বরিশাল-খুলনা সিটি করপোরেশনসহ দুই পৌরসভায় আনন্দমুখর পরিবেশে ভোট হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। পাশাপাশি বরিশালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা ঘটনায় কোনও ধরনের নির্বাচনোত্তর বিশৃঙ্খলা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
সোমবার (১২ জুন) ভোট শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, দু-চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সার্বিকভাবে সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে। খুলনায় গড়ে মেয়র পদে প্রায় ৪৫% ও বরিশালে গড়ে প্রায় ৫০% ভোট পড়তে পারে। আর পৌরসভায় ৫৫% ভোট পড়ার আশা করা হচ্ছে।
সোমবার সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত ইভিএমে বরিশাল ও খুলনা সিটি, কক্সবাজার, আড়াইহাজার পৌরসভায় ভোট হয়। সেসব এলাকার ভোট পরিস্থিতি ঢাকা থেকে সিসি ক্যামেরায় দেখেছে কমিশন।
সিইসি বলেন, যেটা দেখেছি- আমরা সন্তুষ্টবোধ করছি। সার্বিকভাবে যে নির্বাচনটা আজকে হয়েছে (বরিশাল-খুলনা সিটি, কক্সবাজার, আড়াইহাজার পৌরসভা) তা বেশ সুশৃঙ্খল, আনন্দমুখর পরিবেশে হয়েছে। গণমাধ্যমসহ সবখানে ইতিবাচক সংবাদ পেয়েছি। দু-চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। এটা আশাব্যঞ্জক।
ভোটে অনিয়ম ও কেন্দ্রের গোপনকক্ষে ‘ডাকাতে’র উপস্থিতির মতো কোনও ঘটনা দেখা যায়নি বলে জানান তিনি।
বিএনপি ও সমমনা দল ভোটে না থাকায় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাকের পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবার ভোটের হার তুলনামূলক কম হওয়ার শঙ্কা ছিল।
সিইসি জানান, সব কিছু ইসির পর্যবেক্ষণে, সার্বিকভাবে সুন্দর ও সুচারুভাবে ভোট হয়েছে। খুলনায় গড়ে ৪২-৪৫% এবং বরিশালে ৫০%-এর কমবেশি। কক্সবাজার পৌরসভায় ৫৫%-এর মতো ভোট পড়তে পারে।
উত্তেজনা বরিশালে, বিশৃঙ্খলা রোধে প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
বরিশালে মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি, শুনেছি- বরিশালে হাতপাখার প্রার্থীকে খানিকটা আঘাত করা হয়েছে। এতে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল বা সে উত্তেজনা এখনও হয়ত প্রশমিত হয়নি। এখান থেকে বলা হয়েছে, এ ধরনের আশঙ্কা থেকে নির্বাচনোত্তর সহিংসতা যেন না ঘটে, কোনও রকম উচ্ছৃঙ্খল আচরণ যেন না হয়। অনেক সময় ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। সে প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।”
এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি আশা রাখেন, হয়তো আর কোনও ঘটনা ঘটবে না।
একজন মেয়র প্রার্থীকে রক্তাক্ত করা হলেও এ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ বলা যায় কিনা? জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “এটা আপেক্ষিক। উনি কি ইন্তেকাল করেছেন? আমরা দেখেছি- না, উনি কি কতটা? উনার রক্তক্ষরণটা দেখিনি। যতটা শুনেছি- উনাকে কেউ পেছন থেকে ঘুষি মেরেছে। উনিও বলেছেন, ভোট বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না, তাকে আক্রমণ করা হয়েছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে খবর নিয়েছি, ভোট কার্যক্রম ওই কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে কিনা। খবর পেয়েছি ভোট বাধাগ্রস্ত হয়নি।”
জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে আশ্বাস দিয়ে সিইসি বলেন, “উনাকে (মেয়র প্রার্থী) যে আহত করা হয়েছে, এখান থেকে সুস্পষ্টভাবে পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং অফিসার সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। যে দায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করার পরে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। আরও তথ্য পরবর্তী সময়ে পাবো। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে”।