চলতি মৌসুমে হজ অব্যবস্থাপনার জন্য সরকারকে দুষছে হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন ‘হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ (হাব)। রবিবার দুপুরে হজ ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে হাব মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম হজ অব্যবস্থানার জন্য ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়,বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়,সৌদি আরব,হজ সংশ্লিষ্ট্ ব্যাংককে দায়ী করেন।
হাব মহাসচিব বলেন, ‘ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজযাত্রী প্রতি ৩০০ টাকা প্রশিক্ষণ জন্য গ্রহণ করে। এ বছর এই খাতে সর্বসাকুল্যে ৩ কোটি ৮০ লাখ গ্রহণ করেছে। বিনিময়ে কোনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। এতে হজযাত্রীদের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়।’
হজ ফ্লাইট বাতিলের জন্য ৬টি কারণ উল্লেখ করেন শাহাদাত হোসাইন তসলিম। তিনি বলেন, ‘হজ ফ্লাইট বাতিল হওয়ার জন্য অনেকেই হাবকে দায়ী করে ছিলেন। হজ ফ্লাইট বাতিলের কারণগুলো হলো, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে মোয়াল্লেম ফি প্রদান করা, সৌদি সরকার কর্তৃক আকস্মিকভাবে ২ হাজার সৌদি রিয়াল চার্জ ধার্য করা, শুরু থেকে ই-ভিসা প্রিন্টিংয়ের জটিলতা, ৯১ হজ এজেন্সির সময় মতো মোয়াল্লেম না পাওয়া, মদিনায় ৮ দিনের থাকার বিধান মানার কারণে ফ্লাইটের তারিখ পছন্দের বাধ্যবাধকতা এবং শুরুর দিকে ৩ হাজার টাকা ভাড়া বৃদ্ধি। এসব বিষয় এবারে হজযাত্রায় প্রভাব ফেলে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রসঙ্গে শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘হজ এজেন্সির দায়িত্ব হজযাত্রীদের সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া। ৪২-৪৫ দিনের আগের প্যাকেজে আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থাসহ সব সুবিধা নিশ্চিত করা। হজ নীতমালার কোথাও এজেন্সিদের বলা হয়নি যে এজেন্সিগুলো তাদের হজযাত্রীদের প্রথম দিকে,মাঝের দিকে বা শেষের দিকে নিয়ে যেতে হবে। হজ যাত্রীদের আসা যাওয়ার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা রয়েছে সৌদি আরবের আইন অনুসারে। তাই হজ ফ্লাইটের শিডিউল নির্ধারণ উচিত এই সৌদি আরবের বাধ্যবাধকতা আমলে নিয়ে। ফ্লাইট শিডিউল নির্ধারণে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে চাইলেও তথ্য গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উৎসাহ দেখা যায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হজ প্যাকেজ নির্ধারিত বিমান ভাড়ার থেকে হজ ফ্লাইটের সন্ধিক্ষণে অতিরিক্ত ৩ হাজার টাকা ভাড়া বৃদ্ধির প্রয়াস গ্রহণ করা হয়। এটও হজযাত্রী সংকটের একটি কারণ। যদিও প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে এ সমস্যা নিরসন করা হয়।’
হাব মহাসচিব বলেন বলেন, ‘প্রতিবছর মোয়াল্লেম ফি ধর্ম মন্ত্রণালয় কর্তৃক গ্রহণ করে সৌদি আরবে প্রেরণ করার ব্যবস্থা করা হতো। মোয়াল্লেম ফি সৌদি আরবে প্রেরণের বিষয়ে হজ এজন্সিগুলোর কোনও দায় দায়িত্ব ছিল না। কিন্তু এ বছর ধর্ম মন্ত্রণালয় জানায়,যে মোয়াল্লেম ফি নিজ নিজ এজেন্সি তাদের আইবিএএন এর মাধ্যমে সৌদি আরবে প্রেরণ করতে হবে। বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত কাজ শুরু করার প্রথম শর্ত আইবিএএন অ্যাকাউন্ট করা এবং এ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মোয়াল্লেম ফি স্থানান্তর করা। কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয় ২৪ ফেব্রুয়ারি মোয়াল্লেম ফি এর টাকা গ্রহণ করে এবং ৩০ জুনের মধ্যে বাড়ি ভাড়া করতে এজন্সিদের বাড়ি ভাড়া সম্পন্ন করতে তাগাদা দেয়। ৩০ জুনের মধ্যে বাড়ি ভাড়া করতে হলে এজেন্সিদের অনুকূলে ১৫ মে’র মধ্যে মোয়াল্লেম ফি’র টাকা ফেরত দেওয়া সংগত ছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হাব বারবার চিঠি দিলেও এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি।’