সর্বস্তরের জনগণের ভালোবাসা ও শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন গুলশান হামলায় নিহত দেশি-বিদেশিরা। দল মত নির্বিশেষে পুরো জাতি শ্রদ্ধা জানায় বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের। নিহতদের স্মরণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের দ্বিতীয় দিন সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে এই শ্রদ্ধা নিবেদনের আনুষ্ঠানিকতা হয়। প্রধানমন্ত্রী পায়ে হেঁটে শ্রদ্ধা নিবেদন মঞ্চে গিয়ে কফিনে ফুল দেন এবং কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এর আগে ভুটান সফরে থাকা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কালো পেড়ে সাদা শাড়ি পরিহিত ও বুকে কালো ব্যাচ ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী আর্মি স্টেডিয়ামে উপস্থিত নিহতদের স্বজনদের কাছে গিয়ে সমবেদনা জানান। এ সময়ে মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর গুলশান হামলায় নিহতদের দেশ ভারতের হাইকমিশনার এবং ইতালি, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতগণ শ্রদ্ধা জানান। এরপরে নিহত বাংলাদেশিদের স্বজন ও দায়িত্ব পালনকালে নিহত পুলিশ পরিবারের স্বজনেরা শ্রদ্ধা জানান।
এরপর ঢাকাস্থ অন্যান্য মিশনের রাষ্ট্রদূত ও তাদের প্রতিনিধি, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, ঢাকার দুই মেয়র, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীসহ অন্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
ঢাকায় বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও বিশিষ্টজনেরা নিহতদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এসময় মঞ্চে নিহত তিন বাংলাদেশির কফিন রাখা ছিলো। এর মধ্যে দুটি কফিন বাংলাদেশের পতাকায় মোড়ানো ও দ্বৈত নাগরিক অবিন্তা কবীরের কফিনটি বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকায় মোড়ানো ছিলো।
শ্রদ্ধা জানানোর সময় স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খাঁন কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক, দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিক্যাট, ইতালি ও জাপানের রাষ্ট্রদূত।
এছাড়া নিহতদের স্বজনেরাও উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাদেরকে সমবেদনা জানান। এ সময় স্বজনদের অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এরপর অন্যান্য দূতাবাসের প্রতিনিধি, দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন চলে বেলা ১২টা পর্যন্ত। এরপর নিহতদের স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন চলাকালে আর্মি স্টেডিয়ামের বাইরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শোক মিছিল করে। এসময় তাদের হাতে কালো পতাকা ও কালো ব্যানার ছিল। তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গি প্রতিরোধে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
ছবি: নাসিরুল ইসলাম
এপিএইচ/
আরও পড়ুন:
নিহতদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা, লাশ হস্তান্তর
গুলশান হামলা প্রসঙ্গে জয়: এই একবার আমরা ব্যর্থ হয়েছি
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক প্রকৌশলী হাসনাত করিমের ল্যাপটপ জব্দ