়।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের পুনর্বাসন ঋণের আওতায় সর্বোচ্চ ঋণসীমা ৮ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণের সীমা ১০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া ঋণ বিতরণ কার্যক্রম মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে জনবল নিয়োগসহ ব্যাংকের শাখা সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) থেকে এ পর্যন্ত কতজন ট্রেনিং নিয়ে বিদেশে গেছেন তার একটি পরিসংখ্যান প্রস্তুত করে কমিটিকে জানানোর জন্য সুপারিশ করা হয়। তাছাড়া দেশের প্রান্তিক বেকার লোকদের ট্রেনিংয়ে উৎসাহ দিতে এবং এতে যারা ভালো করবে তাদের আর্থিক পুরস্কার দেওয়া যায় কিনা তারও সুপারিশ করে কমিটি।
বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, বর্তমানে বিদেশে কর্মী গমনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত মোট দেড় লাখেরও বেশি কর্মী বিদেশে গেছেন।
তিনি আরও জানান, প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র আসছে।
মন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থানের হার কোভিড পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে এসেছে। এই প্রবাহ চলমান থাকলে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বর্তমানে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা কমলেও শিগগিরই এটা ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে মনে করেন তিনি।
বৈঠক শেষে মন্ত্রী ইমরান আহমদ মন্ত্রণালয়ের ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন কমিটির হাতে তুলে দেন।
