X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠাবো: প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৩ নভেম্বর ২০২২, ১৮:১০আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২২, ১৯:২৫

বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবারও জেলে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির সাম্প্রতিক আন্দোলনকে ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, মানবিক কারণে সাজা স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকার অনুমতি সরকার দিয়েছে। তবে তারা যদি আবার বাড়াবাড়ি করে তাহলে তাকে আবার জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন দলটির সভাপতি।

বাড়াবাড়ি করলে আবার জেলে পাঠিয়ে দেবো

আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ। তার বোন, ভাই, বোনের জামাই আমার কাছে এসেছে। আবেদন করেছে। আমরা তার সাজা স্থগিত করে বাড়ি থাকার সুযোগটা দিয়েছি। মানবিক কারণেই দিয়েছি। কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি করলে… যদি ওরা বেশি বাড়াবাড়ি করে, বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে আবার জেলে পাঠিয়ে দেবো। কোনও চিন্তা করবেন না।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাত বছরের জেলের বিষয়টি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই মামলা তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের। রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দিন আহমেদ ও সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ বিএনপির প্রিয় লোক ছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের দেওয়া মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছিল।

বিএনপি-জোট সরকার আমলের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা তো এর প্রতিশোধ নিতে যাইনি। আমরা আইনগতভাবে অপরাধীদের বিচার করেছি। আজ তাদের কী অবস্থা? আজ দেখি গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হবে। যে দলের জন্ম সেনা শাসকের পকেট থেকে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের দ্বারা যাদের জন্ম, তারা আবার গণতন্ত্র উদ্ধারটা কী করবে? সেটাই আমার প্রশ্ন।

সেই যে বিদেশে গেছে, বিদেশেই

বিএনপির গণতন্ত্রের কথা শুনে কিছু লোক তাদের সঙ্গে তাল মেলাচ্ছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, এদের জ্ঞান-বুদ্ধি কোথায় থাকে? তারা কি বাস্তবটা বুঝতে পারে না? আর নেতৃত্ব কোথায়? বিএনপি লাফালাফি করছে, তাদের নেতা কই?

বিএনপি সরকারের আমলে বিভিন্ন রকমের দুর্নীতি হয়েছে দাবি করে তার চিত্র তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, হাওয়া ভবনে পাওয়া না দিলে কেউ কাজ করতে পারবে না। একদফা হাওয়া ভবনে দিতে হবে। আরেক দফা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার কাছে। আবার তার নিজস্ব একজন আলু-ফালু ছিল। তারেক জিয়ার ছিল মামুন, কোকো, আরও কারা ছিল।

এক/এগারোর সময়ে তারেক জিয়া রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে বিদেশে চলে যায় বলে উল্লেখ করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, সেই যে বিদেশে গেছে, বিদেশেই।

তিনি বলেন, বিএনপি এত লম্ফঝম্ফ করে। তাদের দুই নেতা সাজাপ্রাপ্ত আসামি। দলটি সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে আরেক সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে চেয়ারম্যান বানিয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিএনপি দলের মাথা কোথায়? নিজের দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা তাদের জিজ্ঞেস করতে পারেন। তোমরা যে এত লাফাচ্ছো, তোমাদের মাথা কই? সবই তো দুর্নীতিগ্রস্ত ও পলাতক আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দুর্নীতিবাজরা নেতৃত্বে এলে দেশের কী হবে জানতে চান সরকার প্রধান। মানুষ কি এসব চিন্তা করে– এই প্রশ্নও করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের চিন্তা হচ্ছে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা– উল্লেখ করে দলের সভাপতি এসময় দেশের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক সংকটের ধাক্কা বাংলাদেশে পড়েছে বলে জানান তিনি।

মানুষের সেবা করা আওয়ামী লীগের কাজ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে লাশের পর লাশ পড়ে থাকতো। টিকা তো দূরের কথা… ওই টিকা কিনতে গিয়ে কত টাকা হাওয়া ভবনে হাওয়া হয়ে যেত, তার ঠিকও নাই। মানুষ না খেয়ে মারা যেতো। এমন কোনও শ্রেণি পেশা নাই, যাদের আমি আর্থিক সহায়তা দিইনি।

যেমন কুকুর, তেমন মুগুর না হলে সোজা হয় না

২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের বিএনপির হামলার বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭০টা সরকারি অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে। ছয়টা ভূমি অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে। যখন ভূমি অফিস জ্বালালো, আমি নির্দেশ দিলাম, যেখানে অফিস জ্বালিয়েছে, সেখানে বিএনপির কোনও নেতাকর্মীকে তাদের ভূমির পর্চা না দেওয়ার জন্য। ওই ভূমি সব সরকারি খাতে চলে যাবে। তারপর তারা থেমেছে। যেমন কুকুর, তেমন মুগুর না হলে সোজা হয় না।

বিএনপির আমলের অত্যাচার ও নির্যাতনের কথা মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি। একই সঙ্গে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরার জন্য বলেন।

তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে সামনে নির্বাচন। আমরা মানুষের মন জয় করে, মানুষের জন্য কাজ করে.. আবার মানুষ নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। কারণ, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে লুটপাট, খুনখারাবি, বোমাবাজি, গ্রেনেড হামলা আর নির্যাতন আসবে। অশান্ত পরিবেশ মানুষ চায় না। শান্তি চায়। আওয়ামী লীগ এলে উন্নয়ন হয়।

 

/ইএইচএস/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তৎপর হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
ভারতীয় শাড়ি দিয়ে কাঁথা সেলাই করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
খালেদা জিয়াকে সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন: মেডিক্যাল বোর্ড
সর্বশেষ খবর
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা