X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

নগরসভায় নেই নাগরিকের প্রবেশাধিকার!

শাহেদ শফিক
২৪ নভেম্বর ২০২০, ১৫:০০আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২১, ১৮:০৬

স্থানীয় সরকার সিটি করপোরেশন আইনের ৫৪ ধারার শিরোনাম ‘করপোরেশনের সভায় জনসাধারণের প্রবেশাধিকার’-এ বলা হয়েছে, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরগণের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করপোরেশনের কোনও সভা একান্তে অনুষ্ঠিত না হইলে উহার প্রত্যেক সভা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকিবে। করপোরেশন প্রবিধান দ্বারা উহার সভায় জনসাধারণের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে।’ কিন্তু যে সভায় নগরবাসীর সেবার মান নির্ধারণ করা হয় সেই সভায় নেই সেই নাগরিকদের প্রবেশাধিকার!

উত্তর সিটি করপোরেশনের বোর্ড সভায় উপস্থিত কাউন্সিলররা

সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো তাদের করপোরেশন বা পৌরসভায় নাগরিকদের প্রবেশাধিকার মানছে না। অনেক সিটি করপোরেশন জানেই না এ আইনের কথা। আবার কেউ কেউ মনে করেন আইনে থাকলেও নাগরিকদের এমন অধিকার দেওয়া উচিত হবে না! অবশ্য কোনও মেয়র বিষয়টি জানার পর এ নিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সরকার যেভাবে জাতীয় সংসদের অধিবেশনের মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের জন্য বাজেট, প্রকল্প গ্রহণ ও আইন প্রণয়নসহ অন্যান্য সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তেমনি এলাকার বাসিন্দাদের জন্য নগরসভায় সেটা করে থাকে। সংসদে তার সদস্যদের বাইরে বিশেষ গ্যালারিতে নাগরিকদের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। কিন্তু করপোরেশন সভায় শুধু মেয়র, কাউন্সিলর এবং পৌরসভার কর্মকর্তারা অংশ নিলেও নাগরিকদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে না।

আইন কী বলে?

স্থানীয় সরকার সিটি করপোরেশন আইনের ৫৪ ধারার শিরোনাম ‘করপোরেশনের সভায় জনসাধারণের প্রবেশাধিকার’-এ বলা হয়েছে, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরগণের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করপোরেশনের কোনও সভা একান্তে অনুষ্ঠিত না হইলে উহার প্রত্যেক সভা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকিবে। করপোরেশন প্রবিধান দ্বারা উহার সভায় জনসাধারণের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে।’

এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা মূলত নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতে যেন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। নাগরিকরা তাদের এলাকার সমস্যা, সম্ভাবনা, অভিযোগ বা সুপারিশ তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। এতে করে করপোরেশনের সঙ্গে নাগরিকদের সরাসরি সংযোগও থাকবে।

পৌরসভা আইনের ৫৭ ধারার শিরোনাম ‘সভায় নাগরিকগণের উপস্থিতি’। এই ধারায় বলা হয়েছে—‘কোনও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি বা কোনও নাগরিক বা নাগরিকবৃন্দ ইচ্ছা প্রকাশ করিলে তাহাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিষদ বা ইহার স্থায়ী কমিটি বা অন্য কোনও কমিটি সংশ্লিষ্ট সভায় উপস্থিত থাকিবার অনুমতি দিতে পারিবে এবং কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে তাহাদের মতামত গ্রহণ করিয়া যথাযথ হইলে উক্ত মতামতের আলোকে সিদ্ধান্ত বা সুপারিশমালা গ্রহণ করিতে পারিবে।’

 নাগরিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এ যাবৎ রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে (উত্তর ও দক্ষিণ) যেসব করপোরেশন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে তার কোনোটিতেই নাগরিক বা তাদের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ডিএসসিসির সচিব বিষয়টি জানতেনই না। সংস্থাটির সচিব আকরামুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আইন তো পুরোটা পড়েছি। এমন কোনও ধারা রয়েছে বলে আমার জানা নেই।’

পরে আইনটি পড়ে দেখে বলেন, ‘খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয়। জানা ছিল না। অতীতেও এমন বিষয় চালু ছিল বলে আমার জানা নেই। বিষয়টি যেহেতু নজরে এসেছে মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করবো। তবে এখন যেহেতু করোনা পরিস্থিতি, সে কারণে এই মুহূর্তে এ ধরনের সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না।’

ঢুকতে দেওয়া হয়নি পঞ্চায়েত সদস্যকে

পুরান ঢাকার পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য হাজী গিয়াস উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আইনে আছে দেখে আমি একবার বোর্ডসভায় প্রবেশ করতে চেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এলাকার কিছু দাবি তুলে ধরবো। কিন্তু সভার প্রবেশপথে আমাকে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা ফিরিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে একদিন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি সোজা জানিয়ে দেন এমন কোনও ব্যবস্থা তাদের নেই।‘

