বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের সময় জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ডাটাবেজে রক্ষিত আঙুলের ছাপের সঙ্গে ছাপ মেলেনি ১ কোটি ২১ লাখ সিম মালিকের। ফলে প্রথম ধাপে সিম নিবন্ধন করতে পারেননি এই বিপুল সংখ্যক গ্রাহক।
তবে ভয় নেই। এই গ্রাহকরাও তাদের সিম নিবন্ধন করতে আবারও সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেছেন, এনআইডি ডাটাবেজের সঙ্গে যাদের আঙুলের ছাপ মেলেনি তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তারা নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক অফিসসহ যেকোনও অফিসে গিয়ে আঙুলের ছাপ দিতে পারবেন। সেখানে বায়োমেট্রিক ডিভাইস থাকবে, মোবাইলফোন ব্যবহারকারীরা চাইলে সেখান থেকেই সিম নিবন্ধন করতে পারবেন।
তারানা হালিম জানিয়েছেন, সারাদেশে নির্বাচন কমিশনের ৫১৪টি অফিস রয়েছে। এসব অফিসে গিয়ে যাদের আঙুলের ছাপ ডাটাবেজের সঙ্গে মেলেনি তারা আঙুলের ছাপ দিতে পারবেন।
তারানা হালিম উল্লেখ করেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া যারা সিম নিবন্ধন করেছেন তাদের আগামী ১৫ মের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।
টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেসব সিম নিবন্ধন হয়নি এবং যেগুলো নিবন্ধনের জন্য (গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত) একবারও চেষ্টা করা হয়নি, সেসব সিম র্যানডমলি (দ্বৈবচয়ন ভিত্তিতে) ১ মে থেকে ৩ ঘণ্টা করে বন্ধ থাকবে। ৩১ মে’র পর যারা আগে এবং ওই সময়ের মধ্যে সিম নিবন্ধনের চেষ্টাও করেননি তাদের সিম একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। আর সময় বাড়ানো হবে না। আর এই সময়ের মধ্যে যারা এখনও সিম নিবন্ধন করতে পারেননি তাদের সিম নিবন্ধনের আহ্বান জানান।
গত ৩০ এপ্রিল বিকেলে তিনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এই কাজ শনিবার সকাল পর্যন্ত ৮ কোটি ৯০ লাখ সিম নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। এখন তা ৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে বলে আমরা মনে করি।
প্রসঙ্গত, দেশে বর্তমানে মোবাইলফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটি ৮ লাখ।
এদিকে ৩১ মে রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যেও সিম নিবন্ধন করা না হলে সেসব সিম জুনের ১ তারিখ থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। তখন আর কোনও সতর্কতাও করা হবে না। তবে মোবাইলফোন অপারেটররা স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়া সিমগুলো ১৫ মাস বিক্রি করতে পারবে না। এই সময়ের মধ্যে যারা প্রবাসী এবং শান্তিরক্ষী মিশনে রয়েছেন তারা যথাযথ প্রমাণপত্র দেখিয়ে সিম নিবন্ধন করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, প্রথম দফায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সিম নিবন্ধনের সময়সীমা নির্ধারণ করা থাকায় শেষ দুই দিন কাস্টমার কেয়ার সেন্টারগুলোতে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। এসময় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি গ্রাহক একসঙ্গে নিবন্ধনের চেষ্টা করায় ব্যান্ডউইথজনিত সমস্যা তৈরি হয়। ধীরগতি ভর করে সার্ভারে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় অনেক গ্রাহককে। তবে নিবন্ধনের সময় বাড়ায় তাদের মনে স্বস্তি নেমে আসে।
সোমবার রাজধানীর অন্তত তিন অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার এবং একাধিক খুচরা সিম বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সিম নিবন্ধন করতে আসা গ্রাহকের সংখ্যা কম। মিরপুর ১১ নম্বর বাস স্ট্যান্ডের সিম বিক্রেতা মোহাম্মদ পলাশ বলেন, আগে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৭০টি সিম নিবন্ধন করেছি, আজ সারাদিনে ১০টিও হয়নি। ৫-৬টা হবে হয়তো। পলাশ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, শেষ সময়ে আবারও ভিড় বাড়বে সিম নিবন্ধন প্রত্যাশীদের।
কাস্টমার কেয়ার সেন্টারেও সিম নিবন্ধন প্রত্যাশীদের উপস্থিতি ছিল কম।
/এইচএএইচ/এএইচ/