সজীব ওয়াজেদ জয়ের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ সিদ্দিককেও চিঠি দিয়ে ‘থ্রেট’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের যৌথ ইফতার মাহফিলে ইফতারপূর্ব এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, চিঠিতে বলা হয়েছে ‘তোর নানাকে মেরেছি, তোর মাকে ( শেখ রেহানা) মারবো, তোর খালাকে ( শেখ হাসিনা) মারবো, তোকেও মারবো।’ চিঠির এ ভাষা শুনে মনে হয়েছে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া একসময় তার বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ চান’, তার মানে আমাকে তারাই খুন করতে চান। অতীতে জয়ের বিরুদ্ধে এফবিআই অফিসারকে ঘুষ দিয়ে কিনে নিয়ে খতম করার ষড়যন্ত্রের বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
গুপ্তহত্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হুমকি-ধামকি দিয়ে কোনও লাভ নেই। মাদারীপুরে শিক্ষককে খুন করতে গিয়ে যে ছেলেটি ধরা পড়েছিলো সে শিবির নেতা। এখন আর কারও অবিশ্বাস করার কারণ নাই যে, গুপ্তহত্যা সুপরিকল্পিতভাবে হচ্ছে। গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস এগুলোর বিরুদ্ধে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। সোচ্চার হতে হবে সাংবাদিকদেরও।
তারেক জিয়াকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক কুলাঙ্গার বসে আছে লন্ডনে। ব্রিটিশ সরকার কেন যে তাকে জায়গা দিলো বুঝি না। তারা আদর দিয়ে তাকে বসিয়ে রেখেছে। সে যাওয়ার পরই ব্রিটিশ পার্লামেন্ট এমপি খুন হয়েছে। টিউলিপকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
টেলিভিশনে রাতের টক শো অনুষ্ঠানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাতের টক শোতে লাগাম ছাড়া কথাবার্তা বলা হয়। এখানে নিয়ম মানার কোনও বালাই নেই। অবশ্যই সমালোচনা করবেন, তবে সে সমালোচনা যাতে কল্যাণমূলক হয়, মঙ্গলের জন্য হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবসময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। পাশাপাশি গণমাধ্যমের সকলের কাছ থেকে দায়িত্বশীলতাও আশা করি। আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দিতে চাই। সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট করেছি, অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করেছি। একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নীতিমালা নয় বলেও জানান তিনি।
এসময় সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনটি দাবি জানান। দাবিগুলো হচ্ছে সাংবাদিকদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করা, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করা ও সমবায় সমিতি শক্তিশালী করা।
এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবম ওয়েজ বোর্ডের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমি তথ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি। আর আমি তো এখানে এসে এর আগেও আপনাদের বলেছি যে, আপনারা জায়গা খুঁজে বের করেন, আপনারা জায়গা খুঁজে না পেলে আমি কী করবো?
এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, বিএফইউজের (একাংশ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাফর ওয়াজেদ, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, ডিইউজের (একাংশ) সভাপতি শাবান মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী।
/পিএইচপি/এমও/এপিএইচ/