প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সাংবাদিক পরিচয়ে প্রেফতার করাটা পুলিশের একটি কৌশল ছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহিদুল হক। তিনি বলেন, পুলিশ সন্দেহবশত বা অভিযোগের ভিত্তিতে যেকোনও সময় ছদ্মবেশে যেকোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারে। সে হিসেবে সাংবাদিক পরিচয়ে শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করাটাও একটি কৌশল ছিল। এ ঘটনায় বাংলাদেশের মিডিয়ায় যা খুশি তাই বলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ক্রিমিনোলজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রবীণ এই সাংবাদিককে গ্রেফতার করা প্রসঙ্গে শহিদুল হক আরও বলেন, পুলিশের কাছে তথ্য আছে বলেই সিনিয়র ওই সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন। কিন্তু যে বিষয়ে তদন্ত চলছে তা নিয়ে এত কথা বলা উচিত না। এটা সচেতন নাগরিকদের দায়িত্বের মধ্যেও পরে।
আইজিপি আরও বলেন, আমাদের দেশে মিডিয়াগুলো যা ইচ্ছা তাই বলছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা কিংবা অন্য কোনও কিছুই করা যাবে না। শুধু সংবাদ মাধ্যমগুলোই নয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও অনেকে অনেক কিছু লিখছে। যার কারণে বিভিন্নভাবে সামাজিক বিপর্যয় ঘটছে। তাই এসব সামাজিক মিডিয়া ও অন্যান্য মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি উপায় থাকা প্রয়োজন।
শহিদুল হক বলেন, দেশে সামাজিক মিডিয়ার ব্যাপকতার কারণে জঙ্গিবাদ বেড়ে যাচ্ছে। যার অর্থ সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমেই জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া বেশকিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জঙ্গি তৈরির ঘটনারও উদাহরণ আছে। এরা মূল সমাজ থেকে বিচ্যুত হওয়ার ফলেই এমন হচ্ছে। সুতরাং আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এটি হলেই সমস্যার সৃষ্টি হবে।
ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অপরাধ নিয়ে গবেষণাধর্মী কাজ করার আহ্বান জানিয়ে আইজিপি বলেন, দেশে এখন শিশু হত্যা হচ্ছে। মা তার সন্তানকে, ভাই তার ভাইকে, সন্তান তার বাবাকে খুন করছে। কিন্তু এ ঘটনাগুলো কেন ঘটছে। কেন তরুণরা জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে, আইএসে যোগ দিচ্ছে। এগুলো জানাটা জরুরি। তাই এখন সময় এসেছে এসব অপরাধমূলক ঘটনার কারণগুলো গবেষণার মাধ্যমে খুঁজে বের করা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব লুবনা মরিয়ম, একুশে টেলিভিশনের সিইও মঞ্চুরুল আহসান বুলবুল, ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন- জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র: প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন- আমার নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতাই আজ হুমকির মুখে: ইমরান
/এসআর/এফএস/ এএইচ/