X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১
সংসদের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির সঙ্গে জঙ্গিদের গোপন যোগসূত্র আছে কিনা দেখতে হবে

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৭ জুলাই ২০১৬, ২৩:১৩আপডেট : ২৭ জুলাই ২০১৬, ২৩:১৯



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিদের জন্য বিএনপির এতো ‘দরদ’ কেন সেই প্রশ্ন তুলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রশ্ন করেন,  জঙ্গিরা নিহত হলে বিএনপি নেতাদের এতো কষ্ট কেন? এর পেছনে তাদের কোনও গোপন সূত্র আছে কিনা বা এরা ষড়যন্ত্রে  লিপ্ত কিনা এটা দেখতে হবে।
বুধবার জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ফ্রান্স, জার্মানি, আমেরিকা ও জাপানের জঙ্গি ঘটনার অবসানের উদাহরণ দিয়ে বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে হামলা হয়েছে কেউ কিন্তু জঙ্গিদের তুলে এনে কোলে করে-আদর করে পালা-পোষা করেনি। অন দ্য স্পট তাদেরকে মেরেছে। যেখানে ঘটনা ঘটেছে সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গিরা এনকাউন্টারে হত্যার শিকার হয়েছে বা হত্যা করা হয়েছে। জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় এটাই নিয়ম।
কল্যাণপুর ও গুলশানের ঘটনার তুলনা এবং কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গিদের নিয়ে বিএনপির দুই নেতা প্রশ্ন তোলার প্রসঙ্গ টেনে সংসদ নেতা বলেন, ওই ঘটনার পর বিএনপির দুই নেতা বক্তব্য দিয়ে কল্যাণপুরের নিহতরা জঙ্গি কিনা সেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাদের মনে এই সন্দেহ কেন যে তারা জঙ্গি কিনা। তারা গুলশানের ঘটনার সঙ্গে কল্যাণপুরের ঘটনা ‍তুলনা করেন। কোনও সুস্থ্য মস্তিষ্কের মানুষ এটাকে তুলনা করতে পারে না। আমার প্রশ্ন বিএনপি নেতাদের এই আহাজারি কেন? জঙ্গিদের জন্য তাদের এতো দরদটা কিসের? গুলশানে তারা যে ধরনের ব্যাগ ব্যবহার করেছে, যে ধরনের কাপড় বা জিন্সের প্যান্ট পরেছে কল্যাণপুরেও সেই ধরনের পোশাক পরেছে জঙ্গিরা। ওদেরও মাথায় একই ধরনের চাদর বাধা। তারপরও তাদের মনে কেন সন্দেহ বিষয়টা কী? এটাও একটা সন্দেহের ব্যাপার। তাদের কোথায় ঘা লাগল। কোথায় ব্যথা পেল। তাহলে তাদের উদ্দেশ্যটা কী, এই জঙ্গিদের সঙ্গে তাদের যোগসূত্রটা কী। এই প্রশ্নটা জাতির কাছে রেখে গেলাম- তারাই খুঁজে বের করবে।

গুলশান ও কল্যাণপুরের অপারেশন ভিন্নভাবে হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন,  গুলশানে জঙ্গিরা ঢুকে মানুষ হত্যা করেছে আর বাকিদের জিম্মি করেছে। সেখানে তাদেরকে উদ্ধার করা ও জঙ্গিদের দমন করার অপারেশনটা ভিন্ন ছিলো। সেখানে জঙ্গি দমনের অবশ্যই আমাদের ভিন্নপথ নিতে হয়েছে। আর  এখানে ( কল্যাণপুরে) একটি আস্তানা ছিলো। পুলিশ তাদের ঘিরে ফেলেছে। পুলিশের ওপর তারা গুলিও করেছে। একজন পুলিশ আহত হয়েছেন।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, পুলিশ যেখানে জঙ্গি দমনের চেষ্টা করে সেখানে যদি এভাবে প্রশ্ন তোলা হয়, পুলিশের কার্যক্রমকে যদি জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়, এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু নেই। আমাদের পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সারা রাত পরিশ্রম করে জঙ্গিদের ধরছে, তাদের মোকাবিলা করছে বা তাদের আঘাত করছে।

