X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

রেমিট্যান্সের নিম্নগামিতা ঠেকাতে দরকার বৈশ্বিক পদক্ষেপ

শেখ শাহরিয়ার জামান
১১ আগস্ট ২০২০, ০০:০৮আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২০, ০১:০২

 

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক, ছবি: সংগৃহীত কোভিড-১৯-এর কারণে ব্শ্বিব্যাপী মন্দা অবস্থা দেখা দিয়েছে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি রেমিট্যান্স আয়েও এর প্রভাব পড়েছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর বৈশ্বিক রেমিট্যান্স প্রবাহ ২০ শতাংশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ২২ শতাংশ হ্রাস পাবে। এই প্রেক্ষাপটে রেমিট্যান্সকে জরুরি সেবা হিসেবে ঘোষণা করে এটি পাঠানোর ক্ষেত্রে খরচ কমানোর ওপরে জোর দিয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো মোহাম্মাদ শহীদুল হক। তার বিবেচনায় এটি অভিবাসন সমস্যা এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হলে প্রথমে এই সমস্যা সমাধানের জন্য বৈশ্বিক সংলাপের প্রয়োজন। এর জন্য বাংলাদেশ ও সমমনা দেশগুলোকে পদক্ষেপ নিতে হবে। আন্তর্জাতিক ফোরামসহ সব জায়গায় জোরালো কণ্ঠে নিজেদের অবস্থান উপস্থাপন করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মাদ শহীদুল হক বলেন, ‘অভিবাসন ও রেমিট্যান্স নির্ভর করে— যে দেশে অভিবাসীরা কাজ করেন, সে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, আন্তর্জাতিক অভিবাসন ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার ওপর।’

বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়েছে ও হচ্ছে। এ কারণে অভিবাসীদের কাজ করার ক্ষেত্র সংকুচিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

শহীদুল হক বলেন, ‘অভিবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য যেসব দেশে তারা কর্মরত ওইসব দেশের সরকার, চাকরিদাতাদের পাশাপাশি আরও যারা জড়িত, তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন আছে।’

উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘রেমিট্যান্স পাঠানোর একটি খরচ আছে। যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান রেমিট্যান্স পাঠায়, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে টাকা পাঠানোর খরচ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।’

রেমিট্যান্সকে অভিবাসন সংলাপের সঙ্গে যুক্ত করার পরামর্শ দিয়ে শহীদুল হক বলেন, ‘যদি টাকা পাঠানোর খরচ কমে যায়, তবে বৈধ পথে আরও অধিক পরিমাণে অর্থ আসবে, যা সামগ্রিক রেমিট্যান্স পাঠানোর নিম্নগতিকে কিছুটা হলেও পূরণ করবে।’

২০৩০ এজেন্ডা বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ভিশনের অন্যতম একটি টার্গেট হচ্ছে রেমিট্যান্স ব্যয় কমানো। এটি তখনই সম্ভব হবে যখন সরকার, বহুজাতিক অর্থ প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফোন অপারেটর ও অন্যান্য জড়িতরা একসঙ্গে সংলাপে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে বলে তিনি জানান।

অভিবাসনের ক্ষেত্রে যে গ্লোবাল কমপ্যাক্ট হয়েছে সেটিতে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিয়েছিল। এখন সামগ্রিক অভিবাসন ব্যবস্থায় একটি ভারসাম্য আনার জন্যও বাংলাদেশকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে বলে মনে করেন এই সাবেক পররাষ্ট্র সচিব।

বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ

২০২০ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ স্বাভাবিক থাকলেও মার্চ থেকে মে পর্যন্ত প্রবাহ কমে যায়। এই তিন মাসে মোট রেমিট্যান্স আসে ৩৮৭ কোটি ডলার। ২০১৯ সালের ওই তিন মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ৪৬৪ কোটি ডলার। কিন্তু ২০২০-এর জুন ও জুলাই মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে এবং এর পরিমাণ হচ্ছে ৪৪৩ কোটি ডলার। ২০১৯ সালের জুন ও জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৯৭ কোটি ডলার।

এ বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, ‘এটি একটি স্বাভাবিক প্রবণতা। বাংলাদেশ, মেক্সিকোসহ আরও অনেক দেশ এখন রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাচ্ছে।’

এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, দুর্যোগকালে অভিবাসীরা সব সঞ্চয় নিজের দেশে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে অনেকে চাকরি হারানোর কারণে যা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন সেটিও পাঠিয়ে দিচ্ছেন।’

তবে এই প্রবণতা সামনের দিনগুলোতে কমে আসবে, এই আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘কাজ করার ক্ষেত্র সংকুচিত হওয়ার কারণে রেমিট্যান্স আয় কমবে।’

/এসএসজেড/এপিএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী