X
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫
২২ আষাঢ় ১৪৩২

‘দুই সিটি নির্বাচনে একজনের ভোট আরেকজন দেওয়ার অভিযোগ আছে’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:৪০আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:৪৫

‘দুই সিটি নির্বাচনে একজনের ভোট আরেকজন দেওয়ার অভিযোগ আছে’ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এই ঘটনা ব্যাপকহারে থাকলেও কোথাও বাধা দেওয়ার ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বিজয়ীদের তথ্য উপস্থাপন ও নির্বাচন মূল্যায়ন শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সুজন। বিস্তারিত প্রতিবেদন তুলে ধরেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়ার বিষয়টি এই নির্বাচনের বহুল আলোচিত বিষয়। ইভিএম সম্পর্কে আগে থেকেই আলোচনা হচ্ছিল যে, যদি নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ না হন, তবে একজন ভোটারের ভোট আরেকজন দিয়ে দিতে পারে। যেটি এই নির্বাচনে ঘটেছে।
দিলীপ কুমার বলেন, এর অর্থ কি এই যে, নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন? ইভিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে দু’জন করে সহায়ক থাকার কথা ছিল। তারা তবে কী করলেন? এই জায়গাটি যদি ঠিক না করা যায় তবে কখনোই আমাদের নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ তথা সুষ্ঠু করা যাবে না।


৯৪ শতাংশ মানুষ বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি
সুজনের পক্ষ থেকে করা ফেসবুক জরিপে জানা গেছে, ৯৪ শতাংশ জনগণ বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। এই বিষয়ে সুজন বলছে, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন কেমন হলো, তা জানতে নির্বাচনের পর সুজনের ফেসবুক পেজে একটি অনলাইন ভোটের ব্যবস্থা করা হয়। এতে চার হাজার ৩০০ জন মানুষ অংশ নেয়। যারা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাদের ৯৪ শতাংশ বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। যদিও অনলাইন ভোট বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নয়, এটি জনসাধারণের ধারণার অনেকটা ইঙ্গিত বহন করে।
দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন বিশ্লেষকের মতামত এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে যেসব বিষয় উঠে এসেছে তার সঙ্গে বেশি দ্বিমতের কোনও সুযোগ নেই।
স্বল্প ভোটার উপস্থিতি বিষয়ে সুজন বলেছে, এই নির্বাচনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল স্বল্প ভোটারের উপস্থিতি। আমরা মনে করি, ভোটারের উপস্থিতি কম হওয়ার কারণগুলো হলো- নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর ভোটারদের আস্থা না থাকা। অর্থাৎ ভোট সুষ্ঠু হবে না এ ধরনের পূর্ব ধারণা। এছাড়া ইভিএম সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচার ও ইভিএম’র ওপর আস্থা না থাকা, দলগুলোর পাল্টাপাল্টি হুমকির কারণে শঙ্কিত হয়ে ভোটারদের কেন্দ্রবিমুখ হওয়া, পাড়া-মহল্লা ও ভোটকেন্দ্র পাহারা এবং ভোটকেন্দ্রের বাইরে সরকারদলীয় কর্মী-সমর্থকদের জটলা ও মহড়া, আঙুলের ছাপ না মেলায় কিছু কিছু ভোটার ভোট না দিয়েই ফিরে যাওয়া, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়ার বিষয়টি প্রচার হওয়া, ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের মধ্যে ভোটকেন্দ্রে না গেলেও তাদের প্রার্থী জয়ী হবেই এমন ধারণায় বদ্ধমূল থাকা, প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের মধ্যে শঙ্কা ও ‘তাদের প্রার্থী জিততে পারবে না’ এমন ধারণা সৃষ্টি হওয়া। তাছাড়া যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকা ও একসঙ্গে দুই দিন ছুটি থাকাও ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার অন্যতম কারণ।
শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অশান্তির চেয়েও ভয়াবহ
সুজন বলছে, একটি প্রচার আছে যে, এই নির্বাচন ছিল শান্তিপূর্ণ। আমরা মনে করি, এই শান্তি অশান্তির চেয়েও ভয়াবহ। কারণ, ভয়ের সংস্কৃতির কারণে কেউ যদি অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সাহস না পায়, তবে সেই অন্যায়ের প্রতিকার পাওয়া দুষ্কর। ব্যাপক অনিয়ম হওয়ার পরেও যদি সেই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়, তবে বুঝতে হবে প্রতিপক্ষ এখানে চরম দুর্বল।
নির্বাচনের মাঠে অনিয়ম নিয়ে বিএনপির প্রতিবাদ ছিল না
বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তের পর, বার বার তারা ভোটারকে জানান দিয়েছে যে, বিএনপি মাঠ ছাড়বে না। তারা ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার কথা বলেছে। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি তারা অনিয়মের অভিযোগও করেছে। কিন্তু কোথাও অনিয়মের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদী হতে দেখা যায়নি। তাদের মনে রাখতে হবে, বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাতেই একটি রাজনৈতিক দলকে জনগণের মধ্যে অবস্থান তৈরি করে নিতে হয়।
সুজনের সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, এই নির্বাচনে কমিশনের সামর্থ্য প্রমাণের সুযোগ ছিল। কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। এটি স্পষ্ট যে, সামগ্রিকভাবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন ছিল ‘নিয়ন্ত্রিত’ নির্বাচন। তবে অতীতের তুলনায় নিয়ন্ত্রণের ধরন ছিল কিছুটা ভিন্ন।

বেশি ভোট পড়া কোনও কেন্দ্রে জিতেনি তাবিথ-ইশরাক
বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬১-৭০ শতাংশ ভোট পড়া কেন্দ্রগুলোর মধ্যে আতিক ২৩টি কেন্দ্রে জিতেছেন যেখানে তাবিথ কোনও কেন্দ্রে জিতেনি। অন্যদিকে তাপস ৭টি কেন্দ্রে জিতেছেন এবং ইশরাক একটি কেন্দ্রেও জিতেননি। ৭১-৮০ শতাংশ ভোট পড়া কেন্দ্রগুলোতে আতিক জয়লাভ করেছেন ৬টিতে ও তাপস জিতেছেন ৭টি কেন্দ্রে। অন্যদিকে তাবিথ ও ইশরাক একটি কেন্দ্রেও জিতেননি।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বাড়ছে। সম্পদশালী ব্যক্তিরা বেশি হারে নির্বাচিত হচ্ছেন। অন্যদিকে স্বল্প শিক্ষিতের হার বাড়ছে, যা রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত। এই নির্বাচন কমিশনের জন্য অগ্নিপরীক্ষা ছিল। তারা এই পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। অনেকগুলো অভিযোগ এসেছে এগুলা তদন্ত হওয়া দরকার।

/এসও/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (৬ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (৬ জুলাই, ২০২৫)
গ্রিন-স্মিথের ফিফটিতে গ্রেনাডায় স্বস্তিতে অস্ট্রেলিয়া
গ্রিন-স্মিথের ফিফটিতে গ্রেনাডায় স্বস্তিতে অস্ট্রেলিয়া
ইনজুরি টাইমের নাটকীয়তায় ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালে রিয়াল
ক্লাব বিশ্বকাপইনজুরি টাইমের নাটকীয়তায় ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালে রিয়াল
শিগগিরই চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে: খাদ্য উপদেষ্টা
শিগগিরই চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে: খাদ্য উপদেষ্টা
সর্বাধিক পঠিত
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন
সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন
কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া এসআই
কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া এসআই
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল