X
সোমবার, ২৭ মে ২০২৪
১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

যা আছে সাবমেরিন দু’টিতে

জামাল উদ্দিন
১২ মার্চ ২০১৭, ২২:৫৭আপডেট : ১৩ মার্চ ২০১৭, ১১:১২

  চীন থেকে আনা সাবমেরিন দু’টির নামফলক উন্মোচনের মুহূর্তটি উদযাপন করা হয় বহরের বিভিন্ন জাহাজ থেকে বেলুন উড়িয়ে ও রঙিন আতশবাজি পুড়িয়ে (ছবি- ফোকাস বাংলা) চীন থেকে এনে  দু’টি সাবমেরিন যুক্ত হওয়ায় ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হলো বাংলাদেশ নৌবাহিনী। শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করতে ০৩৫ জি ক্লাসের সাবমেরিন বানৌজা ‘নবযাত্রা’ এবং বানৌজা ‘জয়যাত্রা’য় থাকছে বেশ কিছু সুবিধা। এগুলো টর্পেডো ও মাইন দিয়ে সুসজ্জিত হওয়ায় শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনে আক্রমণ হবে খুবই সহজ। ডিজেল ইলেক্ট্রিক অ্যাটাক সাবমেরিন দু’টির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার ও প্রস্থ ৭.৬ মিটার। সাবমেরিন দু’টির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় প্রায় ১৭ নটিক্যাল মাইল এবং ডিসপ্লেসমেন্ট এক হাজার ৬০৯ টন। এ সাবমেরিনগুলো শত্রু জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণসহ বিশেষ যুদ্ধকালীন দায়িত্বও পালন করতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।

নৌবাহিনী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রকাশ্য শত্রুর চেয়ে অদৃশ্য শুত্রু বেশি ভয়ঙ্কর। তাই সাবমেরিন দু’টি যুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আরও বড় বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল। অনেক দেশের নৌবাহিনীতেই কোনও সাবমেরিন নেই। যা আগে আমাদেরও ছিল না। বানৌজা ‘নবযাত্রা’ এবং বানৌজা ‘জয়যাত্রা’ নামে সাবমেরিন দু’টি যুক্ত হয়ে এ বাহিনীকে আরও অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলেছে। সাবমেরিন দু’টিতে রয়েছে আধুনিক অস্ত্র টর্পেডো ও মাইন। এসব অস্ত্র জাহাজ থেকেও মারা যায়। সাবমেরিন থাকবে পানির নিচে।  সেটা দেখা যাবে না। সেজন্য এটি বেশি ভয়ঙ্কর। এখন সাবমেরিন থেকে পানির তলদেশ থেকেই টর্পেডো লোড করে শত্রুর জাহাজ লক্ষ করে আঘাত করা যাবে। ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে এ দু’টি সাবমেরিন তৈরি করে চীন।

গত বছরের ১৪ নভেম্বর সাববমেরিন দু’টি হস্তান্তরের আগে চীন ও বাংলাদেশের নৌবাহিনীর অফিসার ও নাবিকদের যৌথ তত্ত্বাবধানে বাস্তব প্রশিক্ষণ ও সি ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন করে বলে আইএসপিআর জানায়।  নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদের কাছে সাবমেরিন দু’টি তখন হস্তান্তর করেন রিয়ার অ্যাডমিরাল লিউ জিঝু। গত ২২ ডিসেম্বর সাবমেরিন দু’টি চট্টগ্রামে এসে পৌঁছে। রবিবার (১২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সেগুলো বাহিনীর কর্মকাণ্ডে যুক্ত করা হলো। নবযাত্রার অধিনায়ক হিসেবে কমান্ডার কে এম মামুনুর রশীদ এবং জয়যাত্রার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাজহারুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে কমিশনিং ফরমান নেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে ক্রুরা সাবমেরিনে ওঠেন।

আইএসপিআর আরও জানায়, আনুষ্ঠানিকভাবে এই সাবমেরিন দু’টি নৌবহরে অন্তর্ভুক্তির ফলে দেশের বিশাল জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর সার্বিক সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। একইসঙ্গে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ব্লকগুলোয় অধিকতর নিরাপত্তাসহ সার্বিকভাবে দেশের  ‘ব্লু-ইকোনমি’ উন্নয়নে এই সাবমেরিন দু’টি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

সামরিক বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নৌবাহিনীর যে দু’টি জাহাজ রয়েছে, সেগুলোতে হেলিকপ্টার বা বিমান রাখতে পারে। সেখান থেকে হেলিকপ্টার ও বিমান উড়ে গিয়ে আক্রমণ করতে পারে। জলপথেও শত্রুর ওপর আক্রমণ চালাতে পারছে। এ দু’টি সাবমেরিন যুক্ত হওয়ায় পানির ভেতর দিয়ে শত্রুর ওপর আক্রমণ চালানো সম্ভব হবে। শত্রুর জাহাজ ধ্বংস করার জন্য এটি নতুন মাত্রা। এতে সমুদ্র সীমায় বাংলাদেশের সক্ষমতা আরও বাড়লো। সমুদ্রসীমা রক্ষার জন্য আমাদের আরও যোগ্য করে তোলা হলো।

 আরও পড়ুন:  যত রকমের যুদ্ধাস্ত্রের প্রয়োজন বাংলাদেশ তা সংগ্রহ করবে: প্রধানমন্ত্রী

 

/এমএনএইচ/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাতক্ষীরায় চলছে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তীব্র তাণ্ডব
সাতক্ষীরায় চলছে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তীব্র তাণ্ডব
কৃতীজন সংবর্ধনা দিলো চট্টগ্রাম সমিতি
কৃতীজন সংবর্ধনা দিলো চট্টগ্রাম সমিতি
ডুবে গেছে ভোলার অনেক এলাকা, বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
ডুবে গেছে ভোলার অনেক এলাকা, বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
আইপিএলে কার হাতে কী পুরস্কার উঠলো!
আইপিএলে কার হাতে কী পুরস্কার উঠলো!
সর্বাধিক পঠিত
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পায়রা ও মোংলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পায়রা ও মোংলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেলো সুন্দরবন
জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেলো সুন্দরবন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
কখন উপকূল অতিক্রম করতে পারে ‘রিমাল’?
কখন উপকূল অতিক্রম করতে পারে ‘রিমাল’?
ধানমন্ডিতে হকারদের সড়ক অবরোধ
ধানমন্ডিতে হকারদের সড়ক অবরোধ