X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

টার্গেট কিলিং ঠেকানোর পথ পাচ্ছে না সরকার

পাভেল হায়দার চৌধুরী
০১ মে ২০১৬, ১৩:০২আপডেট : ০১ মে ২০১৬, ১৩:০২

টার্গেট কিলিং, নিহতের তালিকা বেড়েই চলছে

‘টার্গেট কিলিং’ ঠেকানোর কার্যকর কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছে না সরকার।সম্প্রতি সংঘটিত টার্গেট কিলিংগুলো সরকারকে বিপাকে ফেলেছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতি-নির্ধারকরা। তারা বলছেন,টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে চাপের মুখে ফেলছে ক্ষমতাসীনদের।আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।   

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মতে, ‘টার্গেট কিলিং’ ঠেকাতে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তবু কার্যকর পথ খুঁজে পাচ্ছে না। তবে এসব কিলিং বন্ধে পথ বের করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি মুহূর্তে নতুন নতুন কৌশল গ্রহণ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এদিকে,নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, যেসব দেশে টার্গেট কিলিং ছিল বা আছে, সেসব দেশে কিভাবে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, বিস্তারিত জানতে সেসব দেশের বিভিন্ন এজেন্সি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: মে দিবসেও ছুটি নেই শরীফাদের

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান,টার্গেট কিলিংগুলো হচ্ছে সরকারকে অস্থিতিশীল করে তোলার চক্রান্ত থেকেই। তাই এ ক্ষেত্রে কার্যকর পথ খুঁজে বের করতে যেমন ‘সিরিয়াস’ সরকার, তেমনি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করতেও বদ্ধপরিকর। তাদের মতে, প্রায় ১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ। সে তুলনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপ্রতুল। তাই শুধু  আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকলে সুফল পাওয়া কঠিন। এ জন্য জনগণকে সচেতন ও সতর্ক করতে হবে। এ প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দুজন মন্ত্রী বলেন, সরকার সাধ্যমতো চেষ্টা করছে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।  তবে, অপরাধীরা টার্গেট কিলিং মিশনে নামায় সরকারকে একটু বেগ পেতে হচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে জনসচেতনতা জরুরি হয়ে পড়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে টার্গেট কিলিং থামাতে। কিন্তু সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একার পক্ষে এটা বন্ধ করা অসম্ভব। তাই এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। সরকার টার্গেট কিলিং থামাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আশা করি, এসব কিলিং শিগগিরই বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দেশ ও সরকারকে অস্থিতিশীল করে তুলতে অপরাধীরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চক্রান্তে নেমেছেন। 

আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে দরজি হত্যায় দুই মামলা, আটক ৩

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টার্গেট কিলিং বন্ধ করতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জনগণের ভেতরে সচেতন মনোভাব সৃষ্টি করাও জরুরি। তিনি বলেন, জনগণকে সচেতন হতে হবে।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, জনসচেতনতা ছাড়া কোনওভাবেই এ ধরনের টার্গেট কিলিং বন্ধ করা যাবে না। তারা বলেন, সবাইকে সহনশীল আচরণ করতে হবে। এই মুহূর্তে উচিত উত্তেজনা ছড়ানোর মতো কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত রাখা।  চলমান পরিস্থিতিতে শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পদক্ষেপে টার্গেট কিলিং বন্ধ করা সম্ভব নয়। জনসচেতনতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা একসঙ্গে চললে টার্গেট কিলিং নির্মূল করা সম্ভব হবে।

আওয়ামী লীগ ওই দুই নেতা আরও বলেন, সামাজিক সচেতনতা না বাড়লে টার্গেট কিলিং বন্ধে সুফল পাওয়া খুব কঠিন হবে। কোনও কিছু ঘটলে তথাকথিত সুশীল ও বুদ্ধিজীবীরা যেভাবে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করতে উঠেপড়ে লাগেন, সে রকম যদি তারা অপরাধীদের সমালোচনা করে কর্মপন্থা বের করা নিয়ে ব্যস্ত হলে প্রতিকার পাওয়া যেত। তারা বলেন, টার্গেট কিলিংগুলো বন্ধ করতে সরকার তৎপর। কিন্তু হত্যাকারীরা যেভাবে টার্গেট করে বাসায় ঢুকে একের পর এক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন, তাতে এত ঘনবসতিপূর্ণ দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিশেহারা হয়ে পড়ার মতোই। এছাড়া, শুধু জননিরাপত্তার কাজই নয়, আরও নানা রকমের সমস্যা সমাধানের কাজও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে করতে হয়।

আরও পড়ুন: নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে ড. জাফর ইকবালের

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা সবাই জানি, টার্গেট কিলিংয়ের নামে যা হচ্ছে, এর সবই সরকারকে অস্থির করে তোলার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ হিসেবে হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য শেখ হাসিনার সরকারকে হটিয়ে উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারা থামিয়ে দেওয়া। তিনি বলেন, টার্গেট কিলিং বন্ধে  সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি, এসব টার্গেট কিলিং শিগগিরই নির্মূল হয়ে যাবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রভাবশালী এক মন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যত তৎপরই থাকুক না কেন, টার্গেট কিলিং নির্মূলে তারা শতভাগ সফল হওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে জনসচেতনতা যতদিন বাড়বে না, ততদিন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। 

/এমএনএইচ/ আপ- এপিএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গাজা ও ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গাজা ও ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
১২ বছর পর মুম্বাইয়ের মাঠে কলকাতার জয়
১২ বছর পর মুম্বাইয়ের মাঠে কলকাতার জয়
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা