X
মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪
৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
বিশেষ সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী

আমার যতটুকু করার করে যাচ্ছি, এরপর বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন না থামে

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৩২আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:০০

দেশের চলমান উন্নয়ন যাতে কখনোই বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের ছাত্রছাত্রীদের জন্য আমার এটাই আহ্বান থাকবে যে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের মধ্য দিয়ে এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমার যতটুকু করার আমি করে যাচ্ছি। কিন্তু এরপরে যেন বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা থেমে না যায়।

আজ রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি (মরণোত্তর) দেওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিশেষ সমাবর্তনে তিনি এই কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র মাঠে ‘বিশেষ সমাবর্তন-২০২৩’ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আমি একটা কথাই বলতে চাই যে আমরা আমাদের দেশকে সারা বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের যারা আজকের প্রজন্ম তাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ২০০৯ সালে থেকে আমরা সরকারে। এই ১৫ বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ হচ্ছে আজকের এই বাংলাদেশ। সেটা আমরা করতে পেরেছি জাতির পিতার প্রত্যেকটা কথা, প্রত্যেকটা বাণী হৃদয়ে ধারণ করে তার স্বপ্নটাকে বাস্তবায়ন করার প্রচেষ্টা গ্রহণের মাধ্যমে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ বাংলাদেশে দারিদ্র বিমোচন আমরা করতে পেরেছি, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি আমরা করতে পেরেছি। যদিও করোনা এবং যুদ্ধ শুধু আমাদের না, বিশ্বে একটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিশেষ সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

তিনি বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতার সুফল আমরা প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবো। এই বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না। এই দেশটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা যা করার আমরা করে যাচ্ছি।

গবেষণার ওপর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আরও গুরুত্ব আরোপ করা আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি চাই গবেষণা যেন হয়। গবেষণার ওপর যেন বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কৃষি গবেষণায় আমরা খুব সাফল্য অর্জন করেছি। আজ আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। সেই সঙ্গে আমাদের বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান থেকে শুরু করে আমরা তো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি, দ্বিতীয়টাও আমরা করবো। এরপর তো আমাদের চাঁদে যেতে হবে। সেই চাঁদে যাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে আমি কিন্তু লালমনিরহাটে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ও করে দিয়েছি।

বঙ্গবন্ধুকে ‘ডক্টর অব ল’ দেওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র থাকার সময় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবি আদায় করতে গিয়ে বহিষ্কার হওয়া বঙ্গবন্ধু মুচলেকা দিয়ে ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখেননি। কারণ, তিনি অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিশেষ সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

জাতির পিতার সেই বহিষ্কারাদেশ ২০১০ সালের ১৪ আগস্ট প্রত্যাহার করে নেওয়ায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন চ্যান্সেলর প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান এবং ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককেও ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এটা আমার হৃদয়ের বিশ্ববিদ্যালয়। আবার যদি ভর্তি হতে পারতাম, মাস্টার্স ডিগ্রিটা শেষ করতে পারতাম, খুশি হতাম। কারণ ’৭৫-এর বিয়োগান্তক অধ্যায়ের পর জীবনের গতিপথ পরিবর্তনে তার আর মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করা হয়নি।

জাতির পিতার কন্যা বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশের অনেক ডিগ্রি পেয়েছি, ওতে মন ভরে না। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে পেলাম না। অবশ্য আমাকে একটা অনারারি দেওয়া হয়েছিল কিন্তু সেটা তো না, লেখাপড়া করতে পারলে ভালো হতো।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি (মরণোত্তর) গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: বাসস)

অনুষ্ঠানে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্মানসূচক ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান বিশেষ এই সমাবর্তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি প্রদানের ঘোষণা দেন এবং জাতির পিতার কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ডিগ্রি তুলে দেন। শেখ হাসিনা জাতির পিতার পক্ষে স্বাক্ষর করে ডিগ্রি গ্রহণ করেন। প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল ডিগ্রি প্রদানের সাইটেশন পাঠ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। সমাবর্তন বক্তার সাইটেশন পাঠ করেন প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুসহ মন্ত্রী পরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা, সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, আমন্ত্রিত দেশের বিশিষ্ট নাগরিক এবং সমাবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস

/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বাজার ম‌নিট‌রিং জোরা‌লো করতে প্রধানমন্ত্রীর নি‌র্দেশ
বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক দেবে সরকার, অর্থমূল্য এক লাখ ডলার
অটোরিকশা চালকদের নিয়মের মধ্যে আনা হবে: প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
ভোট দিয়ে আবার লাইনে দাঁড়ানো দুই যুবককে ৬ মাসের কারাদণ্ড
ভোট দিয়ে আবার লাইনে দাঁড়ানো দুই যুবককে ৬ মাসের কারাদণ্ড
গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে না ইসরায়েল, দাবি বাইডেনের
গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে না ইসরায়েল, দাবি বাইডেনের
ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও চালকদের লাইসেন্সসহ চার দাবি
ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও চালকদের লাইসেন্সসহ চার দাবি
রফতানি বহুমুখীকরণে অগ্রাধিকার খাত চিহ্নিত করার তাগিদ
রফতানি বহুমুখীকরণে অগ্রাধিকার খাত চিহ্নিত করার তাগিদ
সর্বাধিক পঠিত
১০০ লিচু ১০০০ টাকা, তবু দুশ্চিন্তায় এই গ্রামের চাষিরা
১০০ লিচু ১০০০ টাকা, তবু দুশ্চিন্তায় এই গ্রামের চাষিরা
ছুটি ছাড়াই ২৩ মাস কর্মস্থলে আসেননি সরকারি এই কর্মচারী
ছুটি ছাড়াই ২৩ মাস কর্মস্থলে আসেননি সরকারি এই কর্মচারী
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
সংসদীয় কমিটির তোপের মুখে টেলিটক
সংসদীয় কমিটির তোপের মুখে টেলিটক
‘বাংলাদেশ দলে খেলতে না পারলে আমি মরে যাবো না’
‘বাংলাদেশ দলে খেলতে না পারলে আমি মরে যাবো না’