বিএনপি জামায়াতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২০১৩ ও ১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং ২০১৫ সালের তিন মাসের তাণ্ডবে মানুষ থমকে গিয়েছিল। এরপর শুরু হলো বেছে বেছে মানুষ খুন করা। অগ্নিসন্ত্রাসে মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলছে দেখে তারা ভিন্নপথ বেছে নিল। গুপ্ত হত্যা শুরু করলো। যখন যেখানে যে ধরা পড়ছে তদন্তে দেখা যাচ্ছে গোড়াটা এক জায়গায়ই পাওয়া যাচ্ছে। যখন সময় আসবে এগুলি আরও প্রকাশ হবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সুচিন্তিত পদক্ষেপ নিয়ে এগুচ্ছি বলেই বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ঠিক যে সময় বাংলাদেশর ভাবমূর্তি বিশ্বব্যাপী, বিদেশি বিনিয়োগ আসতে শুরু করেছে,  ঠিক সেই সময়ে ১ জুলাই গুলশানের রেস্টুরেন্টে কিছু জঙ্গি হামলা করে ২০ জনকে হত্যা করে এবং কিছু মানুষ জিম্মি করে। আমাদের পুলিশ বাহিনী কিন্তু বসে থাকেনি। তারা  সঙ্গে সঙ্গে ছুটে গিয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছেন। যেহেতু সেখানে কিছু ‍মানুষ জিম্মি ছিলো এজন্য পরবর্তী পদক্ষেপ আমাদের সুচিন্তিতভাবে নিতে হয়েছে। পরে আমরা সন্ত্রাস দমনের কমান্ডো এনে জিন্মি উদ্ধার করেছি। জঙ্গিদের সেখানে খতম করেছি।

কল্যাণপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, অনেকদিন আগ থেকে গোয়েন্দাদের কাছ থেকেই তথ্য পাচ্ছিলাম আরেকটি বড় ধরনের নাশকতা তারা করবে। সেই কথাটি এর আগেও আমি বলেছিলাম। এজন্য আমরা বিভিন্ন ব্লক অভিযান শুরু করেছি। যেখানে আমরা তথ্য পাচ্ছি সেখানেই অভিযান করছি। এই অভিযান চলাকালে কল্যাণপুরে জঙ্গিদের একটি আস্তানা পাওয়া যায়। সেখানে তাদের একটা প্রস্তুতি ছিলো কোথাও তারা হামলা করতে বের হবে। এই সময় যারা ব্লক রেইড করছিল বার বার খুঁজতে খুঁজতে এই আস্তানা পেয়ে যায়। এরপর ওদের ঘিরে ফেলে পুলিশ। ভেতর থেকে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা মারতে শুরু করে। বোমা মারার সময় তারা ‘আল্লাহ আকবর’ বলে।  ওখান থেকে দু’জন পালাতে চেষ্টা করে। একজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ধরা পড়ে এবং একজন পালিয়ে যায়। গোলাগুলিতে ৯জন জঙ্গি মারা যায়।

সময়মত আমাদের পুলিশ বাহিনী ব্যবস্থা না নিলে জঙ্গিরা অনেক বড় অঘটন ঘটাতে পারত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

 

 আরও পড়তে পারেন: ৬ মাস আগে ঘর ছাড়ে রাশিক

আরও পড়তে পারেন: নিহত ৯ জঙ্গির মধ্যে তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পরিবার

/ইএইচএস/এমএসএম/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
জিরোনার মাঠে বার্সেলোনার নাটকীয় হারে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
জিরোনার মাঠে বার্সেলোনার নাটকীয় হারে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
‘ফাইভ স্টার’ ম্যানসিটি, চার গোল হাল্যান্ডের
‘ফাইভ স্টার’ ম্যানসিটি, চার গোল হাল্যান্ডের
ঢাকায় পুনর্মিলন সেরে ক্যাঙ্গারুর দেশে...
ঢাকায় পুনর্মিলন সেরে ক্যাঙ্গারুর দেশে...
সর্বাধিক পঠিত
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
এডিবি কর্মকর্তা গোবিন্দ বরের বিরুদ্ধে বিশিষ্টজনদের হয়রানির অভিযোগ
এডিবি কর্মকর্তা গোবিন্দ বরের বিরুদ্ধে বিশিষ্টজনদের হয়রানির অভিযোগ