বনানীতে দুই তরুণীর ধর্ষণের ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হকের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যে মুহূর্তে পুলিশ আসামি গ্রেফতারে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে এ ধরনের মন্তব্য তদন্তকারী সংস্থা তথা বাংলাদেশ পুলিশকে হেয় প্রতিপন্ন করার শামিল।’
মঙ্গলবার (৯ মে) খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছিলেন, ‘ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার এক মাস পরও পুলিশ কিছু জানলো না, তারা কোনও কিছুই করতে পারল না, তাহলে আমাদের জন্য পুলিশের প্রয়োজনটা কী?’ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার তার প্রতিবাদ লিপিতে বলেন, ‘গত ৪ মে বনানী থানায় উপস্থিত হয়ে বাদী গত ২৭ মার্চ দিবাগত রাতে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে মর্মে কর্তব্যরত অফিসারকে অবহিত করেন। ধর্ষণের মত স্পর্শকাতর একটি অপরাধের অভিযোগ ৩৭দিন পর থানাকে অবহিত করায় ঘটনার সত্যতা ও বাস্তবতা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন দেখা দেয়। আইনের মূলনীতি হচ্ছে প্রকৃত অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি নিরপরাধ কোনও ব্যক্তি যাতে শাস্তি না পায় বা হয়রানি না হয় তার নিশ্চয়তা বিধান করা। ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের আলোকেই মামলা দায়েরে দেরি হয়। ঘটনাটির বাস্তবতা ও সত্যতা সম্পর্কে প্রাথমিক তদন্তের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বনানী থানা পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় গত ৬ মে নিয়মিত মামলা নথিভুক্ত করে।’
তিনি প্রতিবাদ লিপিতে আরও বলেন, ‘মামলা রুজু হওয়ার পর থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও ছায়া তদন্ত শুরু করে। বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত ও দ্রুত আসামি গ্রেফতারের লক্ষ্যে বর্তমানে মামলাটির তদন্তভার উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগে ন্যাস্ত করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ, অপরাধ বিভাগ ও উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সমন্বয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সামর্থ দিয়ে আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
প্রতিবাদ লিপিতে আরও বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস দমনসহ ধর্ষণ-খুন, রাহাজানিসহ বিভিন্ন অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সাফল্য সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছে। তখনই আলোচ্য ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এ ধরনের বাস্তবতা বিবর্জিত মন্তব্য পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করতে পারে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের কাছে বাস্তব ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করে।’
/জেইউ/এফএস/
আরও পড়ুন-