প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে তিনটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্যে ১২ দশমিক ২৪ কিমি আখাউড়া-আগরতলা আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগ, যা ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন ও দুই দেশে জনগণের সংযোগ বাড়াবে। ভারতের সহায়তার আরও দুটি উন্নয়ন প্রকল্প খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন ও মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিট উদ্বোধন করেন তারা।
বুধবার (১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনটি উন্নয়ন প্রকল্পের যৌথভাবে উদ্বোধন করেন তারা। গণভবন থেকে যুক্ত হন শেখ হাসিনা। নয়াদিল্লি থেকে যুক্ত হন নরেন্দ্র মোদি। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহা।
১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার আখাউড়া-আগরতলা ক্রস-বর্ডার রেল সংযোগ প্রকল্পটি বাংলাদেশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেললাইন এবং ৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটার ত্রিপুরায় ৩৯২ দশমিক ৫২ কোটি টাকা ভারতের অনুদান সহায়তায় বাস্তবায়িত হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৩০ অক্টোবর) এই রুটে ট্রায়াল রান হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশের গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত একটি পণ্যবাহী ট্রেন চলে। অন্যদিকে যাত্রীবাহী ট্রেনের ট্রায়াল রান শিগগিরই অনুষ্ঠিত হবে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
খুলনা-মোংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পটি ভারতের রেয়াতি লাইন অব ক্রেডিট দিয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। যার মোট প্রকল্প ব্যয় ৩৮৮ দশমিক ৯২ মিলিয়ন ডলার (ভারতীয় এলওসি থেকে ৬৯ দশমিক ১৮ শতাংশ অর্থায়ন)। প্রায় ৬৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার রেললাইনের নির্মাণ কাজ ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্পন্ন হয়েছে, যা মোংলা বন্দরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন সুযোগের সূচনা করবে।
রেল সংযোগ চালু হওয়ায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর মোংলা ব্রডগেজ রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট ভারতীয় কনসেশনাল ফিনান্সিং স্কিম লোনের অধীনে নির্মাণ হচ্ছে।
বিআইএফপিসিএল সূত্র জানায়, নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড নামে বাংলাদেশ এবং ভারতের যৌথ অংশীদারত্বের ভিত্তিতে নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসিলি যৌথভাবে এই কোম্পানি গঠন করেছে। দুই দেশের দুই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এই কোম্পানির সমান অংশীদার।
২০১২ সালের ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে উভয়ের মধ্যে চুক্তি হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০০ কোটি ডলার। এই কোম্পানির অধীনে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। প্ল্যান্টটি বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে।
মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিট ও ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীরা যৌথভাবে উদ্বোধন করেন এবং আজ ইউনিট-২ উদ্বোধন করা হলো।