জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যুক্তিতর্ক চলবে, নাকি মামলার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে রায়ের দিন ধার্য হবে, সে বিষয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর আদেশের দিন ধার্য করেছেন আদালত। একইসঙ্গে খালেদা জিয়া ও অন্য আসামি মনিরুল ইসলাম খান এই মামলায় জামিনে থাকবেন কিনা, সে বিষয়েও আদেশ দেবেন আদালত। বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত পঞ্চম বিশেষ আদালতে এ আদেশ দেন বিচারক আখতারুজ্জামান।
এসময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, ‘আপনি (বিচারক) আমাদের একটি যুক্তিসঙ্গত সময় দেন। আমরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে আদালতকে সহযোগিতা করবো। মামলার শেষপর্যায় এসে তাড়াহুড়ো করা ঠিক হবে না। ’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, ‘আজ (বুধবার) যুক্তিতর্কের জন্য দিন ধার্য আছে। কিন্তু তারা গতানুগতিক আবেদন ও বক্তব্য দিচ্ছেন।’
আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘কে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করলো আর কে করলো না, এতে আদালতের কিছু যায় আসে না। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে আদালতের বেরিয়ে আসা উচিত।’
তিনি আদালতে রায়ের দিন ধার্য করার জন্য লিখিত আবেদন পেশ করেন। একই সঙ্গে জামিনে থাকা আসামিদের জামিন বাতিলের আবেদন জানান। তিনি বলেন, ‘আসামিপক্ষ একঘেয়েমি আচরণ করছেন। তাদের সময় দেওয়ার আর কোনও সুযোগ নেই। আদালত তাদেরকে যথেষ্ট সুযোগ দিয়েছেন। ’
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য আদালত সরাসরি আদেশ দিতে পারেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ বিষয়ে কোনও সহযোগিতা করছেন না।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম ও আখতারুজ্জামান আদালতে এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এ মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তখনকার একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। মামলার আগে থেকেই হারিছ চৌধুরী পলাতক রয়েছেন।
ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত বসানোর আগে মামলাটির কার্যক্রম রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে চলে আসছিল। এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি অপর আরেকটি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। রায়ের পর থেকে খালেদা জিয়া নাজিম উদ্দিন রোডের পরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।