জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জুলাইয়ের মধ্যেই জুলাই সনদ তৈরি করতে সচেষ্ট কমিশন। আমাদের মেয়াদ ১৫ আগস্ট পর্যন্ত হলেও দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং জনগণের আকাঙ্খা বিবেচনায় দ্রুততার সঙ্গে কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর অর্পিত দায়িত্ব সম্পন্ন করা দরকার। তাই আগামী দিনে প্রয়োজনে উপর্যুপরি দিনব্যাপী আলোচনা করে এ বিষয়টি সম্পন্ন করা হবে।
সোমবার (২ জুন) বিকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ায় যুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সাথে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, গত ২ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলেছে। এই সময়ে আপনাদের আগ্রহ, আন্তরিকতা ও কমিটমেন্ট প্রশ্নাতীতভাবে দৃশ্যমান হয়েছে। রাজনৈতিক দল ও জোটের বাইরে সিভিল সোসাইটির সদস্যরাও কমিশনের বিভিন্ন বিষয়ের সাথে ঐকমত্য হয়েছে। কিছু কিছু বিষয়ে দ্বিমত হয়েছে।
এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনমূলক মতামত আমার কাছে অভূতপূর্ব মনে হয়েছে। তারপরও আলোচনার মধ্যেই একটি সংক্ষিপ্ত সুপারিশ দিয়েছেন। এর একটি উদাহরণ হচ্ছে— সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ। এ বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাব ছিল অর্থবিল ছাড়া সব বিষয়ে নিজ দলের বিপরীতে ভোট দেওয়ার পথ খোলা রাখা। এসব বিষয়ে আলোচনার সময় আস্থা ভোটের সংশোধনী এই তালিকায় যুক্ত করার প্রস্তাব এসেছিল। এ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। এর বাইরে আরও কিছু যুক্ত করার জায়গা ছিলে। সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি আগামী এরকম বিষয়গুলোতে রাজনীতিবিদরা এক জায়গায় আসতে পারবেন। এ প্রেক্ষিতে দুটি বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা দরকার। আমাদের হাতে সময় খুবই কম।
দ্বিতীয়ত, আমরা একটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করে উপসংহারে পৌঁছতে আগ্রহী। যেসব বিষয়ে আংশিক ভিন্নমত আছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা আশা করছি, আলোচনার টেবিলে হয়তো অনেক বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছতে পারবো। কিছু বিষয়ে হয়তো সম্ভব হবে না।
মঙ্গলবার (০৩ জুন) থেকে আমাদের আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা শুরু হবে। ঈদের ছুটির পর প্রায় প্রতিদিনই আলোচনা অব্যাহত রাখতে চাই। আমাদের সেই আগ্রহ ও পরিকল্পনা আছে। এ জন্য আপনাদের আন্তরিকতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা আশা করি, আপনার তা অব্যাহত রাখবেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদ ও জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ এবং আহতরা আমাদের ওপর যে পবিত্র দায়িত্ব দিয়ে গেছেন, তাতে আমাদের সফল হতেই হবে। তাদের রক্তের প্রতি আমাদের দায় একটি গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় অগ্রসর হওয়ার একটি পথরেখা তৈরি করা। সে চেষ্টায় আমরা-আপনারা বলে ফারাক নেই। আমরা এক এবং অভিন্ন।
