X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

ইয়াবা পাচারে রোহিঙ্গা শিশু, মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেয় পরিবারই

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৮ মে ২০১৮, ১৫:২০আপডেট : ২৮ মে ২০১৮, ২১:৪১

ইয়াবা পাচারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ব্যবহার হচ্ছে শিশুরাও

ইয়াবা পাচারের জন্য রোহিঙ্গা শিশুদের ব্যবহার করছে মাদক ব্যবসায়ীরা।  টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এসব শিশুকে মাদক ব্যবসায়ীরা হাত করছে তাদের পরিবারের মাধ্যমে। মূলত কম শ্রমে বাড়তি উপার্জনের লোভের কারণে পরিবারের সম্মতিতেই তারা ইয়াবা পাচারে যুক্ত হয়।

রবিবার বিকালে রাজধানীর দক্ষিণ খান এলাকার পূর্ব গাওয়াইর এলাকা থেকে এক শিশুসহ দুই রোহিঙ্গাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে। একই এলাকা থেকে চার মাদক ব্যবসায়ীকেও আটক  করা হয়। এরপরই এসব তথ্য জানা গেছে। আটক দুজন হচ্ছে রোহিঙ্গা মো. সেলিম মোল্লা, তার ভাতিজা মো. আফছার ওরফে বাবুল (১২) এবং মাদক ব্যবসায়ী  মো. মামুন শেখ, মো. শরিফুল, মো. ফাহিম সরকার  ও  মো. রাজিব হোসেন।

সোমবার বেলা ১২টার দিকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘ইয়াবা পাচারের সঙ্গে রোহিঙ্গা শিশুদের জড়ানো হচ্ছে। বেশি টাকার লোভে রোহিঙ্গা পরিবারগুলো মাদক পাচারে তাদের শিশুদের পাঠিয়ে সহযোগিতা করছে।’

পেটের ভেতর পাওয়া ইয়াবা

গ্রেফতার রোহিঙ্গা সেলিম মোল্লা উখিয়ার লেদা ক্যাম্পে পরিবারসহ থাকে। ১২ বছরের আফজার তার আপন বড় ভাইয়ের ছেলে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসে রেজওয়ান নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সেলিমের পরিচয় হয়। রেজওয়ানের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলায়। ইয়াবা ব্যবসা করার জন্য সে কক্সবাজারেই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। ঢাকায় মামুন তার প্রধান সহযোগী।  

রেজওয়ান পাঁচ হাজার ইয়াবার চালান ঢাকায় পাঠানোর জন্য রোহিঙ্গা সেলিম মোল্লার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় চুক্তি করে। এরপর সেলিম তার ভাতিজা আফছারকে নিয়ে ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে আসার পরিকল্পনা করে।

৫০ পিস করে ইয়াবা ক্যাপসুল আকারে তৈরি করে স্কচটেপ ও পলিথিনে মুড়িয়ে। এরপর ৩০টি ক্যাপসুল পানি দিয়ে আফছারকে গিলিয়ে দেয়। ৭০টি ইয়াবা ক্যাপসুল সেলিম নিজে গিলে খায়। মোট ৫ হাজার ইয়াবা এভাবে তারা গিলে পেটে করে নিয়ে আসে ঢাকায়। আসার পথে তারা কোনও কিছু খায় না। এমনকি ওষুধ খেয়ে নেয় যাতে পায়খানা না হয়। ঢাকায় এসে তারা ফের ওষুধ খায় মলত্যাগ করার জন্য। এভাবে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা পাচার করে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

এভাবে ক্যাপসুল (পোটলা) বানিয়ে ইয়াবার প্যাকেট গিলে ঢাকায় এসে টয়লেট করে তা আবার বের করে দেয় রোহিঙ্গারা

রবিবার বিকালে আফছার ও তার চাচা সেলিম উখিয়া থেকে বাসে করে ঢাকায় আসে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের আটক করে ডিবি। এরপর ইয়াবা চালান গ্রহণের জন্য অপেক্ষমাণ মামুন ও তার সহযোগীদের আটক করা হয়।

অতিরিক্ত কমিশনার জানিয়েছেন, এর আগেও আফছার ও তার চাচা সেলিম একাধিকবার ঢাকায় একইভাবে ইয়াবা নিয়ে আসে। তারা কখনও বাসে, কখনও ট্রেনে আসে। 

আরও রোহিঙ্গা শিশু আছে, যাদের এভাবে ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িয়েছে মাদক ব্যবসায়ীরা। শিশু আফছার এই ইয়াবা চালান পৌঁছে দিতে পারলে দশ হাজার টাকা পেতো। তার চাচা সেলিম পেতো ১৫ হাজার টাকা। এত কম সময়ে বেশি টাকা আয়ের লোভে এই পথে রোহিঙ্গা শিশুদের তাদের পরিবার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে দিচ্ছে বলেও জানান অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস।

চলতি অভিযানে রাজধানীর শীর্ষ ১১ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি। তারা কারাগারে রয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন: পেটভর্তি ইয়াবাসহ রাজধানীতে ২ রোহিঙ্গা আটক

/এআরআর/টিএন/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বিএনপি নেতাদের কথা মাঠকর্মীরা শোনে না: ওবায়দুল কাদের
বিএনপি নেতাদের কথা মাঠকর্মীরা শোনে না: ওবায়দুল কাদের
কয়েকটি দেশেই আটকে আছে সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার
কয়েকটি দেশেই আটকে আছে সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার
আফসোসে পুড়ছেন হৃদয়
আফসোসে পুড়ছেন হৃদয়
কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস, রাতভর জ্বলবে সুন্দরবন
কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস, রাতভর জ্বলবে সুন্দরবন
সর্বাধিক পঠিত
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