প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে যে বড় বড় ইস্যুগুলো ছিল, সেগুলোর ক্ষেত্রে সংবাদ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সত্যিকার অর্থে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করেছে কিনা, আজকে অনেকে প্রতিবাদ করে বলছে ‘দোসর’— সেটা তো ওই ব্যর্থতার কারণে। তিনি বলেন, ‘যে রিপোর্টগুলো হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে আমরা কি কেউ নিজস্ব নিরীক্ষা করেছি, করিনি। এটা (নিজস্ব নিরীক্ষা) বাইরে প্রচুর হয়।’
শনিবার (৫ জুন) সকালে রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারে ‘গণমাধ্যম সংস্কার প্রতিবেদন পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি। ‘ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার’ এবং ‘বিবিসি অ্যাকশন মিডিয়া’ যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে।
শফিকুল আলম বলেন, ‘টেলিভিশন মিডিয়া বলেন, আর নিউজ মিডিয়া বলেন, তাদের কিন্তু ব্যর্থতা ছিল শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরে। এখন এই ব্যর্থতা নিয়ে কীভাবে আলাপ করবেন। এটা নিয়ে আমরা নিজেরাও ভাবছি। কেননা, এটা নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। প্রত্যকেবার যখন আলাদা করে আবার ব্যর্থতা দেখা দেয়, তখন ওই স্মৃতি অনেকেরই চাঙা দিয়ে ওঠে। চাঙা দিলে অনেকে প্রটেস্ট করেন, অনেকে মার্চ করতে যান। তখন আবার অনেকে বলেন, মব তৈরি হচ্ছে। কিন্তু গত সাড়ে ১৫ বছরে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের এই প্রতিবাদ করার তো অধিকার আছে। তাদের তো ক্ষুদ্ধ হওয়ার অধিকার আছে। তাদের সিভিল লিবার্টি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘সেই সাড়ে ১৫ বছর যে সাংবাদিকতার ব্যর্থতা হয়েছে, সেটা কি আমরা দায়িত্বশীলভাবে কেউ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমাদের কোনও পত্রিকা, টেলিভিশন স্টেশন কি বলেছে— কতগুলো বড় বড় ঘটনা ঘটেছিল? কী কী ছিল— ২০১৮ সালে রাতের ভোট হয়েছে, ২০২৪ সালে খুবই সাজানো একটা কারচুপির নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছে, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, মাওলানা সাঈদীর রায়ের সময় একটা বড় হত্যাকাণ্ড হয়েছে, বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে তিন হাজারের মতো, বিএনপি বারবার বলছে— তাদের ৬০ লাখ কর্মীর বিরুদ্ধে ভুয়া মামলা দেওয়া হয়েছে, গুম হয়েছে ৩ হাজারের মতো।’
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের যে সাংবাদিকতা, সেটা নিয়ে কিন্তু আমরা আলাপই করছি না। এটা নিয়ে আমার মনে হয়, সততার সঙ্গে আলাপ করা উচিত। সেজন্য আমরা জাতিসংঘকে বলছি, আপনারা বাইরের এক্সপার্ট দিন, তারা দেখুক কী ধরনের সাংবাদিকতা হয়েছে। ওই জায়গাটা তুলে ধরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ওপরে একটা আস্থার জায়গা তৈরি হবে। একজন তরুণ যখন সাংবাদিকতাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেবে, সে তো একটি বিশেষ আবহ দেখতে চায় না। আর রাজনৈতিক মতাদর্শ তো থাকতেই পারে। আমেরিকার ফক্স নিউজ তো রিপাবলিকানদের সমর্থক, এমএসএনবিসি তো ডেমোক্র্যাটিক। কথা হচ্ছে, রাজনৈতিক মতাদর্শ আপনার থাকতেই পারে, কিন্তু আপনি অপতথ্য দিচ্ছেন কিনা, মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন কিনা, তথ্য বিকৃতি করছেন কিনা।’