X
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪
২৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘যে কোনোভাবে’ বিদেশ যেতে চান বাংলাদেশিরা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:১৫আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৯:৩৮

অভিবাসনের চ্যালেঞ্জ বিষয়ক গবেষণা কোনও বিষয়ে দক্ষতা অর্জন না করে অথবা বিনা ট্রেনিংয়ে যে কোনোভাবে বিদেশ যেতে পারলেই হয়—এমন প্রবণতা বেশি বাংলাদেশিদের মধ্যে। বিদেশে কাজ করতে গেছেন বা যেতে চান এমন লোকদের ওপর পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় এই গবেষণা পরিচালিত হয়।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। আইওএম-এর সহায়তায় অভিবাসনের প্রবণতা ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ক এ গবেষণা পরিচালনা করেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞ হাসান ইমাম ও আসিফ মুনির। গবেষকরা জানান, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়।

গবেষণায় দক্ষতার মাপকাঠিতে বাংলাদেশি অভিবাসীদের চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো, অদক্ষ, আধাদক্ষ, দক্ষ এবং প্রফেশনাল। কিন্তু বিদেশ গমনেচ্ছু বেশিরভাগ বাংলাদেশি নাগরিকই দক্ষতা অর্জন না করে কিংবা বিনা ট্রেনিংয়ে বিদেশে পাড়ি জমানোর মানসিকতা রাখেন বলে গবেষকরা দাবি করেছেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরুষ অভিবাসী কর্মীরা পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে অভিবাসনের পথ বেছে নেন। এছাড়া নিজ দেশে কর্মসংস্থানের অভাব, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে সুরক্ষিত কর্মসংস্থান না থাকা এবং বিদেশে উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করার সুযোগ থাকায় তারা অভিবাসনে আগ্রহী হন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য অর্থ সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে তাদের বেশিরভাগ বিদেশ যান। আর নারী কর্মীদের অনেকে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ কিংবা স্বামীর মৃত্যুর পর নিজ দেশে অর্থ আয়ের কোনও সুযোগ না পাওয়ায় বিদেশ যেতে বাধ্য হন। এছাড়া প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র নারীদের বেশিরভাগই মধ্যস্বত্বভোগীদের দ্বারা বিভ্রান্তির শিকার হন।

এতে আরও বলা হয়, শ্রম অভিবাসনের জটিল প্রক্রিয়া অভিবাসী কর্মীদের স্বপ্ন পূরণে প্রধান প্রতিবন্ধকতা। এর সঙ্গে আছে উচ্চ অভিবাসন ব্যয়।

অভিবাসন ব্যবস্থায় সচেতনতার অভাব রয়েছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অভিবাসন প্রত্যাশীরা যথেষ্ট সচেতন নন বলেই অভিবাসনের প্রভাব সম্পর্কে তারা জানেন না। অন্যদিকে অভিবাসন সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতনতা দেখা গেছে শহর এবং তার আশপাশের এলাকার অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে। তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তারা জানেন না কোথায় তথ্য পাওয়া যাবে।

এছাড়া গবেষণায় দেখা যায়, নারী কর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, নির্যাতন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে ফিরে এসে পুরুষ কর্মীরাও বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে নারী কর্মীদের যাওয়া উচিত না।

অভিবাসন ব্যয় প্রসঙ্গে এই গবেষণায় বলা হয়, দক্ষতার ভিত্তিতে এবং দেশভিত্তিক সরকার নির্ধারিত অভিবাসন খরচ আছে। কিন্তু পুরুষ ও নারী কর্মীদের জন্য খরচ নির্দিষ্ট করা নেই। এছাড়া মানুষ দেড় লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাত লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করে বিদেশ যায়। অভিবাসন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ভিসা ট্রেডিং।

গবেষণার জন্য জরিপ চালানো হয় ১২৫ জনের ওপর। এরমধ্যে বিদেশ ফেরত ও অভিবাসন প্রত্যাশী ৩৯ জন পুরুষ, বিদেশ ফেরত ও অভিবাসন প্রত্যাশী নারী ২৩ জন, শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ থেকে ফেরত আসা পুরুষ কর্মী ১৫ জন, মধ্যস্বত্বভোগী বা দালাল দুই জন, অভিবাসী কর্মী পাঁচ জন, অভিবাসন নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছয় জন, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব পাঁচ জন, এছাড়া অন্যান্য ২০ জন, যারা বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন।

/এসও/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের সদস্য করার পক্ষে ভোট দিলো সাধারণ পরিষদ
ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের সদস্য করার পক্ষে ভোট দিলো সাধারণ পরিষদ
কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের বিস্ময় জাগানিয়া দল
কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের বিস্ময় জাগানিয়া দল
দেহরক্ষীদের প্রধানকে বরখাস্ত করলেন জেলেনস্কি
দেহরক্ষীদের প্রধানকে বরখাস্ত করলেন জেলেনস্কি
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ ওভারে রোমাঞ্চ দেখলেন দর্শকরা 
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ ওভারে রোমাঞ্চ দেখলেন দর্শকরা 
সর্বাধিক পঠিত
২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক
২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক
চীন বিষয়ে বিশেষজ্ঞকে ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
চীন বিষয়ে বিশেষজ্ঞকে ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
একই গ্রাম থেকে নির্বাচিত হলেন তিন চেয়ারম্যান
একই গ্রাম থেকে নির্বাচিত হলেন তিন চেয়ারম্যান
প্রশ্নফাঁস: বিমানের ডিজিএমসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র
প্রশ্নফাঁস: বিমানের ডিজিএমসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র
দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে উদ্বেগ কতটা?
দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে উদ্বেগ কতটা?