উদ্যোগ নেবেন ডিএনসিসি মেয়র

এ প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অতীতে কোনও করপোরেশন সভায় নাগরিকদের ডাকা হয়নি। সেই ধারাবাহিকতা এখনও চলে আসছে। আমি এখন থেকে প্রতিটি সভায় কিছু নাগরিক অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা সেটা দেখবো। বোর্ডসভা ছাড়াও অন্যান্য সভা নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত রাখতে পারি। বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হবে।’

বাস্তবায়ন চান চট্টগ্রামের প্রশাসকও

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের দেশে এখনও সেই অবস্থা বিকশিত হয়নি। নাগরিকদেরও সেই ধারণা তৈরি হয়নি। বিভিন্ন সংস্থা এখনও এমনটা চিন্তাই করতে পারছে না। আমার মনে হয় আইনে যা রয়েছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

সুযোগ দেওয়া উচিত নয়!

ভিন্নমত পোষণ করেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। তার মতে আইনে থাকলেও এ ধরনের সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “তার মতে এ ধরনের সভায় নাগরিকদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হলে সেখানে যে একটা ‘ভাব গাম্ভীর্য’ রয়েছে সেটা থাকবে না। আর এখানে এমন কোনও আলোচনা হয় না যেটা গোপনীয় বিষয়। আর আমাদের প্রেক্ষাপটে এই সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না।’

গণমাধ্যমকর্মীরাও উপেক্ষিত

শুধু নাগরিক নয়, এখন বোর্ডসভায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশাধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আগে দক্ষিণ সিটির বোর্ডসভায় সাংবাদিকদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হতো। তখন সভায় উপস্থিত থেকে সংবাদ সংগ্রহ করতে পারতেন সাংবাদিকরা। এখন তা হয় না।’

অভিযোগ জানাবে কোথায়?

কথা ছিল বোর্ড সভায় নাগরিকরা তাদের অভিযোগ উত্থাপন করবেন। কিন্তু সেই সুযোগ রাখা হয়নি। নাগরিক সমস্যা নিয়ে নগর কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করার কোনও সুযোগ রাখা হয়নি। স্থানীয় কাউন্সিলররাও নাগরিকদের কোনও অভিযোগ নেন না। ফলে সেবা পাওয়ার জন্য দরজায় দরজায় ঘুরতে হয় নগরবাসীকে। এই অবস্থায় বিগত সময়ে ডিএসসিসির সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন প্রতিনিধি ওয়ার্ডে সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী সংস্থাগুলোকে নিয়ে ‘জনপ্রতিনিধি জনতার মুখোমুখি’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠান করতেন। সেই সভায় নাগরিকদের অভিযোগ শুনে ব্যবস্থা নিতেন। পরবর্তীতে সেই সভার কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়।

তবে কলকাতা, কুয়ালালামপুর ও সিঙ্গাপুর সিটিসহ বিভিন্ন সিটি করপোরেশনের বোর্ড বা করপোরেশন সভায় সরাসরি নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর বিশেষজ্ঞরা। কলকাতা শহরে বোর্ড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটসের পাশাপাশি বোরো কো-অর্ডিনেটর ও ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর কমিটি রয়েছে। বোর্ড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটসের সভায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি সিদ্ধান্তে নাগরিকদের সরাসরি মতামত গ্রহণের পাশাপাশি সম্পৃক্ত করা হয়।

ইতিহাস

মোঘল আমল ১৮২৩ সালে নগর উন্নয়নে গঠন করা ‘কমিটি অব ইমপ্রুভমেন্ট’ থেকে শুরু করে ১৮৪০ সালের ‘ঢাকা কমিটি’; ১৮৬৪ সালের ‘ঢাকা পৌরসভা’; ১৮৮০ সালের নবাবদের নিয়ন্ত্রিত ‘পঞ্চায় কমিটি’; ১৯৮২ সালের ‘ঢাকা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন’; ১৯৯০ সালের ‘ঢাকা সিটি করপোরেশন’ করা পর্যন্ত প্রতিটি নগর ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ‘নগর সভায়’ নাগরিকদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু ২০১১ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন বিভক্তের পর আইনে থাকলেও এই সুযোগ থেকে নগরবাসীকে বঞ্চিত করা হয়।

পৌরসভাতেও একই দশা
দেশের প্রায় সবকটি পৌরসভারও একই অবস্থা। পৌর পরিষদের সভাতেও নাগরিকদের অংশগ্রহণের সুযোগ সীমিত। সংস্থাগুলোর আইনে বিষয়টি নাগরিকদের ইচ্ছার ওপর প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়া হয়েছে। তবে, এক্ষেত্রে নাগরিকরা যেমন আবেদন করেন না, তেমনি পৌরসভাগুলোও নাগরিকদের অংশগ্রহণে সহায়তা করে না।
মিউনিসিপ্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ম্যাবের মহাসচিব ও শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করে আমাদের পৌরসভার সকল নগর সমন্বয় কমিটি (টিএলসিসি) গঠন করি। সেই কমিটির অনুমোদনের পর সিদ্ধান্ত নিই। বিশেষ করে আমরা যে বাজেট দেই সেটাও টিএলসিসি কমিটিতে অনুমোদন করে নিই। কিন্তু পৌর পরিষদে কাউকে রাখা হয় না, শুধু মেয়র ও কাউন্সিলররা থাকেন। পৌর পরিষদটা শুধু পৌর কর্তৃপক্ষের।’

যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞদের মতে আইন অনুযায়ী করপোরেশন সভায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উচিত। জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের মেয়র বা সিটি করপোরেশন কর্মকর্তারা তাদের সংস্থা কোন আইন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে সেই বিষয়টাও একবার পড়ে দেখার প্রয়োজনীতা বোধ করেন না। পৌরসভা আইনে প্রতিটি সভায় নাগরিকদের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও করপোরেশইন তা মানছে না। কারণ নাগরিকদের সেই সুযোগ দিলে তাদের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা লুটের তথ্য তারা জেনে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার ট্যাক্সের টাকায় করপোরেশন চলে। সে আমার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। আমার কোন সেবা প্রয়োজন সেটা তো আমার কাছ থেকেই জানতে হবে। কিন্তু তা হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছি প্রতিটি করপোরেশন সভায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে এলাকাভিত্তিক সমস্যাগুলো দ্রুত চিহ্নিত হবে, সমাধানও হবে।’
জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অতীতে কেউ হয়তো চেষ্টাই করেনি বিষয়টি কেউ জানুক। এই সভায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ মানেই সরকারকে উন্মুক্ত করা।’
তিনি আমেরিকার বিখ্যাত এক বিচারকের উক্তি উল্লেখ করে বলেন, ‘সূর্যের আলোই সর্বোত্তম প্রতিষেধক।’ মানে খোলামেলা পরিবেশে দুর্নীতির সুযোগ কম। সভাগুলোকে উন্মুক্ত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মেয়ররা নির্বাচনের আগে ঠিকই ওয়াদা দেন। কিন্তু নির্বাচনের পর ভুলে যান।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের গোপনীয়তার সংস্কৃতি বিরাজমান। কিছু যেন আড়াল করে রাখা যায় সেটাই সবার লক্ষ্য। যেসব দেশে সিভিল সোসাইটি শক্তিশালী সেসব দেশে এগুলো হয় না। এজন্য আমাদের নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে বলে মনে করেন এই নাগরিক প্রতিনিধি।
আরমানিটোলা সমাজকল্যাণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেক সময় কাউন্সিলররা নানা দলীয় কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকে বলে এলাকার অনেক কিছুর খোঁজ রাখেন না। আবার দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও অনেক কিছু দেখেন তারা। তাদের সেই দেখার সঙ্গে যদি নাগরিকদের দৃষ্টি একত্র করা হয় তবে অনেক কিছু বদলে যাবে। অন্তত বোর্ডসভার অধিবেশনের আগে বা পরে এমন একটি সেশন রাখতে হবে যেখানে মেয়রকে সরাসরি প্রশ্ন করা যাবে। এতে কাউন্সিলররাও সাবধান হবেন।’
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘বর্তমানে সিটি করপোরেশন বাসাবাড়ির বর্জ্যের জন্য পরিবার প্রতি ১০০ টাকা করে নির্ধারণ করে দিয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে নাগরিকদের অনেক অভিযোগ আছে। কিন্তু তাদের কোনও অভিযোগ গ্রহণ বা মতামত নেওয়া হয়নি। নাগরিকদের ওপর এই অর্থ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য হোল্ডিং ট্যাক্সের সঙ্গে তিন শতাংশ অর্থ পরিশোধ করা হয়। বোর্ড সভায় যদি অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতো তাহলে সেখানে নগরবাসী আলোচনার সুযোগ পেতো।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই। অবিভক্ত সিটি করপোরেশনেও এই ব্যবস্থা ছিল। প্রতিটি সভায় নাগরিকদের প্রত্যক্ষ মতামত গ্রহণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতো। বোর্ড সভাতে বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি পেশাজীবী মানুষ অংশগ্রহণ করতো। আর এখনকার বোর্ড সভা হয়ে গেছে ‘করপোরেট’ সভা। এটা তো হওয়ার কথা ছিল না।’



মন্ত্রীর আশ্বাস
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিটি সংস্থা আলাদা আইনে চলে। আইনে যে বিষয়টি যেভাবে উল্লেখ আছে সেভাবেই পরিচালনা করতে হবে। বিষয়টি যেহেতু সামনে এসেছে আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।’

 

/এফএ/আপ-এনএস/এমএমজে/
সম্পর্কিত
ওঠানামা করছে মুরগির দাম, বাড়ছে সবজির
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন
সর্বশেষ খবর
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস, সিপিআই-এম ইন্ডিয়া জোট নয়, বিজেপির এজেন্ট: মমতা
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস, সিপিআই-এম ইন্ডিয়া জোট নয়, বিজেপির এজেন্ট: মমতা
‘আমাদের জন্য যারা বেইমান, ভারতের তারা বন্ধু’
‘আমাদের জন্য যারা বেইমান, ভারতের তারা বন্ধু’
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী