আইনের শাসন প্রশ্নে সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের মধ্যে বাহাস হয়েছে। হারুন বলেন, ‘সরকার আইনের প্রয়োগে বৈষম্য করছে। আইন থাকলেও যথাযথ প্রয়োগ পাচ্ছি না। প্রয়োগ না পেলে আইন করে লাভ কী?’ জবাবে ‘বিএনপির এমপি আমাকে আইন শেখাচ্ছেন’- এমন মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেল হত্যার বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সেজন্য এখন বিচারপতিদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির আইন আনতে পেরেছি।’
মঙ্গলবার (৭ জুন) সংসদে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২২ উত্থাপনকালে এ বাহাস হয়। আইনমন্ত্রী বিলটি উত্থাপনের প্রস্তাব করতে চাইলে হারুন আপত্তি তোলেন।
যদিও হারুন বলেছেন, বিলে তার আপত্তি নেই। বরং বিচারপতিদের বেতন-ভাতা আরও বাড়ানোর পক্ষে বলেন তিনি। বেশি সংখ্যক বিচারপতি নিয়োগেরও প্রস্তাব দেন তিনি।
হারুন বলেন, ‘একটি বিচার নিষ্পত্তিতে ৩০ বছর লেগে যাচ্ছে। নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে ফাইনাল হতে বিচারপ্রার্থী মৃত্যুবরণও করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু দিন আগে দেখলাম ১০ বছরের দণ্ডিত সংসদ সদস্য হাজী সেলিম চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আপনি (আইনমন্ত্রী) বলেছেন, উনি আইন মেনেই গিয়েছেন। অথচ সাবেক প্রধানমন্ত্রী কিন্তু বিদেশে চিকিৎসা নিতে আপনাদের কাছে বারবার আবেদন করে আসছেন। আপনারা বলছেন সুযোগ নেই। আইনের বৈষম্য আপনারা প্রয়োগ করছেন।’
বিরোধী দলের সারা দেশে কর্মসূচি পালনের অধিকার রয়েছে কিনা প্রশ্ন তুলে হারুন বলেন, ‘আপনারা (আওয়ামী লীগ) কর্মসূচি পালন করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রহরায়। কিন্তু বিরোধী দলকে কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না। এখানে আইনের প্রয়োগে বৈষম্য করছেন কিনা?’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘দুঃখে কাঁদবো না হাসবো বুঝতে পারছি না। কারণ, সংসদ সদস্য আমাকে যে জ্ঞান দিলেন, সেটা না হয় আমার কাজে লাগবে। কিন্তু ওনার কতটুকু কাজে লেগেছে আমি ঠিক জানি না। কারণ, উনি আমাকে বললেন মানুষ যেন বিচার পায়। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পরে বিচারের সুযোগ ছিল? ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওনারা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ করে বিচার বন্ধ করেছিলেন। আর আজ উনি আমাকে বিচার শেখাচ্ছেন। উনারা হয়তো বলবেন, ওটা করেছিল খন্দকার মোশতাক। ১৯৭৫ সালের নভেম্বরের ৫ তারিখ থেকে উনারা (বিএনপি) ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। ১৯৯১ ও ২০০১ সালেও ক্ষমতায় ছিলেন। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স তুলেছিলেন? তোলেননি।’